রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার দুই বন্ধু শাওন ও শুভ হোসেন। ঘটনার চার থেকে পাঁচ দিন আগে শুভর সঙ্গে রজবের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে রজবকে থাপ্পড় মারে শুভ হোসেন। পরে শুভ রজবকে জানায় সে তাকে মারতে চায়নি, শাওনের কথা মতো তাকে মেরেছে। তখন রজবের রাগ দেখে শাওনকে হত্যার পরামর্শ দেয় শুভ। শাওনকে হত্যার জন্য রজবকে ১৫ হাজার টাকাও দেয় শুভ। আর হত্যা করতে পারলে আরও ৩৫ হাজার টাকা দিতে চায়। এভাবে শাওনকে হত্যা করতে অর্ধলাখ টাকায় চুক্তি করে শুভ। যাত্রাবাড়ী থানার এক হত্যা মামলার চার্জশিটে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানার মীরহাজিরবাগে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন শাওন। পরদিন নিহতের ভাই শাহাদাত হোসেন যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার এস আই মো. ইয়াকুব হোসেন সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আসামি রজব নিজ হাতে সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে ভিকটিম শাওনকে কুপিয়ে হত্যা করায় তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২ ধারা ও অন্য ছয় আসামি পরোক্ষভাবে হত্যায় সহযোগিতা করায় তাদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩৪ ধারার অপরাধ আনা হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলো মো. রজব বেপারি, নাবিল সরকার, মো. মিজানুর রহমান, জুয়েল রানা, মো. শুভ হোসেন, মো. ফজলে রাব্বি ও পারভেজ হোসেন। এদের মধ্যে রাব্বি, পারভেজ ও জুয়েল জামিনে। মিজানুর ও নাবিল পলাতক; রজব ও শুভ কারাগারে রয়েছেন।
চার্জশিটে বলা হয়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে রজব, শুভ, রাব্বি ও পারভেজ মীরহাজিরবাগ চৌরাস্তায় একত্রিত হয়ে বুদ্ধি-পরামর্শ করে। এরপর ভিকটিম শাওনের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। আসামি রজব ও তার সহযোগী নাবিলকে সঙ্গে নিয়ে মীরহাজিরবাগের আবু হাজী স্কুল সংলগ্ন বউ বাজারস্থ ওয়াকফ স্টেট প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ গেটে যায়। সেখানে শাওনকে দেখতে পায় রজব। তখন শাওনের সঙ্গে পূর্বের ঝগড়ার বিষয়ের কথা তুলে ধরে। একপর্যায়ে রজব তার সঙ্গে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু বের করে শাওনের গলার নিচের অংশে, পেটের ডান পাশে, ঘাড়ের নিচে ও হাতে কোপ দেয়। এতে শাওনের মৃত্যু হলে আসামিরা পালিয়ে যায়।
এদিকে চার্জশিটে সব আসামিকে অন্তর্ভুক্ত না করায় মামলার বাদী নারাজির জন্য আবেদন করেন। গত ২৬ নভেম্বর শুনানির দিন সময় পেছানোর আবেদন করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী। আবেদনের পর আদালত আগামী ১১ ডিসেম্বর এ মামলার নারাজির শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
নিহত শাওনের ভাই শাহাদাত কালবেলাকে বলেন, ‘আমার ভাই হত্যা মামলায় সাতজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিলেও আমরা সন্তুষ্ট নই। যারা আমার ভাইকে ডেকে নিয়েছিল ও চাকু সরবরাহ করছিল তাদের চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এজন্য আদালতে নারাজির আবেদন করা হয়েছে।’