বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনে হুমকি-ধমকির অভিযোগ শোনা যাচ্ছে নিয়মিত। রুগণ চিত্র দেখা গেছে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে ফেডারেশন প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায়। শারীরিক লাঞ্ছনার চিত্র দেখা গেল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নির্বাচনকে ঘিরে। সংগত কারণেই প্রশ্ন উঠছে—কোন পথে যাচ্ছে দেশের ক্রীড়াঙ্গন!
রাষ্ট্রক্ষমতার পালাবদলে বদলে যায় ক্রীড়া ফেডারেশন এবং বিভিন্ন ক্লাব। ব্যতিক্রম হয়নি শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরবর্তী সময়েও। অন্তর্বর্তী সরকার ক্রীড়াঙ্গন বিকেন্দ্রকীকরণের ঘোষণা দিলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। বিভিন্ন ক্লাব রাতের আঁধারে দখল হয়ে গেছে। ক্রীড়া ফেডারেশনের দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তিকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী সমর্থিত ক্রীড়া সংগঠকদের অনেকে আত্মগোপনে আছেন। বাকিরা ফেডারেশনের কর্মকাণ্ডে অনুপস্থিত। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই এমন অনেক কর্মকর্তাকে ফেডারেশনে আসতে বারণ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশন, বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনে গিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি উচ্চবাচ্য করেছেন। ফেডারেশন স্টাফদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা সর্বশেষ দেখা গেছে বাফুফে ভবনে। অ্যাডেভোকেট আলী ইমাম তপন, আনোয়ার হোসেন আনু, আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ানসহ আরও বেশ কিছু ব্যক্তিকে এ সময় বাফুফে ভবনে অবস্থান করতে দেখা গেছে। সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারের কক্ষে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সংশ্লিষ্টদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। বাফুফের একটি সূত্র জানিয়েছে, উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার খবর পেয়ে সেনা সদস্যরাও ভবনে ছুটে এসেছিলেন।
বাফুফে ভবনের এ হট্টগোলের আগে বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে ক্রীড়া ফেডারেশনের প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায়। যেখানে ক্রীড়া ফেডারেশনের বাইরের অনেক ব্যক্তি হাজির হয়েছিলেন। কথা বলার জন্য মাইক্রোফোন নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ি করতে দেখা গেছে তাদের। অনাহূত ব্যক্তিদের কারণে প্রকৃত ক্রীড়া সংগঠকরা কথা বলতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে নিজের ক্ষোভ লুকাননি যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
‘খেলাধুলায় সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে শৃঙ্খলা। এখানে তার প্রচণ্ড অভাব দেখলাম। শৃঙ্খলা এ পর্যায়ে থাকলে ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে আমি নিজেই সন্দিহান’—অনুষ্ঠানে বলছিলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো সংস্কারে সার্চ কমিটি গঠন করেছে সরকার। সে কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু ক্রীড়া ফেডারেশনে হট্টগোল দেখে ক্রীড়া উপদেষ্টা মনে করছেন, এখানে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলছিলেন, ‘আমার মনে হয়েছে এখানে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
৩০-৪০ বছর ধরে অনেকে আছেন, এক পরিবারের তিন চারজন আছেন—এমন ব্যক্তিরা নির্বাহী পদে থাকতে পারবেন না।’
সার্চ কমিটি বেশকিছু ফেডারেশনে কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। গঠিত কমিটি ঘোষণা করার কথা ছিল এ সপ্তাহে। কিন্তু পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে মন্ত্রণালয় তা বিলম্ব করছে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে—এ নিয়েও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে!