বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) মাত্র ৩৬ শ্রেণিকক্ষে চলছে ২৫ বিভাগের পাঠদান কার্যক্রম। অথচ এতগুলো বিভাগের জন্য সেখানে কমপক্ষে ৭৫টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। একটি মাত্র গুচ্ছ ভবনে চলছে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম।
জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ের (প্রথম প্রকল্প) কাজ ছাড়া নতুন কোনো ভবন বা প্রকল্প অনুমোদন পায়নি। শিক্ষকদের বসার কক্ষ, ল্যাব কক্ষ ও প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরের কক্ষের সংকটও রয়েছে। তবে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর বলছে, দ্বিতীয় প্রকল্প অনুমোদন পেলে সংকট সমাধান হবে। জরুরি ভিত্তিতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণও প্রয়োজন। এদিকে কক্ষ ও শিক্ষক সংকটের কারণে বেশিরভাগ বিভাগে দীর্ঘ সেশনজট রয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. সাইদুজ্জামান (সম্পত্তি শাখা) বলেন, আমাদের শ্রেণিকক্ষ রয়েছে ৩৬টি। দুটি একাডেমিক ভবনে অর্থাৎ একাডেমিক ভবন-১-এ ১৩টি ও একাডেমিক ভবন-২-তে রয়েছে ১৫টি। বাকি ৮ কক্ষ প্রশাসনিক ভবনে। মোট ল্যাব কক্ষ ৩২টি। বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকদের মিলিয়ে মোট ৬৮টি কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি কক্ষে তিন থেকে চারজন শিক্ষক খানিকটা গাদাগাদি করেই বসেন।
শিক্ষক সংকটও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। মাত্র ১৬৭ শিক্ষক দিয়ে চলে ১৫০ ব্যাচের কার্যক্রম। একাডেমিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কক্ষ সংকটের পাশাপাশি রয়েছে জনবলের অভাব। তাদের কক্ষ ২৫টি। গত ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হালনাগাদ তথ্যে এ চিত্র উঠে আসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প উন্নয়ন দপ্তরের সদস্য ও উপ-প্রধান প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীন কালবেলাকে বলেন, শ্রেণিকক্ষ ও প্রশাসনিক ভবনসহ নানা সংকট রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। এজন্য প্রকল্প অনুমোদনের প্রয়োজন। আগে ফিজিবিলিটি টেস্ট করতে হয়। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের চিঠি মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। অনুমোদনের পর যাচাই করে একটি প্রতিবেদন সরকারের কাছে দেবে তারা। সে অনুযায়ী সরকার বাজেট অনুমোদন দেয়। বাজেট অনুমোদন পেলে এসব সংকট সমাধান হবে।
পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে বিশ্ববিদ্যালয়টির দ্বিতীয় পর্যায়ের (প্রকল্প) কাজে স্থাপনা রয়েছে ৩৩টি। এর মধ্যে ভবন রয়েছে ২৬টি। এসব স্থাপনা নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনুমোদন পেলে আনুমানিক দুই হাজার কোটি টাকা লাগতে পারে। তবে কখন বা কয়টা ভবন অনুমোদন দেওয়া হবে সেটি মন্ত্রণালয় ও সরকারের ব্যাপার, যা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর জানা যাবে। সে অনুযায়ী সরকার বাজেট দেবে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে ৩ কোটি ৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা বরাদ্দে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ও সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের চিঠি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) হুমায়ুন কবীর বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প অনুমোদনে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হয়, যেটি মন্ত্রণালয়ে আছে। অচিরেই অর্থ ও সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প অনুমোদন পাবে।
উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শারমিন বলেন, গত ৬ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত কোনো কাজ হয়নি। আমি এসেছি কয়েকদিন হয়েছে। এসে দেখেছি নানা সংকট রয়েছে। সংকট মোকাবিলায় প্রকল্প অনুমোদন নেওয়ার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে কথাও বলেছি।