সৈয়দ বোরহান কবীর
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৪, ০৩:০৩ এএম
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৪, ০৭:৫২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ডাক দিয়ে যাই

মতির রত্নভান্ডারে ছাগলের অনুপ্রবেশ

সৈয়দ বোরহান কবীর
মতির রত্নভান্ডারে ছাগলের অনুপ্রবেশ

দরিদ্র বাবা অর্থাভাবে সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন, অভাবের তাড়নায় সন্তানকে হাসপাতালে রেখে পালিয়েছেন মা—এমন খবর মাঝেমধ্যে আমরা গণমাধ্যমে পাই। এসব খবরে আমরা উদ্বিগ্ন হই, আতঙ্কিত হই। অনেকেই নানা টানাপোড়েনের কারণে সন্তানকে ফেলে দেন ডাস্টবিনে অথবা রেলস্টেশনে। অজ্ঞাতপরিচয় শিশুকে কুড়িয়ে পাওয়ার খবর আমাদের ব্যথিত করে। দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিতরা তাদের প্রাণের ধন বিক্রি করে দেন বা অস্বীকার করেন। এটি একটি নির্মম বাস্তবতা। এটি হওয়া উচিত নয়। এ ধরনের দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি কাম্য নয়। কিন্তু অবৈধভাবে ফুলেফেঁপে ওঠা ধনাঢ্য ব্যক্তিরাও যে তাদের অবৈধ সম্পদ রক্ষা করার জন্য সন্তানকে অস্বীকার করেন—এ গল্প আমাদের অনেকেরই অজানা ছিল। মানুষ মাঝেমধ্যে অর্থলোভে পৈশাচিক, বীভৎস হয়ে যায়। তারা এত মানবিক বোধশূন্যহীন হয় যে, নিজের সন্তানকেই অস্বীকার করে। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা এ রকম একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করলাম।

ঘটনার সূত্রপাত একটি ছাগলকে ঘিরে। ‘ছাগলকাণ্ডে’ এক দুর্নীতিবাজের মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেল। ঈদুল আজহার আগে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হন মুসফিকুর রহমান ইফাত। শুরু হয় খোঁজ, কার ছেলে সে? শেষ পর্যন্ত দেখা যায় তিনি এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। এ নিয়ে যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা রকম চর্চা হচ্ছে, ঠিক সে সময় বোমা ফাটান এনবিআরের এই কর্মকর্তা নিজেই। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, মুসফিকুর রহমান ইফাত নামে তার কোনো ছেলে নেই। ইফাতকে তিনি চেনে না বলেও হুংকার দেন। এ কথার পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। মতিউর রহমান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, যারা অপপ্রচার করছেন তাদের বিরুদ্ধে তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তখন সবার দৃষ্টি যায় ইফাতের দিকে। ছাগল নিয়ে থাকা এই মিষ্টি ছেলেটির বাবা তাহলে কে?

একজন বাবা তার সন্তানকে অস্বীকার করতে পারেন—এমন নির্মমতা আমাদের সমাজে খুব একটা দেখা যায় না। আমাদের বাবারা প্রচণ্ড কষ্টের মধ্যেও নিজের জীবন উৎসর্গ করেন সন্তানদের জন্য। নিজেদের সব আনন্দ-বিলাসিতা ত্যাগ করে সন্তানকে মানুষ করতে চান। সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে নিজেদের সব কিছু উজাড় করে দেন। সেখানে একজন বাবা সন্তানকে অস্বীকার করবেন কী করে? তাই শুরুতে মতিউরের কথাই সত্য বলে ধরে নিতে হয়। সন্তানকে কি কেউ অস্বীকার করে? আমরা মতিউরের ওপরই আস্থা রাখি। কিন্তু দুষ্ট ছাগলের ক্রেতা খুঁজতে খুলে যায় মতিউরের রত্নভান্ডার। এখন গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে যে, ইফাত মতিউর রহমানের সন্তান। তার দ্বিতীয় সংসারের প্রথম সন্তান ইফাত। ইফাতের মাধ্যমিক পরীক্ষার যে নম্বরপত্র, তাতেও দেখা যাচ্ছে তার বাবার নাম মতিউর রহমান। মতিউর রহমান তাহলে কেন অস্বীকার করলেন তার প্রিয় সন্তানকে? ছাগলকাণ্ডে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে যেসব তথ্য বেরোচ্ছে, সেগুলো ভয়ংকর। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীরকেও হার মানিয়েছে তা। তার এই গুপ্তধনের খোঁজ যেন আমরা না পাই, সেজন্যই কি তিনি এই কাণ্ড করলেন?

