আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজেই পশুপাখি অংশগ্রহণ। শৈশব থেকে শুরু করে, বৃদ্ধ সময় পর্যন্ত যেন ওরা নানাভাবে আমাদের চলার সঙ্গী। পশুপাখি বন-জঙ্গলে কী সুন্দরভাবেই না নিজেদের জীবন পরিচালনা করে। তাদের ছোটাছুটি পরিবেশকে সতেজ করে তোলে। এরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে; কিন্তু আমরা অনেকেই পশুপাখিকে খাঁচায় বন্দি করে পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির মুখে ফেলছি। এটি কখনো জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। দেখা যায় শখের বসে খাঁচায় বন্দি করে পশুপাখি লালন করা হয়। যার ফলে পশুপাখি অনেক নতুন রোগে আক্রান্ত হয়। তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়। অনেক পশুপাখি ধুঁকে ধুঁকে মারা যায় মুক্তির আশায়। পৃথিবীর কোনো প্রাণীই চায় না বন্দিজীবন। সবাই চায় প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে। পাখিরা তাদের ডানায় ভর করে ছুটে চলে। তাদের প্রয়োজনমতো খাবার খায়। থাকার জন্য চমৎকার বাসা নির্মাণ করে। এটিও প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। আমাদের চারপাশ হয়ে ওঠে মনোমুগ্ধকর। সকাল হলেই শোনা যায় তাদের কলকাকলি। ভোরের পাখিগুলো গেয়ে যায় মধুর গান। পশুগুলো কী সুন্দরভাবে চারদিকে থাকে, যেন আমাদের সুখ-দুঃখের অংশীদার।
পশুপাখির দোকানে গেলে দেখা যায়, হায়! কী করুণ দশা তাদের। দেখলে চোখে পানি চলে আসে। মনে হয় সব পশুপাখি ছেড়ে দিয়ে বলি—এইতো ফিরিয়ে দিয়েছি তোমাদের মৌলিক অধিকার। একটা উড়ন্ত পাখিকে খাঁচায় আটকে রেখে কীভাবে তার ভালো চাইতে পারেন। পাখিতো আকাশের নীলিমায় আর তার বানানো গাছের কোটরে বাসায় ভালো থাকবে। গাছে ফোঁটা ফুল কখনোই আপনি ছিঁড়ে এনে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সতেজ রাখতে পারেন না। পশুকে বন থেকে ধরে এনে খাঁচায় আটকে রেখে সুস্বাদু খাবার দিলেই সে ভালো থাকবে না। তাই আমাদের উচিত নিজের বিনোদন, ইচ্ছা আর ভালো লাগার জন্য না; বরং পশুপাখির ভালো থাকার স্বার্থে কাজ করা। প্রকৃতি প্রেমিক কখনোই তাদের খাঁচায় বন্দি করতে পারেন না। তাদের মুক্ত করে দেওয়াতেই আনন্দ। আর প্রকৃতি হয় আরও সুন্দর, আরও মনোমুগ্ধকর।
ইমন হাওলাদার, শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