মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১
ডোনাল্ড আর্ল কলিন্স
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৫, ১২:৫৯ এএম
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৫, ০৯:০১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

মার্কিনিদের স্বপ্নের সমাপ্তি ঘটেছে

মার্কিনিদের স্বপ্নের সমাপ্তি ঘটেছে

আমেরিকার অর্থনীতির স্বর্ণযুগের ইতি টানা হয়ে গেছে বহু আগেই। আর নিকট ভবিষ্যতে দেশটির আরও উন্নত দিন আসার সম্ভাবনা বেশ ক্ষীণ। বিশ শতকের একটা জনপ্রিয় ধারণা ছিল ‘আমেরিকান স্বপ্ন’ যেখানে বিপুলসংখ্যক মানুষ মধ্যবিত্ত, সচ্ছল কিংবা অত্যন্ত বিত্তশালী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারত এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নেও সক্ষম হতো। একবিংশ শতকের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে এমন ঘটনা বিরল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মুডি’স অ্যানালিস্ট নামক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদনের মতে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা ব্যয়ের অর্ধেকেরও বেশি ১০ ট্রিলিয়ন ডলার এককভাবে চালিত করেছে দেশটির শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনী নাগরিক। এদের ঘর প্রতি ন্যূনতম বার্ষিক আয় ২,৫০,০০০ ডলার। এই বাস্তবতা দেখায় যে, মাত্র ১ কোটি ২৭ লাখ পরিবার গোটা দেশের বাকি নাগরিকদের তুলনায় বেশি ব্যয় করতে সক্ষম। এটা নিঃসন্দেহে অবাক করার মতো বিষয়। আর এই সংখ্যাটা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে মূলত সাধারণ কর্মজীবী আমেরিকানদের প্রয়োজনভিত্তিক ও বিবেচনামূলক ব্যয়ের ওপর নির্ভরশীল ছিল তার অগ্রগতির শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছে। তবে আমেরিকান স্বপ্নের অবসানের সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, কোটি কোটি আমেরিকানদের জন্য এটা আদৌ কোনো বিস্ময়কর ব্যাপার নয়। ১৯৪৫ সালের যুদ্ধ সমাপ্তির পর থেকে ২০০৮ সালের আবাসন বাজার ধস পর্যন্ত যে ভোক্তাকেন্দ্রিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা আমেরিকার পরিচায়ক ছিল, সেই ব্যবস্থার অবক্ষয় এবং আমেরিকান স্বপ্নের ক্রমশ বিলুপ্তি আসলে শুরু হয়েছিল এখন থেকে প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে। সামাজিক কল্যাণ ও শিক্ষা খাতে ধারাবাহিকভাবে চাপিয়ে দেওয়া কঠোর ব্যয়সংকোচন নীতি। পাশাপাশি ধনকুবের ও বৃহৎ করপোরেশনগুলোর জন্য একের পর এক কর মওকুফ করার ব্যবস্থা—এই দুইয়ের সংমিশ্রণেই সামাজিক গতিশীলতা স্তব্ধ হয়ে গেছে, বিশেষ করে দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসরত আমেরিকানদের জন্য।

আমেরিকার এই বর্তমান অবস্থার পেছনে কারণগুলো হলো উৎপাদন শিল্প থেকে সেবা খাতে কর্মসংস্থান স্থানান্তর, অটোমেশন, আঞ্চলিক পুনর্বিন্যাস, কর্মী ছাঁটাই এবং লাখ লাখ চাকরি বিদেশে স্থানান্তর। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা ও উচ্চশিক্ষার ব্যয়ভার। এই ব্যয়ভার কোটি কোটি জনগণকে ঋণের বোঝায় জর্জরিত করেছে। এসব পরিবর্তন ও অন্যান্য কিছু কারণ একত্রে আমেরিকার জনগণকে স্বপ্নসন্ধানীর পরিবর্তে সংগ্রামশালী শ্রেণিতে পরিণত করেছে। আর সবচেয়ে ভয়ানক সত্য হলো, বিগত কয়েক দশক ধরে এমনটাই আশা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের ধনী অভিজাত শ্রেণি।

অধিকাংশ বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ আমেরিকানদের অর্থনৈতিক শক্তির শিখরকাল ছিল ১৯৭০ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত। তখন প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জন নাগরিকই নিজেদের মধ্যবিত্ত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করতে পারতেন। এ ছাড়া কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিনো এবং অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আমেরিকানরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে প্রবেশের পথ খুঁজে পেয়েছিলেন।

গল্পটি এমন যে, ১৯৭৩ সালে ইয়োম কিপুর যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার ফলে সংঘটিত ওপেক তেল সংকট এবং আমেরিকার মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়নের পতন ১৯৭৩-৭৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করতে শুরু করে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও উচ্চ বেকারত্বের হারের সংমিশ্রণ যুক্তরাষ্ট্রের তিন দশক জুড়ে বিদ্যমান অর্থনৈতিক আধিপত্য ও সমৃদ্ধির যুগের সমাপ্তি ঘটায়। এ ঘটনার থেকে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, কিছু দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের ওপর নির্ভরশীল বিশ্বশান্তির অবসান ঘটেছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, ১৯৭০-এর দশক থেকেই বৃহৎ করপোরেশন, শীর্ষ ধনিক শ্রেণি এবং কেন্দ্রীয় সরকার দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত আমেরিকানদের সহায়তার পরিবর্তে সম্পদ অন্যদিকে প্রবাহিত করতে শুরু করেছিল।

১৯৬৫ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের প্রবর্তিত ‘দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ বা ‘গ্রেট সোসাইটি’ কর্মসূচিগুলো ছিল উদীয়মান নব্য রক্ষণশীলতাবাদ আন্দোলনের জন্য চূড়ান্ত এক ধাক্কা। এই নব্য রক্ষণশীলতাবাদ আন্দোলনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আর্ভিং ক্রিস্টল তার আত্মজীবনীমূলক স্মৃতিকথায় ‘দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ কর্মসূচিকে অভিশাপ বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, সরকার রাজনৈতিকভাবে কঠোর নীতি প্রয়োগ করে আমেরিকার দরিদ্র জনগণকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে পারবে না। ক্রিস্টল ও তার অনুসারীরা বিশ্বাস করতেন যে, আদর্শবাদী নীতিনির্ধারকদের জন্য যেই তৎকালীন সমাজবিজ্ঞানভিত্তিক প্রেরণা বিরাজমান ছিল, তা হলো এই ধারণা যে, কেবল শ্রেণি সংগ্রামের মধ্য দিয়েই ‘গ্রেট সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এই দাবি করে তারা জনসনের নীতিনির্ধারকদের সোভিয়েত ইউনিয়নের কম্যুনিস্ট পুতুল বলে অভিযুক্ত করেছিলেন।

জনসনের দারিদ্র্য নির্মূলীকরণ ও আমেরিকার সব নাগরিককে প্রকৃত অর্থে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে করের টাকা ব্যয় করার উদ্যোগকে নব্য রক্ষণশীলতাবাদীরা বিপজ্জনক কম্যুনিস্ট কর্মকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। গত শতকের আশির দশকে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের রক্ষণশীল বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ‘গ্রেট সোসাইটি’ এবং ‘দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ কর্মসূচির অবসান ঘটে। এমনকি ১৯৩০-এর দশকে ‘নিউ ডিল’-এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট যে সামাজিক কল্যাণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, তাও এ সময় আক্রমণের শিকার হয়।

যদিও রিগান ১৯৮২ সালে তার ডায়েরিতে লিখেছিলেন, ‘পত্রিকাগুলো দাবি করছে যে আমি নিউ ডিল কর্মসূচি বাতিল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছি। আমি তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, টানা চার নির্বাচনেই আমি ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টকে ভোট দিয়েছিলাম। আমি কেবল গ্রেট সোসাইটি কর্মসূচি বাতিলের উদ্যোগ নিচ্ছি।’ তবে তার সমগ্র শাসনকালজুড়ে তিনি সামাজিক কল্যাণ এবং সামাজিক গতিশীলতার নীতিগুলোকে অবজ্ঞা করে গেছেন। বহু বছর ধরে রিগান অভিযোগ করে গেছেন যে, ‘নিউ ডিলের ভিত্তি ছিল ফ্যাসিজম।’ তিনি দাবি করেছিলেন যে, রুজভেল্টের অধীনে কর্মরত নিউ ডিলের নীতিনির্ধারকরা কোনো কোনো ক্ষেত্রে মুসোলিনিরও প্রশংসা করতেন। ১৯৮৫ সালের সিপ্যাক (কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশান কনফারেন্স) ডিনারে রিগান ঘোষণা করেছিলেন যে, ‘রুজভেল্টের নিউ ডিলের পরই মূলত ডেমোক্র্যাটিক পার্টি; বিশেষ করে উদারপন্থি গোষ্ঠীগুলো রাজনৈতিক বিতর্কে তাদের আধিপত্য বিস্তার করেছে। কিন্তু বর্তমানে তাদের কোনো নতুন কার্যশীল পরিকল্পনা নেই।’ তিনি আরও বলেন যে, ‘নব্য রক্ষণশীলরা অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মধ্যে নতুন সংযোগ স্থাপন করেছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে একটি নতুন কর ব্যবস্থা প্রবর্তন করে বর্তমানে বিদ্যমান ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে পাল্টে ফেলতে হবে।’ পরবর্তী সময়ে ১৯৮১ সালের পর থেকে করপোরেট লবিস্টদের উদ্যোগ এবং রিপাবলিকান পার্টি ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিভিন্ন আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি একত্রীকরণের মাধ্যমে ধনিক শ্রেণি এবং করপোরেশনগুলোর জন্য নতুন কর ব্যবস্থা গঠিত হতে শুরু করে, যেখানে তাদের ওপর ধার্যকৃত করের পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। ১৯৫০-এর দশকে দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরা তৎকালীন ২,০০,০০০ ডলার আয়ের পর অতিরিক্ত সব আয়ের ওপরে উপার্জনের ৯১ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতেন এবং ১৯৭০-এর দশকে আয়করের হার ছিল ৭০ শতাংশ। রিগান যুগে আরোপিত কর মৌকুফের ফলে ১৯৮০-এর দশকে সর্বোচ্চ করের হার ছিল ৫০ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে এটি কমতে কমতে ২৮ শতাংশে নেমে আসে। যদিও পরে ১৯৯০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময় আয়করের হার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছিল, কিন্তু ততদিনে সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচিতে বিনিয়োগ কমে যাওয়া, ২০ বছর ধরে বিদ্যমান থাকা মুদ্রাস্ফীতি এবং সরকারি কল্যাণ ব্যবস্থার পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় পূর্বের নিকট আমেরিকার অর্থনৈতিক আধিপত্য আর পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রণীত কর ছাড়ের পর, করপোরেট কর বর্তমানে ইতিহাসের সর্বনিম্ন ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। এই নীতিগুলোর ফলস্বরূপ ধনী ব্যক্তিবর্গ এবং বৃহৎ করপোরেশনগুলো বিশাল বিত্তের মালিকে পরিণত হচ্ছে। আর এর দরুন মধ্যবিত্ত, শ্রমজীবী, কর্মরত দরিদ্র এবং অভাবী আমেরিকানরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

২০২০ সালে কার্টার প্রাইস ও ক্যাথরিন এডওয়ার্ডস নামে দুজন গবেষক র্যান্ড করপোরেশনের কর্ম-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশ করেন, যেখানে তারা দেখান যে ১৯৭৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে কর মওকুফ এবং সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচিতে অর্থের পরিমাণ কমানোর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ৯০ শতাংশ জনগণের কাছ থেকে শীর্ষ ধনী ১০ শতাংশ জনগণের কাছে প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ স্থানান্তরিত হয়েছে। আরও দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, ২০১০ সালের পর থেকে এই স্থানান্তরিত অর্থের পরিমাণ গড়ে প্রতি বছর ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলার করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসবই ঘটেছে কভিড ১৯ মহামারির আগে।

এদিকে অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রেও সাধারণ আমেরিকানদের জন্য পরিস্থিতি অত্যন্ত শঙ্কাশীল হয়ে উঠছে। ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের ধার্যকৃত ঘণ্টা প্রতি সর্বনিম্ন বেতন ৭.২৫ ডলার এখনো অপরিবর্তিত আছে। ১৯৮০ এর দশকেও এরকম টানা ৮ বছর সর্বনিম্ন বেতনের পরিমাণ স্থবির ছিল। তদুপরি করপোরেশনগুলোর একচেটিয়ে দখলদারি ও কর্মী ছাঁটাই অব্যাহত থাকার ফলে অসংখ্য আমেরিকানদের জীবিকা অর্জনের কাঙ্ক্ষিত পথ বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মরত আমেরিকানদের অর্ধেকই বছরে ৫০,০০০ ডলার বা তার থেকে কম আয় করে এবং এক-চতুর্থাংশ কর্মীরা বছরে ২৫,০০০ ডলারেরও কম আয় করে থাকে।

‘দি পলিটিকো’ পত্রিকায় সাবেক মার্কিন মুদ্রা নিয়ন্ত্রক, ইউজিন লুডভিগ লিখেছেন, ‘বেকার মানুষের সংখ্যা, খণ্ডকালীন কর্মজীবীদের সংখ্যা এবং ‘দারিদ্র্য বেতন সীমা’ এর নিচে উপার্জন করা মানুষের সংখ্যা একত্রিত করলে দেখা যায়, তারা আমেরিকার জনগণের প্রায় ২৩.৭ শতাংশ। অন্য কথায় বলতে গেলে, আমেরিকার প্রতি চারজন কর্মক্ষম ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বেকার। এটা দেশের জন্য অত্যন্ত শঙ্কাজনক ব্যাপার।’ যদিও সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দাবি করেছিলেন যে তার সময়ে আমেরিকা ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্থনীতির দৃষ্টান্ত দেখতে পেয়েছে, কিন্তু এই সংখ্যাগুলো তার দাবিকে সমর্থন করে না। কাজেই এ কথা বলা চলে যে, আমেরিকা তার ১৯৩০-এর দশকের গ্রেট ডিপ্রেশনের পূর্বেকার অর্থনীতিতে ফিরে যাচ্ছে। তবে পার্থক্য হলো ২০২৫ সালের এই অর্থনীতির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ১০ শতাংশ ধনী নাগরিকদের প্রভাব অন্য ৩০ কোটি জনগণের প্রভাবের থেকে বেশি। তবে ভোক্তা যদি নিজের আয়ের অর্থ দিয়ে বাড়ি কেনা বা ভাড়া করা, ছুটি কাটাতে পারা এবং ন্যূনতম খাবার ও স্বাস্থ্যসেবার খরচ বহন করতে পারে, কেবল তখনই ভোক্তাকেন্দ্রিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। অন্যথায় নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক দুই দলের সহায়তায় বর্তমান বিরাজমান ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই ছিল আমেরিকার ধনীগোষ্ঠীর কৌশলগত উদ্দেশ্য। আজকের দিনে ‘আমেরিকান স্বপ্ন’ বলতে যা বোঝায়, তা কেবলই এক মরীচিকা। কারণ, মধ্যবিত্ত শ্রেণির সমৃদ্ধির সব প্রবেশদ্বার সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

লেখক: ওয়াশিংটন ডিসির আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক। নিবন্ধটি আলজাজিরার মতামত বিভাগ থেকে অনুবাদ করেছেন অ্যালেক্স শেখ

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিসিসিআইয়ের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফিরছেন শ্রেয়াস আইয়ার

মার্কিন হামলা হলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ‘বাধ্য হবে’ ইরান : খামেনির উপদেষ্টা

টেশিসকে হাইটেক পার্ক করে ‘চীনের পরিকল্পনা’ আনার চিন্তাভাবনা

ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র!

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে দেখতে বাড়ি যাওয়ার পথে পুলিশ সদস্য নিহত

আগামী ১৫ বছর রিয়ালে থাকতে চান বেলিংহাম

পানিতে ভেসে গেল উপকূলের ঈদ আনন্দ, ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি

পাকিস্তানে থাকা আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো শুরু

টানা ছুটিতে যেভাবে চলছে রাজধানীর হাসপাতালগুলো

ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশ যেন কেউ পরিবর্তন করতে না পারে : আমীর খসরু

১০

সাভারে নৈশপ্রহরীকে গুলি করে হত্যা

১১

ভারতে আতশবাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, ১৮ জনের মৃত্যু

১২

যশোরের চৌগাছায় বৃহৎ গ্রামীণ উৎসব

১৩

টাঙ্গাইলে ফেসবুকে কমেন্টের জেরে বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর

১৪

আধিপত্য বিস্তারে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের সংঘর্ষ, আহত ১০

১৫

বুয়েটের নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা

১৬

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ‘সিকান্দার’, দুই দিনে ১০০ কোটি পার

১৭

জুলাই বিপ্লবে শহীদ ডা. রুবেলের পরিবারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার

১৮

সংস্কার সংস্কারের মতো চলবে, নির্বাচন নির্বাচনের মতো : মির্জা ফখরুল

১৯

আফগানিস্তানকে শিগগিরই সুখবর দেবেন পুতিন

২০
X