মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিশেষ সাক্ষাৎকার

ব্যাংককে চোর ধরার যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে

এ কে এনামুল হক
ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটির ডেপুটি ভাইস চ্যান্সেলর এ কে এনামুল হক। সৌজন্য ছবি
ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটির ডেপুটি ভাইস চ্যান্সেলর এ কে এনামুল হক। সৌজন্য ছবি

এ কে এনামুল হক— ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটির ডেপুটি ভাইস চ্যান্সেলর। এর আগে তিনি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বিজনেস ও ইকোনমিকস অনুষদের ডিন ও অর্থনীতির অধ্যাপক এবং গবেষণা সংস্থা এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বিশ্বব্যাংক, আইইউসিএন, সেভ দ্য চিলড্রেন, আইএফসি, ইউএনডিপি, জিআইজেডসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছেন। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন তিনি

কালবেলা : জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং বাংলাদেশের এখনকার পরিস্থিতি কেমন দেখছেন?

ড. এ কে এনামুল হক : প্রথমত, আমি মনে করি জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান বাংলাদেশের জন্য একটি বিশাল পরিবর্তন। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা যে অসাধ্য সাধন করেছে, তা একদিকে যেমন বিশাল তেমনি আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া চ্যালেঞ্জ ও সংকট কাটিয়ে ওঠা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য হবে বিশাল চ্যালেঞ্জের। কারণ ১৫ বছর বিশাল একটি সময়। এ সময়ে সরকারের প্রতিটি বিভাগে হাজার হাজার দলীয় নিয়োগ হয়েছে। ২০১৩-২০২৪ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিগুলোতে প্রায় ৬০ শতাংশ কোটা চালু ছিল। সুতরাং যারা এসব কোটা ও দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পেয়েছে এবং দায়িত্বশীল জায়গাগুলোতে অবস্থান করছে তারা নতুন সরকারকে সহযোগিতা করতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক।

সরকারের পক্ষে এ পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠাটাই বিশাল চ্যালেঞ্জ। সরকারকে প্রতিনিয়তই এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সেক্টরেও এমন সংকট তৈরি করে রেখে গেছেন শেখ হাসিনা; যার আশু কোনো সমাধান নেই। ফলে সমগ্র বিষয় নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করা উচিত। প্রথমে জনগণের মধ্যে চিন্তার পরিবর্তনটা দরকার। আমরা শুধু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের চিন্তা করছি। কিন্তু দেশকে যদি এ সংকট থেকে উঠিয়ে আনতে হয় তাহলে মানুষকে গতানুগতিক চিন্তার বাইরে নতুন কিছু ভাবতে হবে। তাহলেই কেবল পরিবর্তনটা দৃশ্যমান হবে। তা না হলে মনে হবে শুধু সরকার পরিবর্তন হয়েছে আর কিছুর পরিবর্তন হয়নি।

কালবেলা : সরকার সমগ্র সিস্টেমে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোন দিকগুলোতে নজর দেওয়া জরুরি বলে মনে করেন?

ড. এ কে এনামুল হক : প্রথমত দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি ঘটাতে হবে। এরপর শাসনব্যবস্থার ওভারঅল কোয়ালিটিতে পরিবর্তন আনতে হবে। জনপ্রশাসন মানে জনশাসন। কিন্তু এই চিন্তার পরিবর্তন দরকার। সরকারি কর্মচারীদের মনে রাখতে হবে তাদের কাজ হলো জনগণকে সেবা দেওয়া। যদিও সবসময় এটা সব সরকার বলে এসেছে, কিন্তু এ মনোভাবটা কখনো পরিবর্তন হয়নি। এটি করতে হলে সরকারি কর্মচারীদের ট্রেনিং এবং তাদের চিন্তার পরিবর্তন ঘটানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখনো ডিসিনির্ভর। ফলে যেটা হয়েছে তা হলো, একক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়া। আমরা এখনো সবকিছু ওভাবেই চিন্তা করছি।

প্রশাসনিক ব্যবস্থায় জনগণের সম্পৃক্ততার একটি পদ্ধতি চালু করা উচিত। সব ডিপার্টমেন্টে একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট কমিশন দরকার, যারা জনগণের কথা বা অভিযোগ শুনবেন, বুঝবেন ও সমাধান দেবেন জেলা পর্যায়ে এমনকি মন্ত্রণালয়গুলোতেও এ কমিশন গঠন করার জন্য। আমার একার চিন্তা থেকে এত পরিবর্তন আনতে পারব না। সুতরাং প্রত্যেক মন্ত্রণালয় বা উপদেষ্টার সঙ্গে একটি ছোট পরামর্শক টিম থাকা দরকার। এ পরামর্শক টিম প্রশাসনিক কাজ করবে না। তারা শুধু উপদেষ্টাকে বিভিন্ন কাজের বিষয়ে পরামর্শ দেবে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাবে। তারা জনগণের চাওয়া এবং কোনটাতে জনগণের ভালো হবে, কোনটাতে খারাপ হবে; তা চিন্তা করে উপদেষ্টাকে জানাবে।

বিভিন্নজন বিভিন্ন সময়ে উপদেষ্টাদদের বিভিন্ন উপদেশ বা পরামর্শ দেবে, এটা সত্য। আমরাও দিই বা দেব। এতে উপদেশগুলো মিক্সআপ হয়ে যাবে। ফলে এগুলো বাছাই করা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আমার পরামর্শ থাকবে, আমাদের বিশাল জনসংখ্যার এবং বড় অর্থনীতির একটি দেশে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একটা পরামর্শ টিম থাকা জরুরি। এই টিমের সদস্যরা হবেন কোনো বিষয়ের এক্সপার্ট অথবা সমাজের গুণিজন। তারা সপ্তাহে একদিন মন্ত্রণালয় একটি মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করবেন এবং কোনটা জনগণের জন্য ভালো হবে, কোনটা খারাপ হবে; তা উপদেষ্টাকে পরামর্শ দেবেন। সময় ফুরিয়ে যায়নি। এখনো এটা করা যেতে পারে।

কালবেলা : বিগত সরকারের আমলে প্রতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ টাকা ছাপানো হয়েছে। টাকা তো দেশের বাইরে যায় না, তাহলে দেশে তারল্য সংকট কেন?

ড. এ কে এনামুল হক : আমাদের অর্থনীতিতে মানি সাপ্লাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মানি সাপ্লাই কমলে ইন্টারেস্ট রেট অনেক বেড়ে যাবে এবং এর ফলে ইনভেস্টমেন্ট কমে যাবে। আমাদের মতো দেশে যেখানে মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ানোটা প্রধান কাজ সেখানে ইনভেস্টমেন্ট কমলে অনেক ক্ষতি হয়। এখানে প্রশ্ন আসে দেশে বিগত বছরগুলোতে প্রচুর টাকা ছাপানো হলেও সেই টাকা কোথায় গেল? এ প্রশ্নের উত্তর হলো, টাকা দেশেই রয়েছে। মানুষ টাকা ব্যাংকে না রেখে হয়তো ঘরে বেডের নিচে রেখেছেন, বালিশের নিচে রেখেছেন অথবা ট্রাঙ্কে ভরে রেখেছেন। গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক মন্ত্রীর বাড়িতে অভিযানে এমন দৃশ্য দেখাও গেছে। এরকম টাকা বহু জায়গায় পড়ে আছে। প্রশ্ন হলো তারা টাকা ব্যাংকে কেন দিচ্ছেন না? তারা ব্যাংকে টাকা দিচ্ছেন না বলেই তারল্য সংকট দেখা দিচ্ছে।

এ পরিস্থিতির একমাত্র সমাধান হলো মানুষের ঘরে থাকা টাকা ব্যাংকে নিয়ে আসা। কিন্তু মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে ভয় পাচ্ছে পাবলিক হয়ে যাওয়ার ভয়ে। সুতরাং মানুষ ব্যাংকে যে টাকা রাখবে তা সিক্রেট রাখা খুবই জরুরি। টাকা বাড়িতে ও ব্যাংকে রাখার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, টাকা ব্যাংকে থাকলে সেটা অর্থনীতিতে প্রবেশ করে। ফলে সরকারের উচিত হবে, ব্যাংকের টাকার নিরাপত্তা দেওয়া ও গোপনীয়তা বজায় রাখা। যদি কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকে তখন সরকার আদালতের মাধ্যমে ওয়ারেন্ট নিয়ে ব্যাংকের কাছে কারও টাকার হিসাব চাইতে পারে। সরকারকে আমাকে এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, আমার পকেটে রাখা টাকা এবং ব্যাংকে রাখা টাকার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা সমান। তাহলেই মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখবে এবং তারল্য সংকট আর থাকবে না। মনে রাখতে হবে, ব্যাংককে চোর ধরার যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

কালবেলা : দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অস্থিরতা কীভাবে তৈরি হলো এবং এর সমাধান কী?

