কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে গুলিতে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে জাতীয় বীরের মর্যাদা চান তার পরিবার ও স্বজনরা। একই সঙ্গে তাকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তারা। গতকাল মঙ্গলবার পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়ায় সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি করেন সাঈদের বাবা-মা ও ভাই। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবু সাঈদের কবরে কয়েক সেনাসদস্যের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লেও সেটি সত্যি নয় বলে জানান সাঈদের পরিবার।
গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটে আবু সাঈদকে গুলি করেন এক পুলিশ সদস্য। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
আবু সাঈদের পরিবারের দাবি, সে অত্যন্ত মেধাবী ছিল, তাকে বাঁচতে দেয়নি আওয়ামী লীগ সরকার। সরকারের নির্দেশে পুলিশ তাকে গুলি করে। মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার ছৈলের অনেক মেধা আছিল। সে সৎ ছিল, মানুষের উপকার করছে, নিজে প্রাইভেট পড়ে গ্রামের ছৈলদের বই কিনে দিছে। সে বলছিল, বড় হয়ে অনেক বড় সৎ অফিসার হবে; কিন্তু ওরা হতে দিল না। মেরেই ফেলল। আমার ছৈলের মতো যেন আর কেউ মারা না যায়। যাই মারছে তার বিচার চাই, তার যেন ফাঁসি হয়। এত মানুষ থাকতে কেমন করি পালেয়া গেল হাসিনা। মুই ওমার বিচার চাও। নতুন সরকারের কাছে একটাই দাবি, সাঈদকে যেন ওমরা জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা দেয়।’ সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমি ছেলে হারা হয়েছি, আমি তো আর ছেলেকে ফিরে পাব না। আমার একটা দাবি হলো, আমার ছেলেকে জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুনলাম ছেলেটাক গুলি করিয়া মারা পুলিশকে বরখাস্ত করছে। শাস্তি কি বরখাস্ত?। হাসিনাসহ যে পুলিশ সদস্য খুন করেছে, সবার ফাঁসি চাই।’
সাঈদের ভাই আবু হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছে। তাকে ডাইরেক্ট গুলি করে মারা হয়েছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ। তাকে জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে।’
ছোট বোন সুমি খাতুন বলেন, ‘ভাইকে গুলি করে মারা হলো। শেখ হাসিনা আমাদের গণভবনে ডেকে নিয়ে সবার সামনে বলেছিলেন, তুমি তো শুধু তোমার ভাইকে হারাইছ। কিন্তু আমার পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই শোক নিয়ে আমি বেঁচে আছি। তিনি ওই সময়ে কেঁদেছিলেন; কিন্তু এসব হচ্ছে তার অভিনয়।’