নিরুপমা দেবী বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তিনি ১৮৮৩ সালের ৫ মে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার সাহিত্যিক ছদ্মনাম শ্রীমতী দেবী। নিরুপমা দেবীর বাবা নফর চন্দ্র ভট্ট বিচার বিভাগীয় কর্মচারী ছিলেন। পরিবারের গণ্ডির মধ্যে থেকে তিনি সাধারণ শিক্ষা লাভ করেন। নিরুপমার অকালবৈধব্যের পর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বিভূতিভূষণ ভট্ট ও কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় সাহিত্য সাধনায় ব্রতী হন। বিভূতিভূষণ ও শরৎচন্দ্র পরিচালিত ‘হাতেলেখা’ পত্রিকায় তার সাহিত্য রচনার হাতেখড়ি। শরৎচন্দ্র তাকে গদ্য এবং গল্প রচনায় অনুপ্রাণিত করেন। তার সাহিত্য সাধনায় শরৎচন্দ্রের উৎসাহ ও অবদান ব্যাপক। নিরুপমার প্রথম উপন্যাস ‘উচ্ছৃঙ্খল’সহ স্বদেশি যুগে তার রচিত বহু গান এবং কবিতা জনপ্রিয় হয়। প্রেম ও দাম্পত্য জীবনের অন্তর্দ্বন্দ্ব তার উপন্যাসের প্রধান উপজীব্য। ১৯১৯-২০ সালে ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘দিদি’ তার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বলে স্বীকৃত হয়। তার অন্যান্য রচনার মধ্যে অন্নপূর্ণার মন্দির, দিদি, আলেয়া, বিধিলিপি, শ্যামল বন্ধু, আমার ডায়েরি, যুগান্তরের কথা, অনুকর্ষ, দেবত্র, পরের ছেলে অন্যতম। তার একাধিক উপন্যাস চলচ্চিত্রায়িত ও মঞ্চে অভিনীত হয়েছে। সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৮ সালে ‘ভুবনমোহিনী দাসী স্বর্ণপদক’ এবং ১৯৪৩ সালে ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। ১৯৫১ সালের এই দিনে নিরুপমা দেবী মারা যান।