ড. এ কে এনামুল হক : বিদ্যুৎ খাতের সমস্যাটা স্ট্রাকচারাল। এটা একদিনে তৈরি হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে ধাপে ধাপে এ সংকট তৈরি করা হয়েছে। আমরা বছরের পর বছর ২৫ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে আসছি। অথচ আমরা কখনো ১৪ হাজার বা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করিনি। অর্থাৎ ১০ হাজার মেগাওয়াটের সক্ষমতা কখনো কোনো কাজেই লাগানো হয়নি। আমরা এখন যেমন দেখছি লোডশেডিং বাড়ছে, তাহলে উচিত ছিল ওই দশ হাজার ক্যাপাসিটি থেকে এটা ফিলাপ করা। কিন্তু আমরা সেটা দেখছি না। তার মানে দাঁড়াচ্ছে আমাদের স্ট্যাটিসটিকসগুলোতে কোথাও একটা ফাঁক রয়ে গেছে, যেটা পরিষ্কার করা হচ্ছে না। যেহেতু নিয়মিত ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাই এর পেছনে সরকারের ভর্তুকি বাড়ছে। বিষয়টা তদন্তের দাবি রাখে। যদি ক্যাপাসিটি চার্জের স্ট্যাটিসটিকসে কোনো গরমিল পাওয়া যায়, তাহলে তাদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত আনা উচিত।

আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানি হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করেছি। আর এটা করতে গিয়ে পুরোপুরি কোম্পানি হয়নি বরং সরকারি করপোরেশন হিসেবে তৈরি হয়েছে। এখানে যারা পরিচালক রয়েছেন, তারা আসলে কাদের স্বার্থ দেখেন তা পরিষ্কার নয়। এখানে এমন লোকদের দায়িত্ব দেওয়া উচিত যারা জনগণের স্বার্থ দেখবে এবং এ বিষয়ে এক্সপার্ট হবে।

কালবেলা : ব্যবসা ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অনেক শিল্পকারখানা এখনো স্থিতিশীল হতে পারেনি। শ্রমিক অসন্তোষ, ফান্ডিংয়ে সংকটসহ নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কী?

ড. এ কে এনামুল হক : আমাদের ব্যবসায়ীদের একটি বিশাল অংশ রাজনীতি করত। রাজনৈতিক সুবিধা নিতে গিয়ে তারা যে আস্থার সংকট তৈরি করেছে, বর্তমান পরিস্থিতি তারই ফল। সংসদের ৬০ শতাংশ সদস্য ছিল ব্যবসায়ী। সরকারি বড় বড় ইনস্টিটিউশনের দায়িত্বে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বিগত সরকারের পতনের পর তারা অনেকেই পালিয়ে গেছেন। ব্যবসায়ীরা যদি রাজনীতির সঙ্গে এতটা সম্পৃক্ত থাকে তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে।

কালবেলা : দেখা গেছে, দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী হিসেবে গত ১৫ বছর আমরা যাদের চিনতাম তারাই আগে পালিয়েছে। তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেই বেশি সমস্যা তৈরি হয়েছে। শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছে না। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?

ড. এ কে এনামুল হক : প্রথমত, যাদের আমরা শীর্ষ ব্যবসায়ী হিসেবে চিনে আসছি তারা সবাই শীর্ষ না। বরং তাদের মিডিয়ায় শীর্ষ ব্যবসী হিসেবে দেখানো হয়েছে। দেশে এখনো বড় বড় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা স্বাভাবিকভাবেই রান করছে। সরকার পরিবর্তনের পরও এখানে কোনো ধরনের সমস্যা বা পরিবর্তন ঘটেনি। এরা রাজনীতি, অবৈধ সুবিধা নেওয়া বা দুর্নীতি কোনো কিছুর সঙ্গে ছিল না। এরা প্রকৃত ব্যবসায়ী। আর আমরা যাদের কথা বলছি, যারা পালিয়ে গেছে; তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণে নেওয়া খুব কঠিন কিছু নয়। সরকার যদি ব্যাংকগুলো রাতারাতি অধিগ্রহণ করতে পারে তাহলে এ প্রতিষ্ঠানগুলোকেও খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে। সরকারের উচিত অতিসত্বর এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডিরেক্টর নিয়োগ দেওয়া।

আমি যেখানে দেখতে পাচ্ছি এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা প্রকৃত ব্যবসা করার পরিবর্তে রাজনীতি ব্যবসা করেছে। ফলে তাদের প্রথম যেভাবে হওয়ার কথা সেভাবেই হবে। ভবিষ্যতে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা উচিত তারা যেন এরকমটা না করে। এদের পরিণতি থেকে তারা যেন শিক্ষা নেয়। এর মানে এই নয় যে, আমরা তাদের রাজনৈতিক দল সাপোর্ট করতে নিষেধ করছি। তারা যে কোনো রাজনৈতিক দলকে সাপোর্ট করতে পারে, এটা পৃথিবীর সব দেশেই ঘটে। তবে তারা যেন আওয়ামী লীগের আমলে যেভাবে ব্যবসায়ীরা রাজনীতি ব্যবসা শুরু করেছিল, ওই পথে না যায়।

কালবেলা : আওয়ামী লীগের পতনের পর দেখা গেছে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলাসহ প্রায় সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। মূলত গত ১৬ বছরে প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেভাবে রাজনীতিকীকরণ করা হয়েছে এটা তারই ফল। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী?

ড. এ কে এনামুল হক : এ সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সময় লাগবে। আমি পুলিশকে আমূল পরিবর্তন করতে চাই। আমি চাই পুলিশ দুর্নীতিমুক্ত ও জনবান্ধব হোক। বাংলাদেশ পুলিশের এই ব্যাপক দুর্নীতির মূল কারণ হলো তাদের হাতে থাকা একক ক্ষমতা। এই একক ক্ষমতা নষ্ট করতে কতগুলো পদ্ধতি আসতে পারে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা একটা ভালো উদাহরণ দিতে পারি সেটা হলো ‘ফেলুদা’। আমরা ছোটবেলায় ফেলুদার গল্প পড়েছি। কাজ ছিল প্রাইভেট ইনভেস্টিগেশন করা। বাংলাদেশেও এটা চালু করা উচিত। তাহলে পুলিশ জানবে যে তদন্ত অধিকার তার একক নয়। আর শুধু এই একটা পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা বিরাট বড় রেজাল্ট পেতে পারি।

পুলিশ জানবে যে, যদি তার তদন্ত অপছন্দ হয় তাহলে সরকার ইন্ডিপেন্ডেন্ট গোয়েন্দা নিয়োগ দিয়ে আবারও তদন্ত করতে পারবে। এমনকি যে কেউ চাইলেই যে কোনো বিষয়ে প্রাইভেট তদন্তকারী নিয়োগ দিতে পারবে। সুতরাং পুলিশকে ওই জায়গায় নিতে হলে পদ্ধতিগত সংস্কারের প্রয়োজন। তবে অবশ্য এটা আমি বর্তমান অবস্থার জন্য বলছি না বরং ভবিষ্যতেপুলিশকে ইমপ্রুভ করার জন্য বলছি। অনেক দেশই এ সিস্টেমে চলছে। এরকম যত জায়গায় আমরা দুর্নীতি দেখতে পাই সবই হলো একক ক্ষমতার ফল। সেগুলোকে চিহ্নিত করে চ্যালেঞ্জের মুখে আনাই প্রথম কাজ। আর এটা করতে পারলে দুর্নীতি অনেকাংশেই হ্রাস পাবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, বিএনপি নেতা খুন

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই গুমের বিচার হবে : উপদেষ্টা মাহফুজ

শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

শরীয়তপুরে দুগ্রুপের পাল্টাপাল্টি হামলায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, আহত ৭

নরসিংদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত, আহত ১০

৫ আগস্টের পরে সত্যিকারের ঈদ আনন্দ শুরু হয়েছে : জাহিদুল ইসলাম

অপহরণ চেষ্টার মামলায় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার

বাজারে হামলার শঙ্কা, ১৪৪ ধারা জারি

ঈদের দ্বিতীয় দিনে যমুনা সেতুতে টোল আদায় ৭৯ লাখ

ঈদের মেলায় ফুচকা খেয়ে হাসপাতালে ৫০

১০

ইরানে হামলার হুমকি, ট্রাম্পকে সতর্ক করল রাশিয়া

১১

কুমিল্লায় গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ২

১২

মাইকে ঘোষণা দিয়ে টর্চের আলোতে সংঘর্ষে নামে গ্রামবাসী

১৩

বিসিসিআইয়ের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফিরছেন শ্রেয়াস আইয়ার

১৪

মার্কিন হামলা হলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ‘বাধ্য হবে’ ইরান : খামেনির উপদেষ্টা

১৫

টেশিসকে হাইটেক পার্ক করে ‘চীনের পরিকল্পনা’ আনার চিন্তাভাবনা

১৬

ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র!

১৭

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে দেখতে বাড়ি যাওয়ার পথে পুলিশ সদস্য নিহত

১৮

আগামী ১৫ বছর রিয়ালে থাকতে চান বেলিংহাম

১৯

পানিতে ভেসে গেল উপকূলের ঈদ আনন্দ, ১৫ হাজার মানুষ বন্দি

২০
X