নিতুন কুন্ডু বাঙালি চিত্রশিল্পী, নকশাবিদ, ভাস্কর, শিল্পপতি। তার জন্ম ১৯৩৫ সালের ৩ ডিসেম্বর, দিনাজপুরে। নিতুন কুন্ডু সিনেমার ব্যানার এঁকে নিজের আয়ে শিক্ষা অর্জন করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। নিতুন কুন্ডু ঢাকাস্থ মার্কিন তথ্যকেন্দ্রে যোগ দিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের অধীনে তথ্য ও প্রচার বিভাগে ডিজাইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর চাকরি না করে নিতুন কুন্ডু স্বাধীনভাবে সৃজনশীল কর্মে নিজেকে নিয়োজিত করেন। সে লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালে গড়ে তোলেন ‘অটবি’ নামে এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা বর্তমানে বাংলাদেশের একটি বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত। এ প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালির রুচিবোধ উন্নত করার চেষ্টা করেন। জীবদ্দশায় দেশে একাধিকবার তার চিত্রকর্মের একক প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিদেশেও বহু উল্লেখযোগ্য যৌথ প্রদর্শনীতে তিনি অংশ নেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী নিতুন কুন্ডু তেলরং, জলরং, অ্যাক্রিলিক, এচিং, সেরিগ্রাফ, পেনসিল বা কালিকলম মাধ্যমে চিত্র রচনা করেন। প্রথম দিকে অবয়বধর্মী কাজ করলেও পরে তিনি ঝুঁকেছেন বিমূর্ত ছবির দিকে। এ ছাড়া তিনি নির্মাণ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মারক ‘সাবাস বাংলাদেশ’ এবং চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ঐতিহ্যবাহী নৌকার প্রতীক ‘সাম্পান’সহ তৈরি অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর এবং ছিলেন নকশাকারও। অসম্ভব মেধাবী এই শিল্পীর জীবনাবসান ঘটে ২০০৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর।