শারমীন এস মুরশিদ
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ এএম
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিশেষ সাক্ষাৎকার

ভেঙে পড়া কাঠামো সংস্কার করতে চাই

ভেঙে পড়া কাঠামো সংস্কার করতে চাই

শারমীন এস মুরশিদ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বেসরকারি সংস্থা এবং স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক গ্রুপ ‘ব্রতী’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে সবসময় সরব ছিলেন। সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ‘উত্তরসূরী’র মহাসচিবের দায়িত্বও পালন করছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ ‘মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা’র সদস্য ছিলেন তিনি। সাংস্কৃতিক দলটি শরণার্থী শিবিরসহ বিভিন্ন মুক্তাঞ্চলে যেত। দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন মাধ্যমে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত ও যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের চেতনাকে উজ্জীবিত করত। এ ছাড়া পাপেট শো, মঞ্চ নাটকের আয়োজনও করত। পরে ১৯৯৫ সালে এই সাংস্কৃতিক দলটির কাজের ওপর ‘মুক্তির গান’ নামের একটি বিখ্যাত তথ্যচিত্র তৈরি হয়। ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থান, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম, নিহত-আহতদের জন্য সরকারের করণীয়সহ নানা বিষয় নিয়ে সম্প্রতি কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

কালবেলা: আপনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনার অনুভূতি জানতে চাই?

শারমীন এস মুরশিদ: এটা আমার জন্য খুবই আকস্মিক ছিল। আমি জানতাম না, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আমার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। এটা অবশ্যই আমার জন্য অনেক বড় সম্মানের। ড. মুহাম্মদ ইউনুস-এর মতো একজন ব্যক্তিকে মাথার উপরে পাচ্ছি—এই সৌভাগ্যটা আমার হবে তা আগে ভাবিনি। আমার কাছে উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব আসার পর আমি নির্বাক এবং অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। আমি মনে করি, এই সময়টি বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আর এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বটি অত্যন্ত বিশাল।

একটি গণ বিপ্লবের পর দেশ যুগান্তকারী পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেই পরিবর্তনকে এগিয়ে নেওয়ার এবং বাংলাদেশের একটি নতুন শুরুর সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ পাওয়া আমাকে অভিভূত করেছে। আমার মনে হচ্ছে আমি একটি রোলার কোস্টারের মধ্যে পড়ে গেছি। আমার সংশয় লাগছে আমি কি পারবো এ দায়িত্ব পালন করতে! তারপর মনে হচ্ছে, আমি পারবো এবং আমাকে পারতেই হবে। সবকিছু মিলে নিজের মধ্যে একটি প্রত্যয় কাজ করছে।

আমাদেরকে অনুপ্রেরণা দেওয়া এবং সাহস যোগানোর মানুষ প্রফেসর ইউনূস। তার সংস্পর্শে এলে পারি না বলে আর কোনো শব্দ থাকে না। সকল সমস্যা, সকল জটিলতায় ও কঠিন অবস্থার মধ্যে তিনি শুধু একটি কথাই বলেন, এটি কোনো সমস্যা নয়, বরং এটি একটি চ্যালেঞ্জ। যে কারো জন্য এই বার্তাটি একটি ম্যাজিক এর মত কাজ করে। নানা পেশার কিছু মানুষ আমরা দেশ গঠনের জন্য এই মানুষটির সঙ্গে একত্র হয়েছি। আমাদের সকলের একটাই লক্ষ্য, এবার ক্ষয়ে যাওয়া এই দেশটাকে আমরা নতুন করে তৈরি করব।

কালবেলা: ছাত্র-জনতার আন্দোলন সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?

