"আব্দুস সালাম তার ‘দ্য সুপ্রিম টেস্ট’ শীর্ষক সম্পাদকীয়র শুরুতেই মুজিব সরকারের আইনগত বৈধতা নিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এখন উদ্ভট অবস্থানে আছে। যদিও দলটি জনগণ কর্তৃক নিরঙ্কুশভাবে নির্বাচিত হয়েছিল। তবে বর্তমান সরকার নির্বাচিত নয়, প্রতিনিধিত্বমূলক এবং সাংবিধানিক সরকার নয়। কেননা, দেশে এখন পর্যন্ত কোনো সংবিধান রচিত হয়নি। তাই বর্তমান সরকারের অস্তিত্বের জন্য কোনো আইনি ভিত্তি নেই"
‘দ্য সুপ্রিম টেস্ট’—একটি বহুল আলোচিত সম্পাদকীয়। ১৯৭২ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ অবজারভারে এ সম্পাদকীয়টি প্রকাশিত হয়েছিল। ওই সময় পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন প্রবাদপ্রতিম সাংবাদিক আব্দুস সালাম। এ সম্পাদকীয়তে তিনি তৎকালীন মুজিব সরকারের আইনগত এবং সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বিষয়টি সহজভাবে নিতে পারেননি। তিনি সালাম সাহেবের ওপর ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন এবং তাকে চাকরিচ্যুত করেছিলেন। মতপ্রকাশের কারণে কোনো সম্পাদককে চাকরিচ্যুতির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে এটাই প্রথম। আর শেখ মুজিবের মাধ্যমেই এ দুঃখজনক, লজ্জাজনক ও কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা হয়। তিনি ফ্যাসিবাদী কায়দায় আব্দুস সালামকে চাকরিচ্যুত করেই ক্ষান্ত হননি; জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চরমপন্থায় গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছিলেন। আব্দুস সালামকে চাকরিচ্যুত করার মাত্র ৯ মাস পর ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন আহূত ‘ভিয়েতনাম দিবসের’ দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশ বিনা প্ররোচনায় ছাত্রদের ওপর গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মতিউল ইসলাম এবং ঢাকা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র মির্জা কাদের নিহত হন। এ সময় গুরুতর আহত হন বুয়েটের ভিপি আবুল কাসেম, দৈনিক বাংলার ফটোসাংবাদিক রফিকুর রহমানসহ আরও ছয়জন। বস্তুত এদিন থেকেই মুজিব সরকারের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের যাত্রা শুরু হয়। এ ঘটনায় দৈনিক বাংলা টেলিগ্রাম প্রকাশ করলে সরকার পত্রিকাটির সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সম্পাদক তোয়াব খানকে চাকরিচ্যুত করে। সেইসঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমান এ দুজনকে সরকারি চাকরি দিয়ে অনুগত প্রাণীতে পরিণত করেছিলেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ওপর চূড়ান্ত আঘাত হানা হয় বাকশাল গঠনের পর। পঁচাত্তরের ২৫ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী পাসের এক মাস পর ২৪ ফেব্রুয়ারি এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্তির মাধ্যমে বাকশাল গঠন করেন। বাকশাল গঠনের পর তিনি পঁচাত্তরের ১৬ জুন এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে মাত্র দুটি সংবাদপত্রের (দৈনিক বাংলা এবং বাংলাদেশ অবজারভার) ডিক্লারেশন বহাল রেখে সব পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করেন। পরে ইত্তেফাক এবং বাংলাদেশ টাইমসকে নতুন করে ডিক্লারেশন প্রদান করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নেন। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দৈনিক ইত্তেফাকের মালিকানা ছিনতাই করা হয়। পঁচাত্তরের ১৬ জুনের পর থেকে দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ অবজারভার, বাংলাদেশ টাইম এবং দৈনিক ইত্তেফাক—এ চারটি দৈনিকের প্রকাশনা সরকারি ব্যবস্থাপনায় অব্যাহত রাখা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের এ হস্তক্ষেপে গণমাধ্যমের কবর রচিত হয়। তখন শেখ মুজিবের এ ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপের প্রতিবাদ করার সাহস কারও হয়নি। পঁচাত্তরের আগস্ট ট্র্যাজেডির পর খন্দকার মোশতাক আহমদ গণমাধ্যমকে উন্মুক্ত করেন এবং ইত্তেফাককে আগের মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেন। সে সময় খন্দকার মোশতাক আরও একটি কাজ করেছিলেন। এটা হলো শেখ মুজিব কর্তৃক বিলুপ্ত আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। অর্থাৎ পঁচাত্তরের পরের যে আওয়ামী লীগ, তা খন্দকার মোশতাক কর্তৃক পুনরুজ্জীবিত আওয়ামী লীগ। এটাই হলো ইতিহাসের সত্য। এ সত্যকে আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের সহজভাবেই গ্রহণ করা উচিত। কেননা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘মনেরে আজ কহ যে, ভালো মন্দ যাহাই আসুক, সত্যেরে লও সহজে।’
মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে অবজারভার এবং আব্দুস সালাম সম্পর্ক আরও কয়েকটি কথা বলতে চাই। তবে তা অপ্রাসঙ্গিক নয়। আব্দুস সালাম অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকা বা ম্যাট্রিক পরীক্ষায় তিনি চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম স্থান পান। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইএসসি পরীক্ষায় মুসলিম ছাত্রদের মধ্যে তিনি শীর্ষস্থান লাভ করেন। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এরপর ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম হয়ে ‘টনি মেমোরিয়াল স্বর্ণপদক’ পান। স্বাধীনতার আগে ও পরে সব সময়ই শাসক শ্রেণির অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে কলম ধরে সরকারের বিরাগভাজন ও নিপীড়নের শিকার হন। ১৯৫২ সালে একটি সম্পাদকীয় লেখার জন্য তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পত্রিকাটির প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট বিজয়ী হওয়ার পর তৎকালীন সরকার পত্রিকাটি প্রকাশের অনুমতি দেয়। সালাম সাহেব ছিলেন আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় গুরুজন প্রখ্যাত সাংবাদিক এ বি এম মূসার মামা এবং পরবর্তী সময়ে শ্বশুরও বটে। এ বি এম মূসা ছিলেন অবজারভারের বার্তা সম্পাদক। আর প্রধান প্রতিবেদক ছিলেন খ্যাতিমান সাংবাদিক আতাউস সামাদ। পরে আতাউস সামাদ বিবিসি ওয়ার্ল্ডের সাংবাদিক হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে এবং বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের আস্থাভাজন হন। হলি ডে এবং নিউ এজের প্রতিষ্ঠাতা বিখ্যাত সাংবাদিক এনায়েতুল্লাহ খান ষাটের দশকের শুরুতে অবজারভারের প্রতিবেদক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। খ্যাতিমান সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদও একসময় এই পত্রিকার প্রতিবেদক ছিলেন।
এ বি এম মূসা, এনায়েতুল্লাহ খান, আতাউস সামাদ এবং রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাদের মধ্যে আতাউস সামাদের সঙ্গে আমার আন্তরিকতা ছিল সবচেয়ে বেশি। তিনি বিবিসি থেকে অবসর নেওয়ার কয়েক বছর পর আমি তার বিশেষ সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করি। তার মৃত্যুর আগপর্যন্ত প্রায় এক দশক আমি তার সঙ্গে কাজ করেছি। দিনের অধিকাংশ সময় আমাদের একসঙ্গে কাটত। আব্দুস সালাম ও এ বি এম মূসার প্রতি আতাউস সামাদের ছিল গভীর শ্রদ্ধা। এনায়েতুল্লাহ খানের সঙ্গে ছিল আতাউস সামাদের গভীর বন্ধুত্ব। সুযোগ পেলেই তিনি অবজারভারের দিনগুলো নিয়ে গল্পে মেতে উঠতেন। আতাউস সামাদের কাছ থেকেই আমি ‘দ্য সুপ্রিম টেস্ট’ শীর্ষক সম্পাদকীয় বিষয়ে অবগত হই।
আজ থেকে ৫২ বছর আগে লেখা এ সম্পাদকীয়র কাছে ফিরে যেতে হলো এ কারণে যে, এর বিষয়বস্তুর সঙ্গে বর্তমান সরকার এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক অবস্থার সঙ্গে বেশ মিল আছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা তার পোষক প্রভুদের দেশে পালিয়ে যাওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই এ সরকারের আইনগত এবং সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। সেইসঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন, বিশেষ করে নতুন সংবিধান প্রণয়নের যে উদ্যোগ নিয়েছেন, এর এখতিয়ার তার সরকারের আছে কি না; এ প্রশ্নটিও অনেকেই সামনে আনছেন।
১৯৭২ সালে অনুরূপ সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার সরকার। এ সমালোচনা বিস্তৃত হওয়ার আগেই শেখ মুজিব আব্দুস সালামের মতো একজন বিদগ্ধ সম্পাদককে চাকরিচ্যুত করেছিলেন। আব্দুস সালামকে চাকরিচ্যুত করার মাধ্যমে শেখ মুজিব সব গণমাধ্যমকে একটি চরম বার্তা দিয়েছিলেন। তবে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের আইনগত এবং সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে যারা সরব রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকারের তরফ থেকে তেমন কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি বা তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক।
