কোটা আন্দোলন কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় রাজধানীর উত্তরায় নিহত হন বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার হাফেজ মাওলানা মো. জসিম উদ্দিন (৩৫)। তিনি উপজেলার পূর্ব সলিয়াবাকপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান হাওলাদের ছেলে। ঘটনার দিন তিনি জরুরি কাজে বেরিয়ে ফেরার পথে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। তার বাড়িতে রয়েছেন অসুস্থ বৃদ্ধা মা মেহেরুন্নেছা বেগম, স্ত্রী সুমি, পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে জান্নাত ও দেড় বছর বয়সী শিশুপুত্র সাইফ। তাদের বুকফাটা আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। ১০ বছর বয়সী মেয়ে জান্নাত বাবার ছবি বুকে জড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, ছুটি নিয়ে ঢাকা থেকে বাবা বাড়িতে এলে তাদের দুই ভাই-বোনের জন্য খেলনা, খাবার ও পোশাক নিয়ে আসতেন। আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরতেন। সেই প্রিয় বাবা আর কোনোদিন আসবেন না। বুকে জড়িয়ে ধরবেন না।
এদিকে স্বামীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় সুমি বেগম। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, স্বামীই ছিলেন তার একমাত্র অবলম্বন। নোয়াখালীতে সুমি বেগমের বাবার বাড়ির অবস্থাও তেমন ভালো নয়। দুই সন্তানের লেখাপড়াসহ সংসার নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা চেয়েছেন।
জানা গেছে, প্রায় ১৫ বছর ধরে ঢাকায় থাকতেন জসিম উদ্দিন। তিনি উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে একটি ওয়ার্কশপে চাকরি করতেন। ১৯ জুলাই তিনি ৭ নম্বর সেক্টরে মাইক্রোবাসের পার্টস কিনতে একটি দোকানে যান। দুপুরে সেখান থেকে নিজ ওয়ার্কশপে ফেরার পথে ৫ নম্বর সেক্টরে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।