শারমীন এস মুরশিদ: এই আন্দোলন আমাকে অবাক করেনি। যুগে যুগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এ দেশে বড় বড় আন্দোলনের জন্ম হয়েছে। এবারও তেমনি ছাত্র-ছাত্রীদের হাত ধরেই আন্দোলনের জন্ম হয়েছে এবং সেটা ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। একটা পর্যায়ে রাজনীতিকরাসহ দেশের জনসাধারণ এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন মহীরূপ নেবে, সেটা বোঝা কঠিন ছিল। তবে আমি নিশ্চিত ছিলাম, সরকার যেভাবে চরম অন্যায়ের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিল, যেভাবে বৈষম্যের অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিল, যেভাবে দুর্নীতি ও মিথ্যাচারের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিল তার থেকে মুক্তির একটা পথ সামনে আসবেই। আর মুক্তির সেই পথটি হল মিথ্যার উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকা এই সমাজের কাঠামো ভেঙে পড়া এবং নতুন করে শুরু করা।

বারবার মনে হয়েছে, আর নয়, এটাই শেষ। এই মিথ্যার ভিত্তি এবার ভাঙতে হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম সেটা করে দেখিয়েছে। মিথ্যার খোলস ভেঙে তারা একটি সফল গণঅভ্যুত্থান করে দেখিয়েছে। ছাত্রদের ছোট একটি আন্দোলন এমনভাবে সমাজের মিথ্যার কাঠামো বন্যার মতো ভেঙে পড়বে তা হয়তো শাসকরা কল্পনাও করতে পারেনি।

ছাত্ররা প্রথম কোটা সংস্কারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল। তারা শুধুমাত্র তাদের অধিকার চেয়েছিল। শিক্ষার্থীদের সেই নিরীহ আন্দোলন দমনের জন্য তাদের ওপর জঘন্য ও উগ্র জঙ্গি আক্রমণ চালিয়েছে শাসকগোষ্ঠী। সেই মুহূর্ত থেকে পুরো আন্দোলনের রূপটি পাল্টে গেল। আমরা যারা এর বাহিরে ছিলাম, আমরা বারবার ভেবেছি এই ছোট বিষয়টাকে এত বড় করা হচ্ছে কেন। কিন্তু দমন নীতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়া শাসক গোষ্ঠী বুঝতেই পারেনি তারা কি করছে। অধিকার চাওয়ার অপরাধে তারা নিরীহ ছাত্রদের ওপর তাদের পেটোয়া বাহিনী এবং পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে। শত শত শিক্ষার্থীকে তারা হত্যা করেছে।

১৯৫২ সালে আন্দোলন হয়। সেদিনও ছাত্ররা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিল। সরকারি বাহিনীর গুলিতে অনেকে মারা যায়। আমরা আমাদের ভাষার অধিকার পেয়েছি এবং আজও আমরা তাদেরকে মাতৃভাষা দিবসে স্মরণ করি। ১৯৬৯ সালের আন্দোলনেও ছাত্র-ছাত্রীরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। আইয়ুব খানকে হটিয়েছিল তারা। এরপর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা ছিল অগ্রগামী। রাজনীতিকরা সেই আন্দোলনের ঘোড়ার উপরে চড়ে ক্ষমতায় এসে বসেছিলেন। ছাত্র-ছাত্রীদের শক্তি ছাড়া তারা কখনোই বিজয়ী হতো না। এ দেশে অনেক বড় আন্দোলন হয়েছে। তবে ছাত্ররা কখনোই কোনো আন্দোলনে সেভাবে নেতৃত্ব দেয়নি। তবে ২০২৪ সালে এসে সেই ছাত্ররাই আবার ইতিহাস তৈরি করেছে। ছাত্রদের বৈষম্য বিরোধী এই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশটা যেন নতুন করে আবার জন্ম নিল।

কালবেলা: আন্দোলনের পেছন কী কী কারণ ছিল?

শারমীন এস মুরশিদ: গত ৫২-৫৩ বছরে প্রতিনিয়ত আমরা রাজনীতিকদের অন্যায় আচরণের কারণে কষ্ট ভোগ করেছি। তাদের অব্যবস্থাপনা, তাদের স্বার্থপরতা, তাদের লোভ-দুর্নীতি এবং গণতন্ত্রের প্রতি অনীহা এদেশের সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। তারা সব সময় অভিনয় করে গেছেন কিন্তু মানুষের জন্য কিছুই করেননি। আমার নিজের পর্যবেক্ষণ হলো, রাজনৈতিক দলগুলো মূলত ক্ষমতালিপ্সু এবং স্বার্থপর। এসব দলের নেতারা তাদের দলকেও দেখতে শেখেনি। দল নষ্ট হয়ে গেল, দলের কর্মী ছেলেগুলো পচে গেল, তাদের মধ্যে কোনো নৈতিকতা তৈরি হয়নি, কোনো শৃঙ্খলা নেই। অথচ তারাই নাকি এ যুগের ছাত্র রাজনীতি করছে। ছাত্র রাজনীতির আদর্শ নষ্ট করে ফেলেছে তারা। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ছাত্র শাখাকে একদল সন্ত্রাসীতে রূপান্তর করেছে। এই কথাগুলো বলতেও আমাদের দশ বার ঢোক গিলতে হয়েছে। কারণ আওয়ামী শাসনের সময় জনগণের কন্ঠ রোধ করা হয়েছে।

আমাদের বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির চিত্র একই রকম। বিএনপি'র স্বাদ আমাদের মিটে ছিল আগেই। এবার আওয়ামী লীগের স্বাদও মিটে গেছে। এই দলগুলো নিজেরাই তাদের দলকে সমীহ করেনি, শ্রদ্ধা করেনি, দলকে গড়ে তোলার দিকে মনোযোগ দেয়নি। একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা নিজেদেরকে তৈরি করেনি। এই দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি দিয়ে ছেয়ে ফেলেছে তারা। এই দেশের সাধারণ মানুষকে নিঃস্ব করে ফেলেছে। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধিসহ নানাভাবে তারা দেশের মানুষকে চুষে খেয়েছে।

আওয়ামী লীগ দেশের ব্যাংকগুলোকে লুট করেছে, বিচার ব্যবস্থায় দলীয় লোক বসিয়ে নষ্ট করেছে। সমাজটাকে চারদিক থেকে একটি দুষ্টু চক্রের মধ্যে আটকে দিয়েছে। আমি বিচার চাইতে গেলে বিচার পাব না, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কাজ করতে গেলে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে হবে এবং ডাকাতগুলো বুক ফুলিয়ে দেশকে শাসন করে যাবে।

আমরা বলি, ব্যক্তির থেকে দল বড়, দলের থেকে দেশ বড় এবং দেশের থেকে মানুষ বড়। অথচ আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর লক্ষ্য ব্যক্তি পুজা। তাদের চিন্তা-চেতনা সবকিছু ব্যক্তি কেন্দ্রিক এবং তাদের কাছে ব্যক্তিই বড়।

কালবেলা: শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলনটি এখন দেশ সংস্কারের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। দেশ সংস্কার সম্পর্কে আপনার মত কী?

শারমীন এস মুরশিদ: গত ১৬ বছরে যে অপশাসন দেখেছি তা থেকে মুক্তির পথ তৈরি করেছে আমাদের তরুণরা। শেখ হাসিনা একটার পর একটা নির্বাচন জালিয়াতি করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেছেন। এই সময়ে দেশে লুটপাট, অব্যবস্থাপনা ও অনৈতিকতা চরমসীমায় পৌঁছেছে। অন্তত দেশে যদি গণতন্ত্র টা বহাল থাকতো তাহলে এই পরিস্থিতির তৈরি হতো না। তাদের প্রতিটা নিয়ত মিথ্যা ছিল। তাদের প্রতিটা মুহূর্ত মিথ্যা ছিল।

আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে করেই হোক তারা ক্ষমতায় থাকবে। এর জন্য যত অন্যায় করার প্রয়োজন হোক না কেন তা তারা করবে। তাদের এই ক্ষমতা লোভী মানসিকতার কারণে দেশ আজ এই অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। আমাদের সন্তানেরা, এই তরুণরা অনেকদিন ধরে তাদের কোনো ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছিল না। লেখাপড়া শেষ করেও তারা যে একটি চাকরি পাবে সেই সুযোগটাও যেন ক্রমশ ক্ষীন হয়ে যাচ্ছিল। তরুণদের কাছে একদিকে মনে হচ্ছিল তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে চলে যাচ্ছে। আরেক দিকে সরকার একটির পর একটি কোটা তৈরি করে গেছে। সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বহাল করা হয়েছে। আমাদের তরুণরা চিন্তা করলো, এতো উচ্চ কোটার হারের মধ্যে পড়াশোনা করেও চাকরি পাবে না। অবশ্যই তরুণরা সঠিক ছিল।

আমরা সকল অভিভাবকরাও সন্তানদের এই আবেগকে সাপোর্ট করেছি। সরকার আমাদের সন্তানদের ন্যায্য দাবিকে নষ্ট করার জন্য একের পর এক নাটক সাজিয়েছে। হাইকোর্টের নাটক সাজিয়েছে। সবশেষে ছাত্রদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে কোটা কমিয়ে দিতে বাধ্য হয় সরকার। আমার প্রশ্ন, শুরুতে কেন তাদের সঙ্গে বসা হলো না? আমাদের সন্তানদের ওপর কেন গুলি চালানো হলো? সন্তানদের হত্যা করা হলো? ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা না করাই ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের সব থেকে বড় ভুল। এই শিক্ষার্থীদের প্রতি আওয়ামী লীগের কোনো সংবেদনশীলতা আমি দেখিনি। ২০১৮ সালের আন্দোলনের সময়ও আমরা দেখেছিলাম এদেশের শিক্ষার্থীদের প্রতি সরকারের কোনো মায়া-মমতা নেই। কোনো দায়বদ্ধতা নেই। আওয়ামী লীগের এই হিংস্রতা কোথা থেকে আসে আমি বুঝি না। আওয়ামী লীগ যেদিন শিক্ষার্থীদের ওপর সহিংসতা চালিয়েছে সেদিনই তারা বুঝিয়ে দিয়েছে এই দল আর যাই হোক শিক্ষার্থীবান্ধব বা তরুণবান্ধব দল নয়। বরং তারা অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং হিংস্র।

কালবেলা: শিক্ষার্থীরা একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। ছাত্র-জনতা রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি তুলছে। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজটি কীভাবে করবেন বলে ভাবছেন?

শারমীন এস মুরশিদ: বাচ্চাদের এই আন্দোলনে দেশের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ জনগণ সমর্থন দিয়েছে। আমরা দেখেছি মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ক্ষুদ্র কিছু রাজনৈতিক স্বার্থভোগী গোষ্ঠী ছাড়া আর কেউ এই আন্দোলনের বিপক্ষে ছিল না। এই আন্দোলন ছিল অত্যন্ত নির্দলীয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৫২ এবং ১৯৭১ এর পর এটাই একমাত্র নির্দলীয় আন্দোলন। এর আগে বাংলাদেশে কয়েকবার ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে, এরপর আওয়ামী লীগ এসেছে, আবার বিএনপি এসেছে। এটা একটি গণতান্ত্রিক যাত্রা ছিল। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে যখন সংবিধান থেকে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করলো সেদিনই দেশের গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে। দেশের চলমান বহুদলীয় রাজনীতির ধারা শেষ হয়ে গেল এবং অসহিষ্ণু উগ্র রাজনীতির ধারা চালু হলো। তখনই আমরা বুঝতে পারলাম শেখ হাসিনা এদেশের জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। শেখ হাসিনার সেই বিশ্বাসঘাতকতা এমন চরম পর্যায়ে গেল যে ২০২৪-সালে এসে তার বিস্ফোরণ দেখলাম। ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেল।