আব্দুস সালাম তার ‘দ্য সুপ্রিম টেস্ট’ শীর্ষক সম্পাদকীয়র শুরুতেই মুজিব সরকারের আইনগত বৈধতা নিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এখন উদ্ভট অবস্থানে আছে। যদিও দলটি জনগণ কর্তৃক নিরঙ্কুশভাবে নির্বাচিত হয়েছিল। তবে বর্তমান সরকার নির্বাচিত নয়, প্রতিনিধিত্বমূলক এবং সাংবিধানিক সরকার নয়। কেননা, দেশে এখন পর্যন্ত কোনো সংবিধান রচিত হয়নি। তাই বর্তমান সরকারের অস্তিত্বের জন্য কোনো আইনি ভিত্তি নেই। এই সরকার এটি সশস্ত্র যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার কারণে ক্ষমতায় আছে। সুতরাং এটা একটি অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার।’
সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ‘একপর্যায়ে ন্যাপের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠিত হওয়া উচিত। পরে অবশ্য অধ্যাপক মোজাফফর ও মওলানা ভাসানীর মতো অন্যরা সরকারকে সমর্থন করেছিলেন দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার স্বার্থে। আওয়ামী লীগের এই দাবি করার অধিকার ছিল যে, জনগণ তাদের পছন্দ করে। তাই রাজনৈতিকভাবে তাদের সরকার গঠনে অধিকার আছে। যেহেতু রাতারাতি একটি সংবিধান রচনা করা যায় না, অন্যদিকে দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল নয়, এমতাবস্থায় স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকার গঠন করা জরুরি ছিল এবং এরপর গণপরিষদ ডেকে রাষ্ট্রের মৌলিক আইন প্রণয়ন করা।
স্বাধীনতার পর মুজিব বাহিনীর সদস্যরা কোনো প্রকার আইনগত কর্তৃত্ব ছাড়া রাষ্ট্রক্ষমতার হিস্যা নিচ্ছিল, যা ধীরে ধীরে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আব্দুস সালাম ওই সম্পাদকীয়তে লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রের ভেতর আর একটি রাষ্ট্র হতে পারে না। সকল ক্ষমতা সংবিধানের আওতাধীনে আইনসম্মত উপায়ে চর্চা করতে হবে। সরকারকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে এবং কোনো অজুহাতে তা অন্যের হাতে দেওয়া যাবে না। ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষা করা, ভারসাম্য নিশ্চিত করা, আইনের প্রাধান্য নিশ্চিত করা সরকারের কর্তব্য।’
প্রশাসনে নীতিনৈতিকতা, সুষ্ঠুতা ও তৎপরতার বড় অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছিল এবং এর প্রধান কারণ ছিল যুদ্ধকালীন ৯ মাসের দখলদার কর্তৃপক্ষের নিষ্ঠুরতা ও বেআইনি কার্যকলাপ। সে বিষয়ে আলোচ্য সম্পাদকীয়তে আব্দুস সালাম লেখেন, ‘শেখ মুজিব জনগণকে ভালোবাসেন, প্রতিদানে জনগণও তাকে ভালোবাসে, জনগণের সমর্থনই তার শক্তির উৎস, কোনো বিশেষ গ্রুপ বা মহলকে তার দিক থেকে কোনো প্রশ্রয় দেওয়া সমীচীন হবে না। বলতে গেলে শেখ মুজিব এখন তার জীবনের চরম পরীক্ষার সম্মুখীন হচ্ছেন।’
বাস্তবিক, শেখ মুজিবের চেয়েও জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা তার দীর্ঘ শাসনামলে উন্নয়নের ফানুস উড়িয়ে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন। ফ্যাসিবাদের এ অনুভূতিহীন দানব আয়নাঘর সৃষ্টির মাধ্যমে কলঙ্কিত করেছেন মানবিক বোধকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সামানে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছেন এবং এসব টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। ধ্বংস করেছেন রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তিনি ভারতে পালিয়ে গেলেও রেখে গেছেন তার অগণিত সমর্থক। ভারতে গিয়েও তিনি তার অপতৎপরতা বন্ধ করেননি। সেখান থেকেও তিনি দেশবিরোধী নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। আর তার সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবিরাম গুজব ছড়িয়ে দেশের মধ্যে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে, বসে নেই বাজার সিন্ডিকেটের অসাধু চক্র। তারা নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে মানুষের ক্ষোভকে উসকে দিচ্ছে। তদুপরি আছে আঞ্চলিক পরাশক্তির বৈরী আচরণ। অন্যদিকে, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো রাষ্ট্র সংস্কারের চেয়ে নির্বাচনের দিনক্ষণের প্রতিই আগ্রহ বেশি। যেন নির্বাচন ভিন্ন দেশে কোনো সংকট নেই। এমন জটিল পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র সংস্কার এবং নতুন সংবিধান তৈরির কাজটি এগিয়ে নেওয়া সত্যিকার অর্থেই একটি কঠিন কাজ।
লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক