পণ্ডিত রবিশঙ্কর প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ, যিনি সেতারবাদনে বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত। তিনি ১৯২০ সালের ৭ এপ্রিল উত্তর প্রদেশের বেনারসে জন্মগ্রহণ করেন। তার সাংগীতিক কর্মজীবনের পরিব্যাপ্তি প্রায় ছয় দশকজুড়ে। পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলায়। তার বাবা শ্যামশঙ্কর চৌধুরী ছিলেন প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ ও আইনজ্ঞ। বস্তুত একরকম দারিদ্র্যের মধ্যেই রবিশঙ্করের মা হেমাঙ্গিনী তাকে বড় করেন। বড় ভাই উদয় শঙ্কর ছিলেন বিখ্যাত শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী। একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে প্রচার ও মানবিক সহায়তার জন্য জর্জ হ্যারিসনের উদ্যোগে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে সেতার বাজান। তিনিই মূলত এ অনুষ্ঠানের জন্য হ্যারিসনকে উদ্বুদ্ধ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কনসার্ট ফর বাংলাদেশ একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। তার অমর কীর্তি হচ্ছে পাশ্চাত্য ও প্রতীচ্যের সংগীতের মিলন। পাশ্চাত্য সংগীতের বিখ্যাত বেহালাবাদক ইহুদি মেনুহিনের সঙ্গে সেতার-বেহালার কম্পোজিশন তার এক অমর সৃষ্টি, যা তাকে আন্তর্জাতিক সংগীতের এক উচ্চ আসনে বসিয়েছে। তিনি আরও একটি বিখ্যাত সংগীত কম্পোজিশন করেছেন বিখ্যাত বাঁশিবাদক জঁ পিয়েরে রামপাল, জাপানি বাঁশির সাকুহাচি গুরু হোসান ইয়ামামাটো ও কোটো গুরু মুসুমি মিয়াশিতার জন্য। তিনি ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর মারা যান।
মন্তব্য করুন