দুই শর্তে চলমান কর্মবিরতি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), খুলনা। গতকাল শনিবার খুলনা সিটির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএমএ খুলনার সভাপতি শেখ বাহারুল আলম। শর্ত দুটি হলো—অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দায়ের মামলা প্রত্যাহার।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাংগঠিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, চিকিৎসকদের সঙ্গে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এটি মোটেই কাম্য নয়। বিএমএ নেতাদের দাবির সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ একমত। আমরা তাদের অনুরোধ করেছি কর্মবিরতি স্থগিত করার জন্য। আশা করি, প্রশাসন অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে আইনি পদক্ষেপ নেবে।
খুলনা বিএমএর সভাপতি ডা. বাহারুল আলম বলেন, এক সপ্তাহর জন্য কর্মবিরতি স্থগিত করেছি। অন্যতম দুটি দাবি মেনে নেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে বাধ্য হব ফের কর্মবিরতি পালন করতে।
এদিকে চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার খবরে স্বস্তি ফিরেছে রোগী ও স্বজনদের মনে। কর্মব্যস্ততা বেড়েছে হাসপাতাল-ক্লিনিক পাড়ায়। এর আগে এদিন সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক ঘুরে দেখা যায়, চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে চরম মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে মুমূর্ষু রোগীরা এসে চিকিৎসা পাচ্ছেন না সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। এ পরিস্থিতির মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে পড়েন প্রসূতি ও শিশু বিভাগের রোগীরা। সেবা না পেয়ে ফিরেও যেতে হয়েছে অনেককে। কেউ কেউ হাসপাতালের বারান্দায় অপেক্ষায় ছিলেন কখন চিকিৎসক আসবেন।
চিকিৎসকদের দাবি, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা মহানগরের শেখপাড়ায় অবস্থিত হক নার্সিং হোমে অস্ত্রোপচার চলা অবস্থায় চিকিৎসক শেখ নিশাত আবদুল্লাহকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন রোগীর স্বজনরা। এ সময় অপারেশন থিয়েটারও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে খুলনা বিএমএর পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে ওই ঘটনার বিচার দাবি করে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা।