অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী। সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকার, গেল সরকারের বিচার প্রক্রিয়া, বিচার বিভাগের সংস্কারসহ নানা বিষয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অন্তু মুজাহিদ
কালবেলা: গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হলো, অন্তর্বর্তী সরকার। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: বাংলাদেশের ইতিহাসের ৫৪ বছর বা পাকিস্তান আমলের ২৩ বছর—এ দুই আমলকে যদি একসঙ্গে পর্যালোচনা করা হয়, তবে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান নজিরবিহীন ও অভূতপূর্ব। গত ১৬ বছর বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল মিলে এই স্বৈরশাসনকে তাড়ানোর জন্য নানা ধরনের আন্দোলন করেছে, নানা চেষ্টা করেছে। কখনো বিএনপি এককভাবে, কখনো বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে মিলে, কখনোবা অন্যান্য দল মিলে। কখনো তারা সফলতার মুখ দেখেনি। কিন্তু একটা বৈষম্যবিরোধী, কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে দাবানলের মতো সেটা ছড়িয়ে গেছে। ১৭ বছরের যে সরকার ছিল জগদ্দল পাথরের মতো, তাদের এক মাসের মধ্যেই বিদায় করা গেছে, এটা বাংলাদেশে শুধু নয়, বিশ্বের ইতিহাসে অভূতপূর্ব ও বিরল। বিশ্বের কোনো স্থানেই স্বৈরশাসকের সঙ্গে যুদ্ধ না করে তাদের তাড়ানো যায়নি। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা যেভাবে নিরস্ত্র অবস্থায় বুক পেতে দিয়ে, আমাদের বাচ্চা বাচ্চা ছেলেরা যে ইতিহাস রচনা করেছে, এটা আপনি ভ্যান গগের চিত্রকর্ম বলেন, পাবলো পিকাসোর চিত্রকর্মের মতো অবিস্মরণীয় এক চিত্রকর্ম, যা তারা ইতিহাসের দেয়ালে অঙ্কন করেছে; এ বিপ্লব অবিস্মরণীয়।
কালবেলা: বিদ্যমান সংবিধানের সংস্কার না পুনর্লিখনের কথা বলছেন?
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: এ সংবিধান আগামী দিনের বাংলাদেশের জন্য আর কার্যকর থাকতে পারে না। কারণ এ ধরনের সংবিধানের অধীনে ৫০ বা ৫৪ বছর আমরা স্বৈরাশাসন দেখেছি। আমরা শেখ হাসিনার সবচেয়ে নিকৃষ্ট শাসনও দেখেছি। সুতরাং এ সংবিধানকে সম্পূর্ণভাবে নতুন করে লিখতে হবে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী। আজকের ছাত্ররা আমাদের রাজনীতিবিদদের চোখ খুলে দিয়েছে। কী করা উচিত ছিল, কী করেননি আপনারা। তাদের সেই জাতীয় আকাঙ্ক্ষার আলোকে সংবিধানকে নতুন করে সাজানো দরকার। সেই কাজটা এখনই দরকার। এ সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জের মধ্যে এটাও আছে। এ সরকারের কার্যক্রমের মধ্যে কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেমব্লি তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন বাংলাদেশের কোনো সংবিধান ছিল না। আগের পার্লামেন্ট বসে বাংলাদেশের জন্য সংবিধান রচনা করল এবং সেটা পরবর্তীকালে বৈধতা দেওয়া হলো। বিপ্লবী সরকার সংবিধান প্রণয়ন করবে, এটি চার্টারের মধ্যে থাকবে। আমরা সবাই মিলে এ সংবিধানকে সমর্থন করব। সেটার ভিত্তিতে পরবর্তী পার্লামেন্টে এটা ভ্যালিডেটেড হবে এবং এটার মাধ্যমে নতুন সংবিধান রচনা করা সম্ভব। সুতরাং এ সরকারের এটাও একটা বিরাট কাজ। বাংলাদেশের জন্য নতুন সংবিধান রচনা করে যাওয়া উচিত।
কালবেলা: বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ ও দলীয়করণমুক্ত করতে করণীয় কী?
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা জরুরি। এর যে মান তাতে কেবল স্বাধীনতা দিলেই হবে না। স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল তাতে ওবায়দুল হাসান সাহেবরা স্বাধীনভাবে আওয়ামী লীগের দালালি করেছেন। তাকে কেউ ছুঁতে পারেনি। বিচারক নিয়োগের নীতিমালার ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের একটা রায় আছে যে, কী ধরনের লোককে আমি বিচারক নিয়োগ করতে পারব। আমাদের বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ, দক্ষ ও সক্ষম ব্যক্তিদের দিয়ে গঠন করতে হবে। বিশ্বের আদালতগুলো কীভাবে কাজ করে তা আমরা দেখছি। আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প মামলা করে অসংখ্যবার হেরেছেন। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মামলা করলে তিনি (শেখ হাসিনা) হারবেন, এটা কখনো কল্পনা করা যায়নি। সুতরাং বিচারব্যবস্থার সংস্কারের কাজটা এখনই করতে হবে। বিচারক নিয়োগের বিধিমালা, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে কার্যকর করা এবং যেসব দলীয় লোক অযোগ্য, দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিবাজ তাদের বিদায় করে দিতে হবে। ওই নীতিমালার আলোকে সৎ, যোগ্য, সক্ষম, জাতীয় আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত মানুষকেই বিচারক নিয়োগ করতে হবে। রাজনৈতিক উপাদান যেন না ঢুকানো যায়, সেই ব্যবস্থা এ সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান বিচারব্যবস্থা সভ্য সমাজের জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
কালবেলা: মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, বিডিআর বিদ্রোহ, ৫ মে-সহ অনেক ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং এখন উঠছে। এ বিষয়ে আপনার অভিমত কী?
