২৮ জুলাই ভারতে মুক্তি পেয়েছে মসলা মুভি ‘রকি অউর রানি প্রেম কাহানি’। করণ জোহর পরিচালিত এ ছবিটি মুক্তির আগেই সাড়া ফেলেছে, একটি সংলাপের জন্য। ছবিতে অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। তার মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয়েছে ‘খেলা হবে’। পশ্চিম বাংলার গত নির্বাচনের কল্যাণে ‘খেলা হবে’ ভারতজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ওই নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জি এ শব্দ দুটিকে রীতিমতো টাইটেল স্লোগান বানিয়ে ফেলেন। ‘খেলা হবে’ আওয়াজ তুলে নির্বাচনী খেলায় তিনি বাজিমাত করেন। ‘রকি অউর রানি প্রেম কাহানি’ নিয়ে আলোচনার অন্যতম কারণ ‘খেলা হবে’। সেন্সরের কাঁচি থেকে শব্দযুগল বাদ পড়েছে কি না, তাই নিয়ে মিডিয়ায় হৈচৈ। বলিউড সিনেমার কল্যাণে এ ‘স্লোগান’ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে। সামনে নিশ্চয়ই হলিউডেও কোনো নির্মাতা ‘খেলা হবে’ জুড়ে দেবেন কারও সংলাপে। ‘খেলা হবে’ স্লোগানটি মমতা ব্যানার্জির মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত। তবে এ স্লোগানটির আবিষ্কারক বাংলাদেশের আলোচিত রাজনীতিবিদ শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জের এ নেতাই প্রথম জামায়াত এবং বিএনপির বিরুদ্ধে ‘খেলা হবে’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে মমতা যেমন নির্বাচনে খেলা দেখিয়ে দিয়েছেন, শামীম ওসমানের ‘খেলা হবে’ শুধু হুঙ্কারই থেকেছে, বাস্তবে খেলা হয়নি। পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূমিধস বিজয়ের পর, বাংলাদেশের রাজনীতিতে জনপ্রিয় হয় ‘খেলা হবে’। আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলের নেতারাই ‘খেলা হবে’ বলে চ্যালেঞ্জ জুড়ে দেন, প্রতিপক্ষকে। ২৮ জুলাই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক যেমন এ স্লোগান দিয়ে বিএনপিকে সতর্ক করেছেন। তেমনি বিএনপিরও বেশ কজন নেতা আওয়ামী লীগের উদ্দেশে এ শব্দযুগল ব্যবহার করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, রাজনীতি যদি খেলা হয়, তাহলে এটা কোন খেলা? ভারতের কিংবদন্তি নেতা, প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু রাজনৈতিক কৌশলকে ‘দাবা’র চালের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। সম্প্রতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাজনীতিকে ‘ডার্টি গেম’ (নোংরা খেলা) হিসেবে অভিহিত করেছেন। আফ্রিকার মুক্তির মহান নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা অবশ্য রাজনীতিকে খেলার সঙ্গে তুলনার ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘রাজনীতি কোনো খেলা নয়, রাজনীতি মানুষের মুক্তির পথ।’ কিন্তু বাংলাদেশে প্রধান দুটি দল রাজনীতিকে রীতিমতো ‘খেলা’ বানিয়ে ফেলেছে। ২৯ জুলাই ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বিএনপির তাণ্ডব, আগুন সন্ত্রাসের পর জনমনে আতঙ্ক। খেলা কি তাহলে শুরু হয়ে গেল? আওয়ামী লীগ-বিএনপির খেলার নাম কী? প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল এখন যে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা ‘স্কুইড গেমে’র সঙ্গে তুলনীয়। বছর দুই আগে ‘স্কুইড গেম’ ‘নেটফ্লিক্স’ প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়ে সারা বিশ্বে হৈচৈ ফেলে। বিশ্বেও অন্যতম প্রশংসিত এবং জনপ্রিয় ‘ড্রামা সিরিয়াল’ হিসেবে পরিচিতি পায় দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্মিত এ সিরিজটি। মূলত এটি দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় শিশুতোষ খেলা। কিন্তু নির্মাতা এ খেলার এক ভয়ংকর রূপ দেন জনপ্রিয় সিরিজে। ‘স্কুইড গেম’-এর মূল উপজীব্য হলো ‘মরো অথবা মারো’। জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যর্থ, হতাশ, ঋণগ্রস্ত কিছু মানুষের একত্রিত করা হয় একটি খেলার জন্য। মোট ৪৬৫ জন অংশ নেয়। যিনি চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হবেন, তিনি পাবেন বিপুল অর্থ (৪৫ বিলিয়ন ডলার)। এ বিপুল অর্থ তার সব ঋণ, হতাশা দূর করে দেবে। তিনি পাবেন নতুন জীবন। কিন্তু এ বিপুল অর্থ জয় করতে তাকে মৃত্যুর ঝুঁকি নিতে হবে। খেলার প্রতি পর্বে যারা হারবে, তাদের শাস্তি মৃত্যু। এভাবে প্রতি পর্বে খেলা গড়ায়। শেষ পর্বে যিনি জিতবেন তিনি পুরস্কার পাবেন। আর পরাজিতের জন্য মৃত্যু। বাংলাদেশে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল কি এখন সেই খেলার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে? বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবশ্য সাফ বলে দিয়েছেন—“আমাদের জন্য এই আন্দোলন ‘ডু অর ডাই’। হয় জিতব না হয় মরব।” আওয়ামী লীগ সভাপতিও দলের নেতাকর্মীদের বারবার সতর্ক করছেন। দলের ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। বললেন, ‘ঐক্যবদ্ধ না থাকলে আবার বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসবে। আওয়ামী লীগকে কচুকাটা করবে।’ অর্থাৎ এ আন্দোলনে (খেলায়) যারা হারবে তাদের মৃত্যু অনিবার্য। বাংলাদেশে ‘প্রতিহিংসার’ রাজনীতির রূপ যে কী ভয়ংকর, তা আমরা ১৯৭৫-এ দেখেছি। ২০০১ ও ’০৪ সালেও দেখেছি। ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা কোনো প্রতিশোধ নেবে না। প্রতিহিংসার রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসবে। কিন্তু ক্ষমতায় গেলে বিএনপি যে কী ভয়ংকর হতে পারে, তা জাতি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেখেছে। ২০০১ সালে অক্টোবর নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়ী হয় বিএনপি-জামায়াত জোট। ভোটে যখন তাদের বিজয় নিশ্চিত হয়, তখন শুরু হয় তাণ্ডব। সারা দেশে একযোগে বিএনপি নেতাকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর। হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগের এক পৈশাচিক উৎসব শুরু হয় দেশজুড়ে। ধর্ষিতা হন পূর্ণিমা, ফাহিমা, শেফালী রানী। পঙ্গু হন শতাধিক নিরীহ মানুষ। শুধু নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য প্রাণ দিতে হয় বহু নিরীহ ভোটারকে। মুহূর্তে সর্বস্ব হারিয়ে উদ্বাস্তু হন অনেকে। ১ অক্টোবর ২০০১ থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে কোনো আইন ছিল না। ছিল না বিচার। বিএনপির মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগ এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিঃশেষ করে দেওয়া। এ ধারা অব্যাহত ছিল বিএনপির ক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত। আজ যখন বিএনপি নেতারা সুন্দর করে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন, তখন আমি অবাক। বিএনপি নেতারা যদি ২০০১-এর অক্টোবর সন্ত্রাসের জন্য অনুতপ্ত হতেন, দুঃখ প্রকাশ করতেন, তাহলে দেশবাসী আশ্বস্ত হতো। তাদের মুখে সুশীলদের শেখানো বুলি কিছুটা হলেও বিশ্বাস করত। বিএনপি যদি ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইত, তাহলে দেশবাসী বিশ্বাস করত তাদের নেতারা সত্য বলছেন। কিন্তু বিএনপির ভাষায় অনুতাপ নেই। অতীতের অপকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা তো দূরের কথা, দুঃখ প্রকাশ পর্যন্ত নেই। তাই বিএনপি যদি এই ‘স্কুইড গেমে’ জয়ী হয় তাহলে তারা কী করবে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। এক লহমায় রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে বাংলাদেশে।
গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনা করছে। এ কথা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই যে, এ সময়ে বাংলাদেশ পাল্টে গেছে। দৃশ্যমান উন্নয়ন বাংলাদেশকে এক নতুন পরিচয়ে উদ্ভাসিত করেছে। দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে অনেক। সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া এ বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনা। কিন্তু এই ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি জনগণের বিরক্তি এবং ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে পারেনি সরকার। অর্থ পাচার, ব্যাংক লুট, খেলাপি ঋণ অর্থনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। আওয়ামী লীগে বিভিন্ন স্তরে এমন কিছু নেতা গজিয়ে উঠেছেন, যারা জনগণকে ‘ক্রীতদাস’ মনে করেন। নব্য এ আওয়ামী প্রভুদের উৎপাত আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে। ২০১৪ ও ’১৮-এর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের অনেকের মধ্যেই জনগণকে উপেক্ষা করার এক উদ্বেগজনক প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। মুষ্টিমেয় কিছু দুর্বৃত্ত, লুটেরার দায় নিয়ে সমালোচিত হচ্ছে সরকার এবং আওয়ামী লীগ। ছাত্রলীগ, যুবলীগের কিছু ঘটনা জন-অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। দ্রব্যমূল্যেও অসহনীয় ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। অর্থনীতিকে ফোকলা বানানো কিছু ব্যক্তি সরকারের চারপাশে ঘুরঘুর করে। ১৫ বছরে আমলারা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অস্তিত্বকে প্রায় গিলে খেয়েছে। ব্যবসায়ীরা আওয়ামী লীগের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে গণমানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। কিন্তু এসব সমালোচনার পরও দেশের জনগণ একজন মানুষের ওপর এখনো আস্থাশীল। তার নাম শেখ হাসিনা। এ দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। পার্থক্য এটুকুই।
বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ‘খাম্বা’র নামে বিদ্যুৎ খাতে সহস্র কোটি টাকা লুট করেছে। আওয়ামী লীগ আমলে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে লুট হয়েছে হাজার কোটি টাকা। পার্থক্য হলো, আওয়ামী লীগ শতভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। আর বিএনপি কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদনই করতে পারেনি। এরকম তুলনামূলক চিত্র অনেক দেওয়া যায়। কিন্তু সেটা যাচাই করার দায়িত্ব আমার নয়। এটা বিচার করবে জনগণ। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব কাদের হাতে দেবে। জনগণের মতামতই শেষ কথা। আর জনগণের মতামত পাওয়ার একটাই উপায়—নির্বাচন। পল্টনে মহাসমাবেশ করে, কিংবা বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে তারুণ্যের শান্তি সমাবেশ করে, জনমত যাচাই হয় না। ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে, শুধু জনভোগান্তি হয়। যেমনটি হলো গত শনিবার (২৯ জুলাই)। বিএনপি ২৯ জুলাইয়ের কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ পথ পরিত্যাগ করল। আবার সংঘাত এবং সহিংসতার পথ বেছে নিল। বিএনপির নেতারা দাবি করছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিয়েছে। কিন্তু রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থান কী ধরনের কর্মসূচি? এ কর্মসূচিটাই তো উসকানিমূলক। শনিবার দেশের জনগণ আবার সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুরের প্রত্যাবর্তন দেখল। শনিবার ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে যেভাবে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে দেখলাম, তাতে প্রশ্ন উঠতেই পারে—বিএনপি কি একটি নির্বাচন চায় নাকি অন্যকিছু? ২০১৮-এর নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে, এটি সত্যি। কিন্তু ওই নির্বাচনে বিএনপিও তার অযোগ্যতা এবং ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারে কি? জনগণ যদি স্বতঃস্ফূর্ত এবং ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে কোনো শক্তিই নির্বাচনে কারচুপি করতে পারে না। তাছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এরই মধ্যে একটি ‘আন্তর্জাতিক’ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বিএনপি যদি এ নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে তা কোনোভাবেই ২০১৪ কিংবা ২০১৮-এর মতো হবে না। এটা বিএনপির নেতারাও ভালো করে জানেন। তাহলে কেন এ অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা? এর পেছনে কি অন্য কারও ইন্ধন আছে? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই আবার ‘স্কুইড গেম’ টিভি সিরিয়ালের কথা মনে পড়ল। হতাশ, জীবনযুদ্ধে পরাজিতদের নিয়ে এ ‘স্কুইড গেমে’র আয়োজক এক বিলিয়নিয়ার। যিনি নিজেও নানা রোগে আক্রান্ত, নিশ্চিত মৃত্যু পথযাত্রী। নিজের হতাশা কাটাতেই তিনি এ প্রাণঘাতী খেলার আয়োজন করেন। মানুষের হিংস্র চেহারাটা দেখে পৈশাচিক আনন্দ পান। স্কুইড গেমে বিজয়ীর সঙ্গে তার দেখা হয়, একদম শেষে। বাংলাদেশে আবার যে স্কুইড গেমের মতো ‘মরো অথবা মারো’ খেলা শুরু হয়েছে, তার নেপথ্যেও কি এরকম কোনো প্রভাবশালী? এমন কোনো দেশ যারা নিজেরাই সমস্যায় জরাজীর্ণ, রোগাক্রান্ত। যার প্রভাব প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতা আজ অস্তমিত। প্রাণঘাতী এ খেলার মাধ্যমে কি কেউ এ দেশের গণতন্ত্রকেই হত্যা করতে চায়? মরণ খেলার মাধ্যমে নির্বাসনে পাঠাতে চায় গণতন্ত্রকে? বাংলাদেশে যতবার অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতায় এসেছে, প্রতিবারই রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতা ছিল। অন্ধের মতো তারা একে অন্যকে নিঃশেষ করার উন্মুক্ত খেলায় ব্যস্ত ছিল। এ সুযোগে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে অনির্বাচিতরা। বিএনপি কি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে তেমন কিছু চাইছে? তবে শনিবার ছোট দুটি ঘটনা আমার ভালো লেগেছে। একটি, অসুস্থ বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সহানুভূতি। দ্বিতীয়টি, ডিবি কার্যালয়ে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের প্রতি সম্মানজনক আচরণ। এই সৌহার্দ্য ও সৌজন্যতাই রাজনীতিকে বাঁচাতে পারে। গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারে। সংঘাত নয়, সমঝোতাই গণতন্ত্রের আসল সৌন্দর্য। স্কুইড গেমে আসলে কেউ জেতে না, জেতে শুধু হিংস্রতা। সংলাপ, সৌহার্দ্য ত্যাগ করে আওয়ামী লীগ-বিএনপির অযৌক্তিক যুদ্ধেও জিততে পারে একজনই। অগণতান্ত্রিক শক্তি।
লেখক : নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত
ই-মেইল: [email protected]
মন্তব্য করুন