বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নবনিযুক্ত মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের শিল্পকলা, জাতীয় সংস্কৃতি,সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রীতা ভৌমিক
কালবেলা: আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছু বলুন?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: বিচিত্র বিষয় উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে হাজার হাজার মানুষের হাজার চিন্তার প্রতিফলন এই শিল্পকলা করবে। সেখান থেকে উঠে আসবে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি।
কালবেলা: শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তন বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানের একটা ভূমিকা রয়েছে—এটা কতটা প্রযোজ্য বলে আপনি মনে করেন?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: ১৯৮৯-এর আইনে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, সরকারি অনুষ্ঠান শিল্পকলা একাডেমিতে করা যাবে। সেই আইন অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে অনুষ্ঠান করে থাকে। এটি বাদ দিয়ে নতুন আইন করতে হবে। এখানে কোনোরকম রাষ্ট্রীয়, দলীয়, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে না। এটি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জায়গা। দলীয়, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের কারণে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করা যাবে না। শিল্পকলা একাডেমি হলো শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মীদের জন্য। এখানে শিল্পীরা অগ্রাধিকার পাবে। সরকারি অনুষ্ঠান করার জন্য ওসমানী মিলনায়তন, চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র রয়েছে।
কালবেলা: শিল্পকলা একাডেমির যাত্রাশিল্প উন্নয়ন নীতিমালা অনুযায়ী, সারা দেশে ১৭৮টি নিবন্ধিত যাত্রাদল রয়েছে। একটি দলকে সাত দিনের মধ্যে অনুমতি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু অনুমতির ক্ষেত্রে আড়াই থেকে তিন মাস সময়ক্ষেপণ করা হয়। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সবরকম সেন্সরশিপ প্রথা বাতিলের পক্ষে আমি। নাটকে যেমন বাতিল হয়েছে, সেটা ধাত্রা ও চলচ্চিত্রেও হওয়া দরকার। এক কথায় কোনোটিতেই সেন্সরশিপ থাকা যাবে না। যাত্রায় মঞ্চের ভেতরে ও বাইরে যেন কোনোরকম অসামাজিক কাজ না হয়, এ বিষয়ে আমাদের কাজ করার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকতে হবে। জনগণ, প্রশাসন, যাত্রাদল সবাই মিলে যদি অশালীন কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে, তাহলে কেন যাত্রা করার অনুমতি দেওয়া হবে না? তবে এটি বাস্তবায়নে দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া হতে পারে। এ নীতিমালা দ্রুত কার্যকরের চেষ্টা করব।
কালবেলা: শিল্পকলাকে ঢেলে সাজাতে কয়েকটি পদক্ষেপের কথা আপনি বলেছেন? সেগুলো কী কী?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আইনের ফাঁক, সমাধানের রূপকল্প, কট্টরপন্থি বাধা, বৈশ্বিক সংযোগ বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক মুক্তি ইত্যাদি বিষয় রয়েছে। প্রথম কাজ হবে আইন সংশোধন করা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আইন ১৯৮৯-এর ধারা ২ থেকে ধারা ১৩-এর ৩ নম্বর উপধারা পর্যন্ত কোথাও বস্তুত এই একাডেমি বলতে রাষ্ট্র কী মনে করে এবং এর ভিশন (রূপকল্প) কী তা স্পষ্ট হয় না। এই আইনের ৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ‘একাডেমির সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন একটি পরিষদের ওপর ন্যস্ত থাকবে এবং পরিষদ সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কাজ করতে পারবে যা একাডেমি সম্পন্ন করতে পারে।’ কিন্তু সাধারণ পরিষদ গঠনের বিধিসংবলিত এনং ধারার ১৩টি উপধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, একাডেমি স্রেফ সরকারের আজ্ঞাবহ একটি দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত ও পর্যবসিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছ। অথচ ৩ নম্বর ধারার ২ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, ‘একাডেমি একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হবে।’ একাডেমির ক্ষমতা ও দায়িত্ব সংক্রান্ত ৭ নম্বর ধারায় বর্ণিত ১৫টি উপধারার অস্পষ্টতা, সীমাবদ্ধতা ও অপপ্রয়োগ বিগত সব শাসনামলেই লক্ষ করা গেছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিকে স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক একাডেমিতে পরিণত করতে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার করতে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে, শিল্পকলা একাডেমিকে একটি কার্যকর ও বহুত্ববোধক সংস্কৃতি চর্চার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে। নইলে, একাডেমি তার পথ হারাবে।
কালবেলা: ঢাকা শহরে মাত্র ৩০টি বড় নাটকের দল হল পায়। ছোট ছোট নাটকের দলগুলো সেভাবে হল ভাড়া পায় না। এ ব্যাপারে যদি কিছু বলেন?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: নাটকের মঞ্চগুলোতে মানসম্মত নাটক করতে হবে। হল বরাদ্দের ক্ষেত্রে নীতিমালার আওতায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বড় দল, ছোট দল বলে কোনো কিছু নেই। সব দলের এখানে অভিনয় করার অধিকার রয়েছে, মানসম্মত নাটক নিয়ে। দলেরও দায়িত্ব রয়েছে। এমন মানের অভিনয় করা যাতে দর্শক আসতে বাধ্য হয়। অনেক দলের নাটক রয়েছে যেখানে দর্শক উপচে পড়ে। এজন্য স্বচ্ছ, সুশৃঙ্খল একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নিশ্চিত করব। একই বিষয় নৃত্যকলা, সংগীত, চারুকলা, নাট্যকলা ও চলচ্চিত্রসহ সফল বিভাগের জন্য প্রযোজ্য।
কালবেলা: ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় নাটক মঞ্চায়ন করার জন্য মিলনায়তন থাকলেও তা ব্যবহার উপযোগী নয়। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে দর্শকরা প্রস্রাবের গন্ধে যেতে পারেন না। যেখানে অনৈতিক কাজও হয় বলে জানা যায়। এ জায়গাটা কেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, রক্ষণাবেক্ষণ করে ব্যবহার করা হয় না? পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার কেবি রোডে জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র কেন ব্যবহার করতে পারি না? এটি কাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে? শিল্পকলা একাডেমির বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই এ কাজগুলোতে হাত দেব।
কালবেলা: বোরকা, ওয়াজ মাহফিল ইস্যুতে আপনার একটি বক্তব্য নিয়ে আপনাকে ইসলামবিদ্বেষী আখ্যায়িত করা হচ্ছে? এ ক্ষেত্রে আপনার বক্তব্য কী?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: আমি যা বলেছি, পুরো ভিডিওতে রয়েছে। সেজন্য পুরো ভিডিওটা দেখতে হবে। আমি যখন কথা বলেছি, তখন মহাপরিচালক ছিলাম না। সেখানে আমি আমার ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেছি। প্রশ্ন উত্থাপন করেছি এবং আমি জানতে চেয়েছি। আমাদের অনেকের অনেক রকম মত থাকে। প্রতিটি মানুষের ভাবনার বৈচিত্র্য রয়েছে। মতের ভিন্নতা রয়েছে। আমাকে একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল, আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমি যা দেখতে চাই— সবার মত প্রকাশের অধিকার থাকবে। সব ধর্মাবলম্বীর কথা বলার অধিকার থাকবে। সবাই মিলে সব ধরনের মত প্রকাশ করব এখানে। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা অব্যাহত থাকবে। কথা বলার স্বাধীনতা নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের থাকবে, আমারও থাকবে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার হারাবার কিছু ভয় নেই। আমি মনে করি, রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক হতে হলে শতবৈচিত্র্যের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। শিল্পকলার চর্চা অর্থাৎ সাংস্কৃতিক অনুশীলন আমাদের গণতন্ত্রের সেই পথ দেখাতে খুব সাহায্য করতে পারে।
কালবেলা: দীর্ঘ একটি সময় চারুকলা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ—এ তিনটি বিভাগে অনেক দুর্বলতা ছিল। এ ক্ষেত্রে আপনার পরিকল্পনা কী?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: শিল্পকলা একাডেমি হলো একাডেমিক জায়গা। এখানে নাটকের ক্ষেত্রে আমরা ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল করার পরিকল্পনা করতে পারি। আধুনিক যে ধারা রয়েছে সেগুলো কিংবা বিপ্লব কী তা নিয়ে। আমরা আমাদের বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে বিপ্লব থিম নিয়ে সারা পৃথিবীতে প্রক্রিয়াগত, মানগতভাবে নাটক বেছে নিতে পারি। চারুশিল্পের ক্ষেত্রে দেশজ ধারার নতুন অনুসন্ধান এবং সমকালীন বৈশ্বিক চর্চিত বিভিন্ন গতিপ্রকৃতির সঙ্গে নিজেদের বাস্তবতা, আকাঙ্ক্ষা ও কল্পনার মিশেলে নতুন নতুন কাজের দিকে আমাদের মনোনিবেশ প্রয়োজন। তরুণ শিল্পীদের পাশাপাশি আমাদের মাস্টার আর্টিস্টদের কাজগুলো পুনরায় প্রদর্শন ও ফিরে দেখতে হবে। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ভবিষ্যৎমুখী করতেই তা প্রয়োজন।
গবেষণার ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, এখানে যে পত্রিকাগুলো প্রকাশ হয়েছে তার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। এটি সঠিকভাবে ‘পিয়ার’ রিভিউ করা পত্রিকা নয়। অর্থাৎ দুজন সমকক্ষ রিভিউয়ারের কাছে গবেষণা পত্রটি পাঠানো প্রয়োজন ছিল। তারা লেখা পড়ে মানদণ্ড যাচাই করতেন। সম্পাদক তার মতামত দিতেন। প্রয়োজনে পরিবর্তন, পরিবর্ধন করে তা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারত। ফুটনোট ও গ্রন্থপঞ্জি থাকলেই তা গবেষণাপত্র হয় না। বাংলাদেশের শিল্পের নতুন নতুন গবেষণামূলক পুস্তক ও অন্যান্য মাধ্যমের প্রসার ঘাটাতে হবে। ফেলোশিপ দিয়ে হলেও নতুন নতুন গবেষণার কাজে প্রণোদনা জোগাতে হবে। আমাদের রাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয় নির্মাণের জন্যই তা করতে হবে।