আমি মতিউরের অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি দিতে যাব না। কারণ, এটি ইতোমধ্যে কালবেলাসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হচ্ছে। ১৫ লাখ টাকা দিয়ে যে কিশোর ছাগল কিনেছে, তা নিয়েও ঠাট্টা, রসিকতা আমি করব না। আমি শুধু একটি বিষয় নিয়ে বিব্রত, হতাশ, বিস্মিত। তা হলো একজন বাবা কতটা বর্বর, পৈশাচিক হলে তার অর্থ এবং অবৈধ কর্মকাণ্ড গোপন করার জন্য নিজের সন্তানকে অস্বীকার করতে পারেন। টাকা থাকলে মানুষ কী না করে। একাধিক বিয়ে করে, উপপত্নী, বান্ধবী রাখে, বেপরোয়াভাবে সম্পদ ক্রয় করে দেশে-বিদেশে। মতিউর রহমান যেন সেরকমই একটি চরিত্র। তার প্রথম স্ত্রীর ঘরে সন্তানাদি আছে। তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী থাকেন ধানমন্ডিতে। সেখানে তিনি মাঝে মাঝে যান। ভাগ্যিস তিনি তৃতীয় বিয়ে করেননি। অথবা তিনি তৃতীয় বিয়ে করেছেন কি না, তা আমরা জানি না। এ রকম কত বৈধ-অবৈধ স্ত্রী তার আছে, সে বিতর্কেও আমি যাব না। আমার শুধু একটিই প্রশ্ন, মতিউর রহমান তার ছেলেকে কেন অস্বীকার করলেন? এর মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা কী? মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা অনেক রকম হতে পারে। আমরা যদি খুব সরলীকরণ ব্যাখ্যা দিতে যাই, তা হলে ব্যাখ্যাটি এ রকম দাঁড়ায়—মতিউর রহমান তার ছেলেকে বাঁচানোর জন্যই পিতৃত্ব অস্বীকার করেছেন। মতিউর রহমান হয়তো ভেবেছেন, সব কিছু ম্যানেজ করা যাবে। তার যেসব কেচ্ছা-কাহিনি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাতে প্রমাণিত হয়, তিনি অতীতে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আগেও তার অবৈধ সম্পদ খুঁজেছে। সেটা ম্যানেজ করেছেন তিনি টাকার জোরেই। কাজেই তার সন্তান যে ছাগলকাণ্ড করেছেন, সেটাও তিনি ম্যানেজ করতে পারবেন বলে তার বদ্ধমূল ধারণা ছিল। এ কারণেই তিনি তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামাল দিতে সব কিছু অস্বীকার করেছেন। মানুষের দৃষ্টি সাময়িকভাবে আড়াল করার জন্যই তিনি সন্তানকে অস্বীকার করেছিলেন। এর দ্বিতীয় আরেকটি ব্যাখ্যা থাকতে পারে। তা হলো সন্তানকে যদি তিনি অস্বীকার করেন, তাহলে তার অবৈধ সম্পদের খোঁজ-খবর কেউ নেবে না। তাকে নিয়ে কেউ খোঁচাখুঁচি করবে না। ছাগলকাণ্ডেই বিষয়টি শেষ হবে। সবাই নতুন ইস্যুতে ঝুঁকবে। কিন্তু মানুষ যখন প্রচণ্ড দুর্নীতিবাজ হয়ে যায়, বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হন, তখন তিনি বেপরোয়া হন। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে যান। বাস্তবতা থেকে তিনি নিজেকে অনেক দূরে সরিয়ে ফেলেন। এ কারণেই তিনি অনুভব করতে পারেন না কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক। মতিউর রহমান মনে করেছিলেন, টাকা থাকলেই বোধহয় সব কিছু সামাল দেওয়া যায়। এ কারণেই তিনি ছেলেকে অস্বীকার করে সবাইকে ধোঁকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এ যুগে তথ্য গোপন আদৌ কি রাখা যায়! তথ্য গোপন রেখে বাঁচা যায়! মতিউর রহমান যে বিপুল সম্পদ-বিত্ত বানিয়েছেন সে বিপুল সম্পদ যে বৈধ পথে উপার্জন করেননি, তা সন্তানকে অস্বীকার করার মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে। মতিউর যদি বৈধ পথে অর্থ উপার্জন করতেন, তাহলে তার সন্তানের ১৫ লাখ টাকার ছাগল কেনা নিয়ে তিনি গর্বিত হতেন। যেভাবে তিনি অবলীলায় শেয়ারবাজারে তার অর্থপ্রাপ্তির বিবরণ দিচ্ছিলেন একটি টেলিভিশনে, সেভাবেই তিনি ১৫ লাখ টাকার ছাগল কেনার একটা ব্যাখ্যা দিতেন। আম্বানির ছেলের বিয়েতে বিত্তের উৎসব হলো না, কার কী? এই ঢাকা শহরে কেউ কেউ বিয়ের অনুষ্ঠানে ভারতীয় তারকাদের নিয়ে এসে ফুর্তি করেন। এসব তো এখন সমাজে ‘জায়েজ’ হয়ে গেছে। এবার ঈদে কেউ কেউ কোটি টাকার গরু কিনেছে। অনেক বিত্তশালী অরুচিকরভাবে তাদের বিত্তের প্রকাশ ঘটান। এসব বিত্তের উৎকট বিলাস মানুষ নীরবে সহ্য করে।

