মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১
রাজকুমার নন্দী
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৩ এএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৭ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা

বিলুপ্তির পাঁচ মাসেও হয়নি মৎস্যজীবী দলের কমিটি

বিলুপ্তির পাঁচ মাসেও হয়নি মৎস্যজীবী দলের কমিটি

বিলুপ্তির পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো ঘোষিত হয়নি বিএনপির অন্যতম অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি। আর কেন্দ্রীয় কমিটি না থাকায় সারা দেশে সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রমও এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সংগঠনের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘনিয়ে এলেও নেতাকর্মীদের মধ্যে নেই কোনো প্রাণচাঞ্চল্য। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো প্রোগ্রামও আয়োজন করা হচ্ছে না। সব মিলিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে এক ধরনের হতাশা।

গত ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিএনপিসহ দলের প্রতিটি অঙ্গ সহযোগী সংগঠন সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও কমিটি না থাকায় মৎস্যজীবী দলের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রকার অলস সময় কাটাচ্ছেন। তাদের প্রত্যাশা, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আগেই মৎস্যজীবী দলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। নতুন কমিটির নেতৃত্বে দীর্ঘ ১৬ বছর পর স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের আশায় রয়েছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আগে মৎস্যজীবী দলের নতুন কমিটি ঘোষিত হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কালবেলাকে বলেন, কমিটি গঠন, পুনর্গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। সাংগঠনিক এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। সংগঠনের নতুন কমিটি গঠনের কাজ চলমান রয়েছে, তাড়াতাড়িই কমিটি হবে।

বাংলাদেশের জেলে সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালের ২৭ নভেম্বর কক্সবাজারে ঐতিহাসিক জেলে সমাবেশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ‘জাতীয়তাবাদী জেলে দল’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী সময়ে মৎস্য চাষ, আহরণকারী, প্রক্রিয়াজাতকারী, রপ্তানিকারক ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ১৯৯৩ সালে জেলে দলের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল’ করা হয়। নাম পরিবর্তনের পর ২০০০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি মৎস্যজীবী দলের প্রথম কমিটি অনুমোদিত হয়। তারপর থেকে লিপইয়ার বছরে ২৯ ফেব্রুয়ারি এবং অন্য বছরগুলোতে ২৮ ফেব্রুয়ারি নিয়মিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে আসছে মৎস্যজীবী দল।

২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ওইদিন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, পরবর্তী সময়ে মৎস্যজীবী দলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হবে। এর আগে ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি রফিকুল ইসলাম মাহতাবকে আহ্বায়ক ও আব্দুর রহিমকে

সদস্য সচিব করে ঘোষিত ১৫৪ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি পাঁচ বছরের অধিককাল দায়িত্ব পালন করে। সংগঠনটির সভাপতি কিংবা আহ্বায়ক হিসেবে দীর্ঘদিনের দায়িত্ব পালন করা রফিকুল ইসলাম মাহতাব ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট মারা যান। তবে শূন্য পদে কাউকে পদায়ন না করে পরের মাসে মৎস্যজীবী দলের ওই কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।

মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির পরপরই নতুন কমিটি গঠনকে ঘিরে তৎপরতা শুরু হয়। শীর্ষ পদ পেতে নানামুখী লবিং-তদবির শুরু করেন পদপ্রত্যাশীরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংগঠনের সভাপতি হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম। মৎস্যজীবী দলের সারা দেশের নেতাকর্মীরাও শীর্ষ পদে তাকে চান। অবশ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাদিম চৌধুরীও সভাপতি হতে চান। আর নতুন কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছে বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফারুক পাটওয়ারী, অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া, জাকির হোসেন খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য একরামুল হক বিপ্লব, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আহসান উদ্দিন খান শিপন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক (এফ এইচ) হল ছাত্র সংসদের সাবেক নির্বাচিত এজিএস মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, জিয়া মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজ উল্লাহ ইকবাল এবং জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেনের নাম।

তবে পাঁচ মাসেও মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় কমিটি না হওয়ায় পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা ভর করেছে। দ্রুত কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে বিলুপ্ত কমিটির কয়েকজন নেতা বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ এবং বিভিন্ন জেলাসহ ইউনিট কমিটির ব্যানারে কিছু সাংগঠনিক কার্যক্রম ও সভা-সমাবেশ হলেও সংগঠন বিকাশের ক্ষেত্রে সেটা পর্যাপ্ত নয়। কেন্দ্রীয় নেতারা কিছু কিছু প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করলেও কমিটি না থাকায় সংগঠনকে বিকশিত করার মতো কার্যক্রম তারা হাতে নিতে পারছেন না। এ ছাড়া কমিটি না থাকায় দীর্ঘদিনের রাজপথের সহকর্মীরা হতাশা থেকে অন্য অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনে চলে যাওয়ার কথাও ভাবছেন। এমনটা হলে মৎস্যজীবী দল ত্যাগী ও পরীক্ষিত সহকর্মী হারাবে।

তারা আরও বলেন, মৎস্যজীবী দলে বেশ কয়েকজন কর্মঠ, কর্মিবান্ধব ও দক্ষ সংগঠক রয়েছে, যারা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবির আশায় রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সাধ্যমতো সক্রিয় রয়েছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উত্তরা থেকে তুরিন আফরোজ গ্রেপ্তার

থানা নিরাপত্তা দেওয়া স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বিল্লাল এখন রিমান্ডে

শোরুমে হামলা নিয়ে বাটার বিবৃতি

ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে : প্রিন্স

সড়ক নির্মাণে বিএসএফের বাধা

বানরের রুটি ভাগের খেলায় মেতেছেন আরবের শেখরা

শাহ আমানত বিমানবন্দরে কোটি টাকার সোনা জব্দ

বিতর্কিতদের নিয়ে খুলনায় বিএনপির কমিটি, তৃণমূলে ক্ষোভ

সিলেটসহ অন্যান্য স্থানে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ

৮ জেলায় তাণ্ডব

১০

বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ দিলেন ইউএনও

১১

বন্ধুকে নিয়ে প্রেমিকাকে ধর্ষণচেষ্টা, অতঃপর...

১২

কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বাড়িতে হামলা, ৬ দিনেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ

১৩

টঙ্গীতে ছুরিকাঘাতে পোশাক শ্রমিক নিহত, গ্রেপ্তার ১

১৪

চট্টগ্রামে জোড়া খুন, ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার আরও একজন

১৫

‘স্বাধীনতা কনসার্ট’ স্থগিত

১৬

সিইপিজেডে সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

১৭

শান্ত-মিরাজদের ফিল্ডিং কোচ প্যামেন্ট

১৮

গাজার জন্য প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়ে মাশরাফীর স্ট্যাটাস

১৯

সিলেটে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আটক ৩

২০
X