কালবেলা: নিয়মিত নাট্যকর্মীদের সম্মানীর জায়গাটা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার ব্যাপারে যদি কিছু বলেন?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: একজন নাট্যকর্মীকে কত হাজার টাকা দিলে তিনি অন্য কোনো কাজ না করে ফুলটাইম নাটক করবেন। মাসে ২০, ৩০ হাজার টাকা। তিনি যদি বিবাহিত হন, তাহলে ৫০ হাজার টাকা তার লাগবে। ৫০ হাজার টাকা কতজনকে সম্মানী দেওয়া যাবে। এজন্য উভয়পক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সত্তর-আশির দশকে আমরা টাকার জন্য নাটক করিনি। অবসর সময়ে আমরা নাটক করেছি। এখনকার সময়ে এটি সম্ভব নয়। কারণ নিওলিবারেল ও বিশ্বায়নের যুগে প্রতিটি সময় এখন গুরুত্বপূর্ণ। নাট্যকর্মীরও শ্রেণিভেদ রয়েছে। এ বিষয়গুলো চিন্তাভাবনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ তাদেরও তৈরি হয়ে কাজ করতে হবে। যেমন অভিনয়ের ক্ষেত্রে চরিত্রায়ন পরিষ্কার দেখা ও উচ্চারণ পরিষ্কারভাবে শোনা যাবে। একজন শিল্পীকে নিজেকে সেভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
কালবেলা: বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির বাজেট ১০০ কোটি টাকা। ৬৭ কোটি টাকা উন্নয়নের জন্য ধরা হয়েছে। বাকিটা বেতন-ভাতার জন্য। এ ব্যাপারে যদি কিছু বলেন?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: ৬৭ কোটি টাকার মধ্যে কত টাকা যাবে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে, প্রতিটি বিভাগ কত পাবে? জেলা পর্যায়ে কাজ করতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে। সবাইকে আমার সঙ্গে থাকতে হবে। সবাইকে দাবি করতে হবে শিল্পকলা একাডেমির উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। প্রশিক্ষণে বরাদ্দ অনেক বাড়ানো প্রয়োজন। এজন্য অবশ্যই জবাবদিহি থাকতে হবে। শিল্পকলার ওয়েবসাইটে এর হিসাব পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা হবে।
কালবেলা: আপনি বলছেন, শিল্পকলা একাডেমিতে কোথায় কোন খরচ করা হচ্ছে, তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবেন। এ ব্যাপারে যদি কিছু বলেন...
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: জেলা পর্যায়ে কোন খাতে কত খরচ হয়েছে, তার সব হিসাব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এটা জনগণের টাকা। তাদের আমানত। ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কোনো বিভাগই এটা ইচ্ছেমতো খরচ করতে পারবে না। এ জায়গাও তৈরি করতে হবে, সব জবাবদিহি এবং দায়বদ্ধতা থাকবে জনগণের কাছে। এ বিষয়ে আমরা শিল্পকলা একাডেমির সব কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি। আমরা একসঙ্গে সব কর্মকাণ্ড সচল করব। এখানে সবার কথা বলার অধিকার রয়েছে।
কালবেলা: শিল্পকলা একাডেমির জেলা পর্যায়ের কালচারাল অফিসাররা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। মঞ্চ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: অনেক জায়গায় আক্রান্ত হয়েছে। ভাঙচুর হয়েছে। মঞ্চ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি যত শিগগির সম্ভব বিভাগীয় পর্যায়ে পরিদর্শন করব। প্রত্যেক জেলার কালচারাল অফিসারের সঙ্গে বিভাগীয় পর্যায়ে কথা বলব। একসঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করব। আমার একক ব্যক্তিগত চিন্তার প্রসার এখানে ঘটবে না। মানুষ যেন শিল্পবান্ধব হয়। জনগণ, পুলিশ, সাংবাদিক সবাইকে নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই।
কালবেলা: জেলা ও জেলার বাইরে থেকে যারা আসেন, ডরমিটরির অভাব অনুভব করেন। এটা নিয়ে কিছু ভাবছেন?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: ডরমেটরির কথাটা আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। যারা বাইরে থেকে আসেন তারা মানবেতর দিনযাপন করেন। সারা দিন রিহার্সেল করে রাতে ঘরে ফ্লোরে একসঙ্গে অনেক শিল্পীকে রাতযাপন করতে হয়। এটি দ্রুত তৈরি করার উদ্যোগ নেব। এর সঙ্গে একটা কারপেন্ট্রি ওয়ার্কশপ ও নাটকের সেট রাখার জন্য স্টোরের ব্যবস্থা করব।
কালবেলা: শিল্পকলা একাডেমিতে বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিকারে কী ভাবছেন?
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: এ ব্যাপারে দ্রুত কাজ হচ্ছে। অতীতের অনিয়ম বন্ধ হবে। দুর্নীতির বিচার হবে। এখানকার প্রশাসন হবে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক।
কালবেলা: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ: আপনাকেও ধন্যবাদ।