মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১
হুমায়ুন কবির, সাভার (ঢাকা)
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৪ এএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই

সাক্ষাৎকার: গফুর মিয়া
দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় পুলিশ ও তৎকালীন সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা। জীবনের মায়া তুচ্ছ করে সেই আন্দোলনে শুরু থেকেই ছাত্র-জনতার সঙ্গে মাঠে ছিলেন আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. আ. গফুর মিয়া। দেশের নতুন প্রেক্ষাপটে নিজ দলের রাজনীতির পাশাপাশি শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক এই সহসভাপতি। কালবেলার সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি—

কালবেলা: ৫ আগস্ট সাভার-আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার ওপর যে নির্মমতা আপনি দেখেছেন, সে বিষয়ে কিছু বলুন।

গফুর মিয়া: আমার জানা মতে, একক উপজেলা হিসেবে সাভারে সবচেয়ে বেশি ছাত্র-জনতা মারা গেছে ৫ আগস্ট। আমাদের কাছে ৬৫-৭০ জনের তালিকা থাকলেও সংখ্যাটি নিঃসন্দেহে আরও বেশি। তাদের নাম-পরিচয় খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছি। সরকারিভাবেও এটার তালিকা প্রণয়নের চেষ্টা হয়েছে।

কালবেলা: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আপনিও সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলনের পর শহীদদের পরিবারের সাহায্যার্থে নানা উদ্যোগও নিয়েছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাই।

গফুর মিয়া: আন্দোলনের যারা শহীদ হয়েছেন তাদের অসিলায় আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি। তাই তাদের যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে। আমরা দলীয়ভাবে তাদের পাশের দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে অনুযায়ী কাজও করছি। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবেও আমি শহীদ পরিবারের অনেকের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছি। এ ছাড়া তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে পাশে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

কালবেলা: অভ্যুত্থানের পর শিল্প এলাকা হিসেবে আশুলিয়ার পরিবেশ-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতেও নানা উদ্যোগ নিয়েছেন আপনি।

গফুর মিয়া: আশুলিয়া একটি শিল্পাঞ্চল। এই শিল্পাঞ্চলে বিশেষ করে গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমার পক্ষ থেকে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে দিনরাত পাহারা দিয়েছি। দলীয়ভাবেও এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর ডিশ কিংবা ঝুট ব্যবসা দখলের মতো কোনো ঘটনা এখানে ঘটেছে বলে আমি মনে করি না। তবে আওয়ামী লীগের লোকজন পালিয়ে যাওয়ার পর বিএনপির অনেক নেতাকর্মী নতুন করে এসব ব্যবসায় সম্পৃক্ত হয়েছেন।

কালবেলা: সাভারে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয়ভাবেও নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

গফুর মিয়া: সাভারে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমি এবং আমার দল সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং কোথাও কোনো সংখ্যালঘুর ওপর যাতে জুলুম-নির্যাতন না হতে পারে, সেজন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক। সুতরাং আমরা মহান সেই নেতার দেখানো পথেই চলছি। যেখানেই অন্যায় সেখানেই প্রতিবাদ। আমার এলাকাসহ গোটা সাভার-আশুলিয়ায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব সময় সচেষ্ট রয়েছি।

কালবেলা : আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির একজন শীর্ষনেতা হিসেবে কী পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন?

গফুর মিয়া: বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চাইছেন, ন্যূনতম সংস্কার শেষে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজন করে জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকার দায়িত্ব নিয়ে দেশ পরিচালনা করুক। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের একজন সৈনিক হিসেবে আমিও বিশ্বাস করি গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। তাই হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরাও জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

কালবেলা: আশুলিয়া থানা বিএনপির আগামী কমিটিতে সভাপতি পদপ্রত্যাশী হিসেবে আপনি তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনা রয়েছে। এ পদে নিজেকে কেন যোগ্য মনে করছেন?

গফুর মিয়া: দীর্ঘ ১৬ বছর নিজের ঘরে স্ত্রী- সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে নির্বিঘ্নে এক রাতও ঘুমাতে পারিনি। আমার নামে প্রায় অর্ধশত মামলা রয়েছে। আমার অপরাধ—আমি বিএনপি করি। আমি জিয়াউর রহমানের আদর্শে গড়ে ওঠা একজন মানুষ। গত ১৬টি বছর আশুলিয়া থানা বিএনপিকে সংগঠিত রাখতে নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে পাশে থেকেছি। বিনিময়ে আমিও নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় অভিভূত হয়েছি। এখনো নিজের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে আশুলিয়া থানা বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে আমার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চভাবে ত্যাগ স্বীকার করছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের মহানায়ক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমি আমার দল বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়ায় প্রতিবাদের দুর্গ গড়ে তুলেছিলাম। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। আশুলিয়া থানা বিএনপিকে সংগঠিত রাখতে জীবন বাজি রেখেছি অনেকবার। দলের প্রতি আমার যাবতীয় ত্যাগের প্রতিদান হিসেবে থানা বিএনপির সভাপতির পদটি আমি পেতে পারি বলেই বিশ্বাস করি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, বিএনপি নেতা খুন

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই গুমের বিচার হবে : উপদেষ্টা মাহফুজ

শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

শরীয়তপুরে দুগ্রুপের পাল্টাপাল্টি হামলায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, আহত ৭

নরসিংদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত, আহত ১০

৫ আগস্টের পরে সত্যিকারের ঈদ আনন্দ শুরু হয়েছে : জাহিদুল ইসলাম

অপহরণ চেষ্টার মামলায় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার

বাজারে হামলার শঙ্কা, ১৪৪ ধারা জারি

ঈদের দ্বিতীয় দিনে যমুনা সেতুতে টোল আদায় ৭৯ লাখ

ঈদের মেলায় ফুচকা খেয়ে হাসপাতালে ৫০

১০

ইরানে হামলার হুমকি, ট্রাম্পকে সতর্ক করল রাশিয়া

১১

কুমিল্লায় গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ২

১২

মাইকে ঘোষণা দিয়ে টর্চের আলোতে সংঘর্ষে নামে গ্রামবাসী

১৩

বিসিসিআইয়ের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফিরছেন শ্রেয়াস আইয়ার

১৪

মার্কিন হামলা হলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ‘বাধ্য হবে’ ইরান : খামেনির উপদেষ্টা

১৫

টেশিসকে হাইটেক পার্ক করে ‘চীনের পরিকল্পনা’ আনার চিন্তাভাবনা

১৬

ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র!

১৭

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে দেখতে বাড়ি যাওয়ার পথে পুলিশ সদস্য নিহত

১৮

আগামী ১৫ বছর রিয়ালে থাকতে চান বেলিংহাম

১৯

পানিতে ভেসে গেল উপকূলের ঈদ আনন্দ, ১৫ হাজার মানুষ বন্দি

২০
X