তরুণ প্রজন্মের এই আন্দোলনকে আমি একটা মহাকাব্য বলব। এর মধ্যে যেমন রয়েছে নিষ্ঠুরতা, তীব্র বেদনা, তেমনি অনেক কঠিন অভিজ্ঞতা। এই আন্দোলনের মধ্য থেকে অসাধারণ কিছু জিনিস বের হয়ে এসেছে। আমরা দেখেছি সন্তানরা কিভাবে একজন অন্যজনের পাশে দাঁড়িয়েছে। কীভাবে একজন অন্যজনকে রক্ষা করেছে। কীভাবে একজন আরেকজনের জন্য জীবন দিয়েছে। তাদের সাহস ও দূরত্বের হাজারটা উপমা দেখেছি আমরা। আমরা গত ৫৩ বছরে সবকিছু চুপ করে সহ্য করতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সন্তানরা সবকিছু ভেঙে দিয়ে এই দেশটাকে যেন দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন করেছে। আমরা যেন আরেকটা নতুন জীবন পেলাম।

এখন আসা যাক আমরা কীভাবে সামনে এলাম। যারা আন্দোলন করেছে অর্থাৎ এই তরুন প্রজন্ম, তারা চেয়েছে এই সমাজের ভেঙে পড়া কাঠামো নতুন করে গড়ে উঠুক। এই দেশটা নতুন করে তৈরি হোক। আর তারাই আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছে তাদের এই চাওয়াগুলো পূরণ করার জন্য। আমাদের এখানে আসাটাও এই আন্দোলনেরই ফসল। আমরা প্রথমে কিছু সংস্কার কাজ করতে চাই। এই দেশের ভেঙে পড়া কাঠামোগুলোকে নতুন করে তৈরি করতে চাই। তারপর একটা নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্রের গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসতে চাই। কিন্তু আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমরা এমন দায়িত্ব হাতে নিয়েছি যা কোনো যাদু বলে করে ফেলা সম্ভব নয়। দেশের আইন-শৃঙ্খলা, অর্থনীতি, বিচার বিভাগ, প্রশাসন সকল কাঠামোকে ঠিক করতে হবে। এটা অত্যন্ত কঠিন একটা দায়িত্ব। নতুন করে তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন। তরুণরা যে দায়িত্ব আমাদেরকে দিয়েছে তা আমাদের পূর্ণ করতেই হবে।

তরুণরা একটি সফল বিপ্লব সম্পন্ন করতে পেরেছে। এর জন্য তাদেরকে অনেক রক্ত দিতে হয়েছে, ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তারা প্রফেসর ইউনূসের কাছে আবেদন করেছে তিনি যেন এসে দেশের দায়িত্ব নেন। প্রফেসর ইউনুস বলেছেন, তোমরা দেশের জন্য এত কিছু করেছ আর আমি বসে থাকতে পারি না। তিনি দায়িত্ব নিতে রাজি হলেন। আর তখন আমরা এই দেশটার হাল ধরার জন্য নিষ্কলুষ একজন সৎ মানুষ পেলাম। তিনি অত্যন্ত সৃজনশীল একজন মানুষ।

একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলো। এই সরকারের একটাই লক্ষ্য, আমাদের দেশে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে এবং অরাজকতা বন্ধ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে এবং যেটুকু পুনর্নির্মাণ না করলে এই সমাজ আবার ধ্বসে পড়বে সেই পুনর্নির্মাণ করে দিতে হবে। এরপরে আমরা একটি নির্বাচনের দিকে যেতে পারবো।

অনেকে আমাদেরকে প্রশ্ন করে হয়রান করে দিচ্ছেন আমরা কত দিন ক্ষমতায় থাকছি? তাদের উদ্দেশ্যে আমি একটি কথা বলতে চাই। যারা বারবার এই কথা বলছে তারা বিভিন্ন দলের নেতা অর্থাৎ রাজনীতিক। তারা অত্যন্ত স্বার্থপর। গত ৫৩ বছরে তারা কি করেছে তা আমরা দেখেছি। অথচ এখন তারা আমাদেরকে অগণতান্ত্রিক বলতে দ্বিধা করে না। অথচ এসব না করে তাদের উচিত ছিল আমরা যে কাজটি করছি তার অংশীদার হওয়া। আমরা ভেঙ্গে পড়ার কাঠামো সংস্কারে নেমেছি। তাদের উচিত এতে সমর্থন দেওয়া। তারা এসব প্রশ্ন তুলে একটি সুন্দর ধারাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। তারা চাইছে আমরা যাতে এই সংস্কারগুলো করতে না পারি।

কালবেলা: রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য আপনারা কোনো অগ্রাধিকার তালিকা করেছেন কী?

