বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পারমিট (সিপি) জটিলতার কারণে মোংলা কাস্টম হাউসে অকেজো হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সময়ে আমদানি করা ১১৬টি গাড়ি। ছাড়পত্র না থাকার কারণে সেগুলো বিক্রিও করতে পারছে না কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আমদানি করা গাড়িগুলো পাঁচ বছরের বেশি পুরোনো হওয়ায় বন্দরে পড়ে থাকতে থাকতে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রাংশ। এতে সরকারও রাজস্ব পাচ্ছে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্র আরও জানায়, আগের আমদানি করা গাড়ির সিপি জটিলতায় বন্দরে গাড়ির জট বেড়েছে। আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী, সাধারণত ৫ বছরের পুরোনো গাড়ি আমদানির বিধান নেই। যেসব আমদানিকারক এ ধরনের গাড়ি এনেছেন সেগুলোই বন্দরে পড়ে আছে। এ নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় চিঠি দিয়েও খালাসের অনুমতি মিলছে না। সর্বশেষ এই ১১৬ গাড়ির সিপি চেয়ে এনবিআরের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের আবেদন করে মোংলা কাস্টম কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে বলা হয়, আমদানি নিয়ন্ত্রিত এই গাড়িগুলো দীর্ঘসময় ধরে বন্দরে পড়ে থাকায় পণ্যজট তৈরি হয়েছে। আবার অনুমতি না মেলায় নিলামেও বিক্রি করা যাচ্ছে না।
এর আগে সিপি-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকও হয়। সেখানে পাঁচ বছরের পুরোনো আমদানি গাড়ির তালিকা করে পারমিট পেতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে তালিকা তৈরি করে পাঠিয়েছে মোংলা কাস্টম হাউস।
এ বিষয়ে কমিশনার আবু হোসেন খালেদ কালবেলাকে বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমদানি হওয়া ৫ বছরের পুরোনো শতাধিক গাড়ি বন্দরে পড়ে আছে। মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পারমিট না থাকায় নিলামে বিক্রিও করা যাচ্ছে না। এতে পণ্যজট তৈরি হয়েছে।
কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নিলামের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতির অপেক্ষায় থাকা গাড়িগুলো অনেকটা অকেজো হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন খোলা স্থানে পড়ে থাকতে থাকতে যন্ত্রাংশও নষ্ট হচ্ছে। দিন যত যাবে এসব গাড়ির বাজারমূল্যও তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। কাস্টম হাউস চট্রগ্রামেও এই জটিলতার কারণে নিয়ন্ত্রিত আমদানি করা বেশ কিছু গাড়ি সর্বশেষ স্ক্র্যাপ হিসেবে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করতে হয়েছে। কিন্তু এবার গাড়িগুলো পুরোপুরি অকেজো হওয়ার আগেই বিক্রি করতে চায় মোংলা কাস্টম হাউস। যেগুলোর বর্তমানে আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকারও বেশি। সঙ্গে রাজস্ব যোগ করলে তা দাঁড়ায় ৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার গাড়ি নিলামে বিক্রি করলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আসবে বলেও জানান কাস্টম হাউস মোংলার একাধিক কর্মকর্তা।