সাম্প্রতিক সময়ে আমরা অদ্ভুত কিছু ব্যাপার লক্ষ করছি। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন চাকরির নামে আলাদিনের চেরাগ পাচ্ছেন। সরকারি চাকরি পাওয়া মানে যেন দুর্নীতির লাইসেন্স পাওয়া। বিপুল বিত্তের মালিক হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ যেন এখন সরকারি চাকরি। কেউ কেউ সরকারি চাকরিতে যাচ্ছেনই যেন বিত্তবান হওয়ার জন্য। অবৈধ পন্থায় সীমাহীন সম্পদের মালিক হওয়ার লোভে। ইদানীং সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার প্রবল আগ্রহ দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। মাঝেমধ্যে মনে হয়, শিক্ষার একমাত্র লক্ষ্য যেন সরকারি চাকরি পাওয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে গেলে দেখা যায়, লাইন ধরে শিক্ষার্থীরা সেখানে প্রবেশ করছেন। খুব আগ্রহ নিয়ে যদি আপনি তাদের জিজ্ঞেস করেন, কেন তারা লাইব্রেরিতে গেছেন? দেখবেন প্রায় সবাই লাইব্রেরিতে যাচ্ছেন বিসিএসের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এখন উদ্যোক্তা হতে চান না, করপোরেট চাকরি করতে চান না, সৃজনশীলতা চান না। কবি, লেখক, গবেষক হওয়ার আগ্রহ খুব কম শিক্ষার্থীর। আমাদের তারুণ্যের মধ্যে সরকারি চাকরির প্রবণতা ভয়ংকরভাবে বেড়ে গেছে। এটির একটি বাস্তবভিত্তিক কারণও আছে। আমাদের দেশে সরকারি চাকরিগুলো নিরাপদ, চিন্তামুক্ত জীবন দেয়। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মাইনে, একটি রুটিন জীবন এবং ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা প্রদান করে। সে কারণেই হয়তো অনেকেই সরকারি চাকরিতে ঢোকেন। বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে একটি অংশ বর্তমানে এখন বিদেশ চলে যাচ্ছেন। দ্বিতীয় অংশ চাকরির জন্য হামলে পড়ছেন। হোক না তিনি ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার কিংবা কৃষিবিদ। তার শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য সরকারি চাকরি। সরকারি চাকরিতে ঢুকলেই যেন তার জীবন ধন্য হয়ে যায়। মা-বাবা মনে করেন তার সন্তান সত্যিকার অর্থে মানুষ হয়েছে। আসলে তিনি মানুষ হচ্ছেন নাকি একজন দুর্নীতিবাজ হিসেবে পুনর্জন্ম নিচ্ছেন, সে বিতর্ক এখানে নাইবা করলাম। কদিন আগে একজন তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা চাকরি ছেড়ে দিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার হয়েছেন। ক্যাডারের চাকরি ছেড়ে নিম্নপদে কেন গেলেন, সেটা বুঝতে পণ্ডিত হওয়ার দরকার নেই। আমরা লক্ষ্য করি মেধাবী পরীক্ষার্থীরা যারা বিসিএস পরীক্ষা দিচ্ছেন, তাদের কেউ কেউ কাস্টম, আয়কর, এনবিআরের মতো জায়গাগুলোয় বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। প্রশাসন ক্যাডারের চেয়ে এ ধরনের ক্যাডার সার্ভিসগুলোয় মেধাবীদের ঝোঁক যে কাউকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেই। কেন তারা এনবিআরের চাকরি চান, কেন কাস্টমের চাকরি চান, কেন একজন তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা সাব-রেজিস্ট্রার হতে চান? মতিউর রহমানের ঘটনায় সব প্রশ্নের উত্তর এক বিন্দুতে মিলিয়ে দিয়েছে। যে তরুণটি তথ্য ক্যাডারের চাকরি ছেড়ে সাব-রেজিস্ট্রারে যোগদান করেছেন, তিনি মতিউর রহমান হতে চান। প্রচণ্ড বিত্তশালী একজন দুর্নীতিবাজ সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। যে তরুণরা এখন প্রশাসন ক্যাডার, তথ্য ক্যাডার, কৃষি ক্যাডার, স্বাস্থ্য ক্যাডারের চেয়ে কাস্টমস কর্মকর্তা, এনবিআর কর্মকর্তা হতে বেশি আগ্রহী, তাদের উদ্দেশ্য মতিউর রহমান হওয়া। এখন মতিউর রহমানরাই হচ্ছেন অনেকের অনুকরণীয়। এখন দুর্নীতিবাজদের দেখলে কেউ ঘেন্না করে না। দুর্নীতিবাজদের উদহারণ মনে করেন। এখন যার যত সম্পদ তিনিই সমাজে তত প্রতিপত্তিশালী। এখন যিনি যেই পরিমাণ বিত্তশালী, তা হোক বৈধ পথে কিংবা অবৈধ পথে, তিনিই সবচেয়ে বেশি ক্ষমতাবান। টাকা থাকলে এখন সব কিছু হয়। মতিউর রহমান টাকার জোরে এখন দুই স্ত্রীকে আনন্দে রাখছেন। তার এক স্ত্রী রাজনীতিতেও নেমেছেন। মতিউর রহমান ভবিষ্যতে যে রাজনীতি করবেন না, তা কে নিশ্চিত করে বলবে। মতিউর রহমানের টাকা আছে। তাই টাকা দিয়ে তিনি ভবিষ্যতে মনোনয়ন কিনবেন। এমপি হবেন। মতি মন্ত্রী হলেও জাতি অবাক হবে না। কাজেই মতিউর রহমান কিছু তরুণকে উৎসাহী করবেন। যে তরুণ শিক্ষাজীবন শেষ করে সরকারি চাকরির দিকে ঝুঁকছেন, তাদের কেউ কেউ নিশ্চয়ই একজন মতিউর রহমান হতে চাইবেন। তারা ড. আকবর আলী খান হতে চাইবেন না, ড. সাদাত হোসেন হতে চাইবেন না। কারণ মতিউর রহমানরা বিত্তশালী, দেশে-বিদেশে তার অঢেল সম্পদ। বেহেশতি সুখে টইটম্বুর তার জীবন। একজন ব্যবসায়ীকে টাকা উপার্জন করতে কত কাঠখড় পোড়াতে হয়। ঝুঁকি নিতে হয়। শ্রমিক সামাল দিতে হয়। প্রতিযোগিতা করতে হয়। কিন্তু মতিরা শুয়ে-বসে বাতাস থেকে টাকা উপার্জন করেন। বর্ষাকালে আমরা বৃক্ষরোপণ করি, কেউ ঔষধি গাছ রোপণ করি, কেউ ফলের চারা। মতিউর রহমান রোপণ করেছিলেন টাকার গাছ। একটা না অনেক টাকার গাছ। গাছ থেকে পাতার বদলে মতি টাকা পারেন। সেই টাকা দিয়ে হাজার কোটি টাকার সম্পদ বানিয়েছেন। গড়েছেন রত্নভান্ডার। কিন্তু মতির রত্নভান্ডারে ঢুকেছে দুষ্ট ছাগল। আর সবাই বিত্ত-বৈভবের কথা জেনে ফেলেছে তাতে। তবে মতিউর রহমানের বিশেষ কিছু হবে বলে আমি মনে করি না। বিত্তশালী হলে সব কিছুকে অস্বীকার করা যায়। আইনকে অস্বীকার করা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশনকে বাগে আনা যায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করা যায়, এমনকি গণমাধ্যমের মুখও বন্ধ করা যায়। কিছুদিন পর মতিউর রহমানকে নিয়ে হুলুস্থুল হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে। মতিউর রহমান হয়তো সব কিছু ম্যানেজ করে ফেলবেন। তার দ্বিতীয় ঘরের সন্তানরাও বিদেশে স্থায়ী হবেন। মতির রত্নভান্ডারের সন্ধান দিল যে ছাগল, এর কী হবে?

লেখক: নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত

ইমেইল: [email protected]

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাবি-জাবিতে দুই খুন, যা বললেন ফারুকী 

নাটোরে শিশু হত্যা মামলায় ৩ জনের ৪৪ বছর কারাদণ্ড

ইরাকে তুর্কি বিমান হামলা, ২৪ স্থাপনা ধ্বংস

দ্বিতীয় সেশনেও টাইগারদের দাপট

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব রক্ষায় ৮ দফা বাস্তবায়নের দাবি ঐক্য পরিষদের

ভিসার মেয়াদ শেষ আজ, কী ঘটবে শেখ হাসিনার ভাগ্যে

লক্ষ্মীপুরে পিটিআই প্রশিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ

সালমানকে নিয়ে যা বললেন শাবনূর

ট্রাম্পের তথ্য হ্যাক করে বাইডেনকে দিয়েছে ইরান!

শেষ ম্যাচে ৮ উইকেটের বড় জয় বাংলাদেশের

১০

নামাজ পড়ে বাসায় যাওয়া হলো না পুলিশ সদস্য জহিরুলের

১১

বিদেশি শিক্ষার্থী-কর্মীদের কানাডার দুঃসংবাদ

১২

পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ঢাবি প্রশাসনের মামলা

১৩

জবির নতুন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াস উদ্দিন

১৪

ঢাবিতে মব জাস্টিসের প্রতিবাদে ‘ব্রিং ব্যাক জাস্টিস’ কর্মসূচি

১৫

ঢাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের পরিচয় মিলল

১৬

আ.লীগ নেতা তুষার কান্তি মন্ডল ৭ দিনের রিমান্ডে

১৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ১৫

১৮

ঢাবি ও জাবিতে ‘পিটিয়ে হত্যা’ দুঃখজনক : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৯

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সম্প্রদায়িক সহিংসতার তদন্ত দাবি ঐক্য পরিষদের

২০
X