লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল দণ্ডিত হয়ে বর্তমানে কুয়েতে সাজা ভোগ করছেন। তার বিরুদ্ধে দেশে তিনটি মামলা রয়েছে। মানব পাচার মামলার চার্জশিট হলেও অন্য দুটি মামলা তদন্তাধীন। তিন বছর ধরে অর্থ পাচার মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ মামলার তথ্য চেয়ে কুয়েতে এমএলএআর (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট) পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত কুয়েত থেকে এ তথ্য পায়নি মামলার তদন্ত সংস্থা। তথ্য এলেই আদালতে চার্জশিট জমা দিতে চায় সিআইডি। ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (অর্গানাইজ ক্রাইম) আলামিন বাদী হয়ে কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা, মেয়েসহ আটজনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলাটি করেন। বর্তমানে সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. মেহেদী মাকসুদ এ মামলার তদন্ত করছেন। গত ১০ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। ওইদিন প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি নতুন দিন ধার্য রয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম, ভাই কাজী বদরুল আলম লিটন, পাপুলের ব্যক্তিগত কর্মচারী মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান মনির, জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা, জেসমিন প্রধানের মালিকানাধীন কোম্পানি জেডব্লিউ লীলাবালী ও কাজী বদরুল আলম লিটন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি আসামি গোলাম মোস্তফা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য। তারা বিভিন্ন সময় ৩৮ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৭ টাকা অবৈধভাবে আয় করেছেন। যার সঙ্গে পাপুল ও তার মেয়ের প্রতিষ্ঠান জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
মানব পাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ৬ জুন রাতে পাপুলকে কুয়েত সিটির বাসা থেকে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে। বিচার শেষে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি দুই মামলায় কুয়েতের ফৌজদারি আদালত তার চার বছরের কারাদণ্ড ও ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার (৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা) জরিমানা করেন। পরবর্তী সময়ে কুয়েতের আপিল আদালত তার কারাদণ্ড তিন বছর বাড়িয়ে সাত বছর করেন। বর্তমানে পাপুল কুয়েতের কারাগারে সাজা ভোগ করছেন।
আদালতের পল্টন থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা এসআই শাহ আলম বলেন, ‘পাপুলসহ আটজনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে করা মামলাটি সিআইডি করেছে। এ মামলায় পাপুলের স্ত্রী, মেয়ে, শ্যালিকাসহ চারজন জামিনে রয়েছেন। তারা ধার্য তারিখে উপস্থিত হয়ে হাজিরা দেন।’ পাপুলের আইনজীবী প্রাণ নাথ কালবেলাকে বলেন, ‘অর্থ পাচারের অভিযোগে উল্টাপাল্টা মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা টাকা পাচার করেননি; বরং টাকা বিদেশ থেকে এনেছেন। তাহলে কীভাবে টাকা পাচার হলো। এ মামলার কোনো ভিত্তি নেই।’