শারমীন এস মুরশিদ: এখনো তেমন কোনো তালিকা তৈরি হয়নি। তবে আমাদের প্রথম কাজ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা এবং সাথে সাথে দেশের অর্থনীতি ঠিক করার চেষ্টা করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে মন্ত্রণালয়গুলো বরাদ্দ করা হয়েছে। আমরা বৃহৎ কিছু পলিসির মধ্যে থেকে সকলে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রত্যেকে যার যার মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করব।

আমরা ইতিমধ্যে দেশের বিচার ব্যবস্থায় একটি ভালো পরিবর্তন আনতে পেরেছি। সর্বোচ্চ আদালতের চেয়ারগুলোতে আসীন থাকা দলীয় মানুষগুলোকে সরিয়ে এমন কিছু মানুষকে নিয়ে আসতে পেরেছি যাদেরকে মানুষ সম্মান করে, যাদের উপর মানুষ আস্থা রাখে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার কাজও চলছে।

যে গণহত্যা চালানো হয়েছে, যে নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করা হয়েছে এর সঙ্গে দায়ী প্রত্যেককে আমরা বিচারের আওতায় আনব। আমি নিজেও এই গণহত্যার সাক্ষী। আন্দোলনের সময়ে আমার এলাকায় আমি ঘুরে ঘুরে দেখেছি। আমি মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি এবং পুলিশের কর্মকাণ্ড দেখেছি। একটি জায়গায় এক ঘণ্টার মধ্যে ৮০ জন মানুষকে তারা মেরে ফেলেছে। আমি এসব ঘটনা যাচাই করেছি।

আমরা নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির চেষ্টা করছি। এ জন্য আমরা হাসপাতালগুলোর শরণাপন্ন হচ্ছি এবং বিভিন্ন মাধ্যমে নিহতদের সম্পর্কে তথ্য ও যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আমি আহবান করছি, যে যেখানে রয়েছেন নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরিতে আমাদেরকে সহযোগিতা করুন। দেশের গণমাধ্যমগুলোর প্রতিও আমি একই আহ্বান রাখছি। গণমাধ্যম কর্মীরা যে সকল ভেরিফায়েড তথ্য পাবেন প্লিজ আমাদের কাছে তা পৌঁছে দেবেন। আমরা নীতিগতভাবে নিহত ও আহতদের তালিকা সম্পন্ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। হত্যাকারীদের বিচার, নিহতদের পরিবারগুলোকে সহযোগিতা, আহতদেরকে ভালো চিকিৎসা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা— এসবই আমাদের দায়িত্ব।

কালবেলা: আপনাদের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা অনেক। রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামো সংস্কার প্রয়োজন। এ বিষয়ে আপনারা কতটুকু করতে পারবেন বলে ভাবছেন?

শারমীন এস মুরশিদ: আমাদের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। এটা অবশ্যই এটি বড় চাপ কিন্তু আমরা তা মেনে নিচ্ছি। আমরা কাজ করে যাবো। মানুষের চাপ আমাদের চ্যালেঞ্জ নিতে সাহস যোগাবে। আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই। আমাদের রাষ্ট্রসংস্কারের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ক্লাসরুমের বাইরে রয়েছে। আমরা তাদের দ্রুত ক্লাসরুমে ফেরত নিতে চাই। আপনারা দেখছেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টরসহ প্রশাসনিক অনেকে পদত্যাগ করছেন। এই জায়গাগুলোয় অতি দ্রুত পূরণ করার চেষ্টা করছি। আমাদের সন্তানরা এখনো রাজপথে রয়েছে। যেখানে যখন প্রয়োজন হচ্ছে তারা সেখানেই হাজির হচ্ছে। তারা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। এই সবকিছু আমাদের জন্য পজিটিভ। শিক্ষার্থীদের সুযোগ দেওয়া উচিত। আমরা তাদের পছন্দের ক্ষেত্রগুলোতে প্রশিক্ষণ দিয়ে রাষ্ট্রের কাজে লাগাতে পারি। আমি ব্যক্তিগতভাবে দেখতে চাই, পুলিশের পাশাপাশি তারা অর্থাৎ কমিউনিটি এবং পুলিশ একসঙ্গে মিলে মিশে সমাজের কাজ করছে। এতে পুলিশের মধ্যেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

কালবেলা: আপনি সমাজ-কল্যাণ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনার সামনে লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যগুলো কী?

শারমীন এস মুরশিদ: সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় একটি ওয়েলফেয়ার স্টেট তৈরি করার কাজ শুরু করবে। আমার ইচ্ছে, ২০২৪ সালের মুক্তিযুদ্ধের এক লক্ষ যোদ্ধাকে আমরা রাষ্ট্রের মূল ধারার মধ্যে নিয়ে আসবো। তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে, তাদের স্কিল ডেভেলপ করে দায়িত্ব পালনে উপযোগী করে গড়ে তুলতে চাই। তারা আমাদের সহযোগী হিসেবে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে দায়িত্ব পালন করবে।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রায় এক লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা সরাসরি যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেছিলেন। স্বাধীনতার পর এই এক লক্ষ মুক্তিযোদ্ধাকে কোনো ধরনের পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয়নি। তাদেরকে খালি পায়ে খালি হাতে গ্রামে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। আর এর মাসুল আমরা আজীবন দিয়ে যাচ্ছি। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের লিস্ট তৈরি করা হয়। এক লক্ষ মুক্তিযুদ্ধের জায়গায় লিস্টে দেখা যায় তিন লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার থেকে বেশি পরিমাণ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ঢোকানো হয়েছে এই তালিকায়। এভাবে দেশের সম্পদ লুট করা হয়েছে। আমরা অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে বঞ্চিত হতে দেখেছি। দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের কষ্ট করে জীবন যাপন দেখেছি। যিনি রিক্সা চালাতেন তাকে আজও রিকশা চালাতেই দেখেছি। অথচ এই বিপুল পরিমাণ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদেরকে কত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এটা ছিল আমাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কলঙ্ক। চরম অন্যায় করা হয়েছে। যারা মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে লড়াই করে আজও বঞ্চিত এবং পেটের দায়ে রিকশা চালাতে বাধ্য হন তাদের সামনে যখন হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ঘুরে বেড়ায় এটা আমাদেরকে কলঙ্কিত করে। আমাদের রাজনীতিকরা তাদের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। আমরা এবার তেমনটা করতে চাই না।

এবারের আন্দোলনে যে লক্ষ লক্ষ তরুণ অংশগ্রহণ করেছে, সম্মুখ ভূমিকা পালন করেছে আমরা তাদেরকে কাজে লাগাতে চাই। আমরা তাদেরকে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে লাগাতে চাই। আমার মূল লক্ষ্য, আমি এক লক্ষ তরুণ যোদ্ধাকে তাদের স্কিল ডেভেলপ করে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত করতে চাই। আমার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে আমি এই কাজটি করার স্বপ্ন দেখছি।

কালবেলা: সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

শারমীন এস মুরশিদ: উন্নত দেশগুলোতে যারা সমাজ কল্যাণের জন্য কাজ করে সরকার তাদের অনেক বড় ধরনের সাপোর্ট দিয়ে থাকে। সেখানে বেসরকারি খাতগুলো সরকারি কাজের বড় অংশীদার। আমাদের দেশে ঠিক তার উল্টো। এনজিওগুলোকে গাল দিতে দিতে কোণঠাসা করে ফেলা হয়। অথচ সামাজিক কাজ করা এনজিও সংগঠনগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের ছিল। কিন্তু আমাদের দেশের সরকার তাদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে অভ্যস্ত না। আমাদের দেশে ক্রমশই বেড়েছে ট্যাক্সের হার। ট্যাক্স দিতে দিতে রীতিমতো হিমশিম খাই আমরা। অথচ তার বিপরীতে আমরা কোনো সেবা পাই না। এমনকি সরকারি দপ্তরে গিয়ে আমার ন্যায্য অধিকার চাওয়ার সাহসটাও পাই না। অথচ আমাদের ট্যাক্সের টাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হয়। লুটপাট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ট্যাক্স বাড়ানোর কথা শুনলেই মনে হয় সরকার আরো টাকা চুরি করবে। পেনশন স্কিমের কথা বললে মনে হয়, তারা চুরির জন্য নতুন আরেকটা সিস্টেম তৈরি করেছে। অর্থাৎ তাদের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। যেখানে কোন সেবা নেই, বিশ্বাস নেই, আস্থার জায়গা নেই সেখানে আমরা আর কি আশা করতে পারি? ঠিক সেরকম একটি জায়গায় একটা পরিবর্তনের প্রত্যাশা নিয়ে আমরা এসেছি। আমাদের একটি চমৎকার টিম হয়েছে, আমরা আশা করছি- আমরা ভালো কিছু করতে পারবো।

কালবেলা: জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আপনার কোন বার্তা কী?

শারমীন এস মুরশিদ: আমি মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোর এই মুহূর্তে এমন কোনো কাজ করা উচিত নয় যাতে যে ঘৃণা তারা অর্জন করেছে তা আরো বেড়ে যায়। কোনো রাজনৈতিক দলের এক মুহূর্তের জন্যও এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে এই আন্দোলনের পিঠে চড়ে তারা উড়ে এসে জুড়ে বসবে। ছাত্রদের এই আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের আন্দোলন ছিল না। এই মুহূর্তে যদি কেউ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পথে বাধা সৃষ্টি করে তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করবে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করলে দেশ আবার অশান্ত হয়ে যাবে। আমরা আমাদের সংস্কার কাজগুলোর জন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলব। তাদের কথা শুনবো তাদের পরামর্শ নেব। কিন্তু আমরা কোনো স্বেচ্ছাচারিতার প্রশ্রয় দেব না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বরগুনায় সাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

‘পড়াশোনায় ভালো ছিল তোফাজ্জল’

ঢাবির হলে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী আটক

চেন্নাইয়ে পান্ত ও লিটনের মধ্যে কী হয়েছিল?

ঢাকা ওয়াসার নতুন এমডি ফজলুর রহমান

পেজার বিস্ফোরণ / কঠোর প্রতিশোধের অঙ্গীকার লেবাননের যোদ্ধাদের

যাত্রী কল্যাণ সমিতি / আগস্টে সড়কে ঝরেছে ৪৭৬ প্রাণ

ঢাবির হলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, সারজিসের স্ট্যাটাস

স্রোতের তীব্রতায় মাতামুহুরী নদীর তীরে ভয়াবহ ভাঙন

রহস্যজনক কোড রিসিভ হতেই ঘটে পেজার বিস্ফোরণ

১০

‘বড় ভাই খাবার কেমন?’ 

১১

ভয়ংকর বার্মুডা ট্রায়াঙ্গলকেও হার মানায় যে জায়গা

১২

চলতি অর্থবছরেই ২ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক

১৩

জবি আবৃত্তি সংসদের সভাপতি লগ্ন, সম্পাদক শিউলী

১৪

পেজার দিয়ে যোগাযোগ করা যায় যেভাবে

১৫

দফায় দফায় পিটিয়ে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে : সমন্বয়ক কাদের

১৬

সাকিবকে নিয়ে তামিমের নতুন পরামর্শ

১৭

পাঁচ দফা দাবিতে রাবি প্রশাসন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

১৮

চার জেল সুপারকে অবসরে পাঠাল স্বরাষ্ট্র সুরক্ষা বিভাগ

১৯

কত টাকায় মেরামত হলো কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশন

২০
X