প্রতিষ্ঠার ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নিজস্ব ওয়েবসাইটে নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ তথ্য। নিয়মিত তথ্য হালনাগাদও করা হয় না ওয়েবসাইটে। রাষ্ট্র ডিজিটালাইজেশনের পথে এগিয়ে গেলেও শিক্ষা পদ্ধতির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি স্বাধীনতা পরবর্তী প্রতিষ্ঠিত প্রথম এ বিশবিদ্যালয়টিতে। ফলে নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। এতে বিদেশে থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও কমছে বলে দাবি সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদ, বিভাগীয় সভাপতি ও অনুষদের ডিনসহ বিভিন্ন দপ্তরের তথ্য থাকার কথা ওয়েবসাইটে। তবে অনেক ক্ষেত্রে তথ্য থাকলেও সময়মতো হালনাগাদ করে না কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া কিছু দপ্তরের কোনো তথ্যই পাওয়া যায় না ওয়েবসাইটে। গত জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, আইন প্রশাসক, আইকিউএসির পরিচালক নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে দেড় মাস পার হলেও ওয়েবসাইটে হালনাগাদ করা হয়নি এসব তথ্য। এ ছাড়া আইন বিভাগ, ফাইন আর্টস বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতি এবং সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন, বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন নিয়োগ হলেও এ বিষয়ে নেই আপডেট তথ্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট দপ্তর ছাত্র উপদেষ্টা ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসেরও কোনো তথ্য নেই ওয়েবসাইটে। ফলে শিক্ষার্থীদের ত্বরিত প্রয়োজনে এ দপ্তরে যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকদের তালিকা থাকলেও প্রয়োজনীয় অন্য কোনো তথ্য নেই সেখানে। নেই ৮টি আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ ও হাউস টিউটরের তথ্য। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট বা তথ্য ভান্ডার থাকলেও ইবির কোনো বিভাগেরই স্বতন্ত্র ওয়েবসাইট নেই। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন ছাত্র সাকিব জানান, তিনি যে বিভাগে ভর্তি হয়েছেন এ বিভাগ সম্পর্কে কোনো তথ্য তিনি ওয়েবসাইটে পাননি। সে বিভাগে পড়লে তিনি কী কী জানবেন এবং চাকরির বাজারে এর চাহিদা কতটুকু সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই সেখানে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাসুম আলভী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কোনো গবেষণাপত্র নেই যা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দেশে ও বিদেশে বাইরে পরিচিত করে তুলবে। এ ছাড়া ওয়েবসাইটে ই-লাইব্রেরি নামে একটি ট্যাব রয়েছে কিন্তু এর কোনো কাজই নেই। সেখানে নেই কোনো বই।
এক বিদেশি শিক্ষার্থী জানান, গ্লোবালাইজেশনের যুগে একটি দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের যতটুকু আপডেট হওয়া উচিত, ইবি ততটুকু নয়। পাশাপাশি একজন বিদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে ওয়েবসাইটে সার্বিক তথ্যও তারা পান না।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, ‘বর্তমান গ্লোবালাইজেশনের যুগে একটি সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের ওয়েবসাইটে যাবতীয় তথ্য থাকাটা জরুরি। পাশাপাশি একাডেমিক বিষয়গুলোও সর্বোচ্চ মর্যাদা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। আইন বিভাগের যাবতীয় তথ্য পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল বিভাগ সম্পর্কিত তথ্যগুলো হালনাগাদ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান-উল আম্বিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যেসব তথ্য ঘাটতি রয়েছে আইসিটি সেলের পক্ষ থেকে তা পূরণের চেষ্টা করছি। তবে নিয়মিত তথ্য ও বিভিন্ন অফিস সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরিবর্তন ঘটলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা দপ্তর থেকে তথ্য না পাঠানোর কারণে দ্রুত হালনাগাদ হচ্ছে না।’