কম্বোডিয়ার মাটিতে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে জয়টা বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির; যাকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগে জেগে ওঠার টনিক হিসেবে দেখা হচ্ছে। মজিবুর রহমান জনির গোলে
১-০ ব্যবধানে পাওয়া জয়ের ম্যাচ দলের ফাকফোঁকরগুলোও কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল! ডিপ-ডিফেন্ডিংয়ে বারবার খোলসবন্দি হয়ে যাচ্ছিল দল। একাধিকবার ডিফেন্ডাররা তালগোল পাকিয়েছেন, কম্বোডিয়া সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচে ফিরতে পারেনি। আক্রমণ প্রতিহত করে কম্বোডিয়ার গোলমুখে হানা দেওয়ার মিশনেও বাংলাদেশ ছিল সমন্বয়হীন। ডেড-বল ধরে লম্বা পাস বাড়ালেও প্রতিপক্ষের গোলমুখে বল ধরার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখতে বারবার বল প্রয়োগ করে খেলার কৌশল নিচ্ছিলেন ফুটবলাররা। কুফল হিসেবে একাধিক হলুদ কার্ড দেখতে হয়েছে, অতিরিক্ত সময়ে মার্চিং অর্ডার পান ডিফেন্ডার তারিক কাজী। ম্যাচের যা হাল, তাতে শক্তি-সামর্থ্যে কম্বোডিয়ার চেয়ে এগিয়ে থাকা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিপক্ষ দলগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশ কী করে সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে থাকছে! ম্যাচে রক্ষণে অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য এদিন উইঙ্গার ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে খুব একটা ওপরে উঠতে দেখা যায়নি। আবাহনীর এ ফরোয়ার্ড আক্রমণে খুব বেশি ভূমিকা রাখতে না পারলেও কাজের কাজটি ঠিকই করেছেন। ২৪ মিনিটে তার লম্বা করে বাড়ানো বলকে দারুণ ভলিতে জালে পাঠিয়ে ম্যাচের ভাগ্য লিখে দিয়েছেন মজিবর রহমান জনি (১-০)। লিড নেওয়ার পর ৪১ মিনিটে কম্বোডিয়া দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল। চেনপলিনের ক্ষিপ্রগতির শট আনিসুর রহমান জিকো কোনোক্রমে ফিরিয়েছেন। ৫৬ মিনিটে কম্বোডিয়ার আক্রমণে বাংলাদেশ রক্ষণ ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল; আনিসুর রহমান জিকো পোস্ট ছেড়ে এগিয়ে এসে হেড বল ক্লিয়ার করেছেন। ৬৮ মিনিটে রক্ষণের সমন্বহীনতায় লিম পিসোথ সমতার জোড়ালো সম্ভাবনা জাগিয়েও হেডে বল বাইরে পাঠান।
বিরতির পর হাভিয়ের ক্যারবেরা মাঠে পাঠান শেখ মোরসালিন ও রফিকুল ইসলামকে। জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষিক্ত দুই তরুণ আহামরি কিছু করতে না পারলেও প্রতিপক্ষ রক্ষণে তাদের দৌড়ঝাঁপ ছিল ইতিবাচক। বদলি হিসেবে মাঠে আসার পর মোরসালিন ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম দূরপাল্লার শটে চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন। অধিকাংশ সময় রক্ষণ জমাট রেখে খেলার চেষ্টা করা বাংলাদেশ ম্যাচের বিভিন্ন সময় সমন্বিত আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। তরুণ রফিকুল ইসলাম-মোরসালিনরা মাঠে আসার পর সে প্রচেষ্টাগুলোকে মসৃণ মনে হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে ১০ ম্যাচে মাত্র ৯০ মিনিট খেলার সুযোগ পাওয়া সুমন রেজাকে এদিন ৮২ মিনিটে একমাত্র ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলিয়েছেন ক্যাবরেরা। কিন্তু মাঝমাঠের সঙ্গে আক্রমণের সঠিক সংযোগ না থাকায় এ ফরোয়ার্ড ম্যাচের অধিকাংশ সময় বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হয়ে থাকলেন! তারপরও জয়টা স্বস্তির হয়ে থাকল। ম্যাচের পর উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা বলেছেন, ‘আমি মনে করি দল যা করেছে তাতে সবাই গর্ববোধ করবেন। আমাদের দলটা তরুণ। কম্বোডিয়া যে ধরনের ফুটবল খেলেছে, তাতে কাজটা কঠিন ছিল।’
মন্তব্য করুন