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: শেখ হাসিনা এবং সাবেক সরকারের অপরাধকে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্তভাবে বিচার করা যাবে না। আমাদের আইন উপদেষ্টা বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করবেন। আমরা সেটা সমর্থন করি। তবে এখানে বেশ কিছু সংস্কারের প্রশ্ন আছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যখন অতীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তখন অনেক সমালোচনা হয়েছে দেশে ও বিদেশে। কীভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। কীভাবে রায় পাল্টানো হয়েছে। বাইরে থেকে রায় লিখিয়ে এনে দেওয়া হয়েছে। এ সমালোচনাগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে আইনের কিছু সংস্কার লাগবে, সংশোধনও লাগবে। সেই সংশোধনটা হতে হবে একটা অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে। যেখানে দলের বিচার করা যাবে। কিন্তু দলের বিচার করে কী শাস্তি দেওয়া যাবে সেটা আইনে নেই। শাস্তির ব্যবস্থাটা আইনে রাখতে হবে। তারপর প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থা ও বিচারক—এসব পরিবর্তন করে নিরপেক্ষ খ্যাতনামা দক্ষ বিচারকদের এ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। তদন্ত সংস্থাকে দক্ষ হতে হবে, যারা সত্যিকার অর্থে মিথ্যা সাক্ষ্য বানাবে না। বরং বিদ্যমান যে হার্ড অ্যাভিডেন্স আছে, সেগুলোকে প্রপারলি রিপ্রেজেন্ট করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘ টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স দিতে চেয়েছে। তাদের সেই অ্যাসিস্ট্যান্স নেওয়া যেতে পারে। আমরা জাতিসংঘের অধীনের কোনো তদন্তকে কার্যকর সমাধান মনে করি না। অবশ্যই জাতিসংঘ টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স দিতে পারে। প্রসিকিউশনে সেসব লোককেই নেওয়া উচিত যাদের যুদ্ধাপরাধের বিচারের অভিজ্ঞতা আছে। যারা এর ইনস অ্যান্ড আউট বোঝেন তাদেরই নিয়োগ দিতে হবে। এখানে দলীয় ভিত্তিতে হুটহাট কাউকে নিয়োগ দিয়ে বিচার করা যাবে না। তাহলে আলাদাভাবে শত শত মামলা করতে হবে না। মোটা দাগে যে গণহত্যাগুলো হয়েছে, ২০১৩ সালের ৫ মে যে গণহত্যা হয়েছে, তারও বিচার করা যাবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার করা যাবে। বর্তমানে যে বিপ্লব হয়েছে, দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ; এ বিষয়গুলোর বিচার করা যাবে। যেসব মানুষ আয়নাঘরে গুম হয়ে আছেন, তারা বের হয়ে আসছেন। একদম হার্ড অ্যাভিডেন্স আমার সামনে আছে। একটা সিঙ্গেল ঘটনাকে ভিত্তি ধরে যদি তদন্ত করে বিচার করা যায়, তাহলে এর সঙ্গে জড়িত যারা আছেন, প্রধানমন্ত্রী, তারেক সিদ্দিক, জিয়াউল আহসানের মতো দুর্বৃত্ত, প্রত্যেককে অসংখ্যবার ফাঁসি দেওয়া যাবে। ঢালাওভাবে গ্রামগঞ্জে সব মানুষকে ধরার দরকার নেই। বিগ ফিশ, যারা এগুলোর মাস্টারমাইন্ড, মোটা দাগে বড় বড় যে গণহত্যা হয়েছে, বিশেষ করে জোরপূর্বক অপহরণ অর্থাৎ গুম, জেনোসাইড, টর্চার, তারপর মোটা দাগে বড় বড় যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে—সেগুলোর বিচার করতে হবে। এই কয়েকটা বিষয় একত্রে নিয়ে এসে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনালে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই বিচার করা সম্ভব। আয়নাঘরের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেককে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। আয়নাঘরকে ক্রাইম সিন হিসেবে ঘোষণা করে এটাকে তদন্ত ও মামলার আওতায় নিয়ে আসা উচিত। এ কাজটা এখনই করতে হবে। তা না হলে যেসব লোক আয়নাঘরের সঙ্গে ছিল, তারা অ্যাভিডেন্স নষ্ট করার চেষ্টা করছে এবং করবে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রিপোর্টগুলো সেনাবাহিনীর কাছে আছে। ভিকটিমদের ফ্যামিলি এখনো জীবিত আছে। এসব অ্যাভিডেন্স বিভিন্ন জায়গায় আছে। দুটো অভিযোগ এরই মধ্যে ট্রাইব্যুনালে করা হয়েছে। এভাবে না করে আগে ভালো একটা ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি গঠন করা জরুরি। তাদের কাছে না দিলে তদন্ত সঠিক হবে না। তদন্তে এখনো আগের সরকারের লোক রয়ে গেছে। তারা কী তদন্ত করবে, তারা তো আলামত নষ্ট করবে। জিয়াউল আহসানকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাকে কে রিমান্ডে নিল? সে আগের পুলিশই তো! সেই আগের পুলিশ জিয়াউল আহসানের কাছ থেকে কী প্রকৃত তথ্য বের করতে পারবে? আমি মনে করছি, কিছু কিছু কাজের মধ্যে আমাদের ইমম্যাচিউরিটি শো করছে। দ্রুততার সঙ্গে ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিকে পুনর্গঠন করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত তাদের হাতে দিতে হবে। সেটাই হবে সঠিক পথ। এ প্রক্রিয়ায় বিচার করলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও প্রশ্ন করবে না। আমরা এমন একটা বিচার করতে চাই বা করা দরকার বলে মনে করি, যে বিচার নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোথাও কোনো প্রশ্ন উঠবে না। যেখানে মিথ্যা সাক্ষ্য বানানোর প্রয়োজন নেই। এত বেশি হার্ড অ্যাভিডেন্স আছে, এটাকে যদি আপনি প্রপারলি কোর্টে উপস্থাপন করা যায়, তাহলে খুব স্বাভাবিকভাবেই তাদের প্রাপ্ত শাস্তিটা বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব।
কালবেলা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় ত্রুটি ছিল বলে আপনারা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন। ওই বিচারের রায় সংশোধন বা পুনরায় বিচারের সুযোগ আছে কি?
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: যেগুলো অ্যাপিলেট ডিভিশনে পেন্ডিং আছে, সেগুলো শুনানির মাধ্যমে পেছনের যত অন্যায় হয়েছে, সেগুলোকে জাজমেন্টের মাধ্যমে আমরা নিয়ে আসতে পারব। কিন্তু যেগুলো রিভিউ পর্যন্ত শেষ হয়ে গেছে, যাদের ফাঁসি দেওয়া হয়ে গেছে, তাদের পরিবারগুলো যদি পুনরায় হাইকোর্ট ডিভিশনের কাছে পুরো প্রক্রিয়াটা রিভিউ করার জন্য সাংবিধানিক অধিকারের ক্ষেত্রে রিট পিটিশন দায়ের করেন, সে ক্ষেত্রে সরকারের জন্য একটা স্কোপ তৈরি হবে। দুনিয়াব্যাপী অনেক ট্রায়াল আছে, যেটা ১০০ বছর পরও রিভিউ হয়েছে এবং রিভিউ করে ঘোষণা করা হয়েছে যে, লোকটাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, তা ছিল অন্যায়। আমাদের খুব বেশিদিন হয়নি। হয়তো যারা চলে গেছেন, তাদের ফিরিয়ে আনা যাবে না। কিন্তু এর সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, মাস্টারমাইন্ড ছিল তাদের বিচারের মুখোমুখি করা যাবে। সেটা ভিকটিম ফ্যামিলি চাইলে মামলা পুনরায় বিবেচনার আবেদন করতে পারেন। তবে নগদ যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলোর বিচারে সরকারের অধিক মনোযোগী হওয়া উচিত।
কালবেলা: সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত অপরাধের তদন্ত ও অ্যাভিডেন্স সংগ্রহে গাফিলতি লক্ষ করা যাচ্ছে কি?
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: একটা নতুন সরকার হয়তো বিষয়টি বুঝতে পারছে না যে কী করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যতটুকু সময় গেছে এটা অনেক। তাদের এখনই উচিত তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে ইনভেস্টিগেশনগুলো শুরু করা। গণকবরের অজ্ঞাত হিসেবে দেওয়া হয়েছে সেগুলো যাচাই ও ফরেনসিক অডিট করা উচিত। কাজগুলো এখনই করা দরকার। এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে যে লাশগুলো আছে, তাদের পরিচয় প্রকাশ করার চেষ্টা করা দরকার। তাদের স্বজনরা বাংলাদেশেই আছে। আহত ও নিহতদের তালিকা সরকারিভাবে এখনো করা হয়নি। যদিও বেসরকারিভাবে অনেকেই করেছে। সরকারের তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে করতে হবে যাতে এটা বিচারিক কাজে ব্যবহার করা যায়। সেটা এক্ষুনি শুরু করা দরকার। আগের যিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছিলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে, তিনি বিষয়টা ঠিকমতো বুঝতে পারছেন না। এখন যিনি এসেছেন, আমি জানি না তিনি কতটুকু সক্ষম হবেন; তবে আইনজীবী হিসেবে এসব মামলার আমার যে অভিজ্ঞতা আছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি এক্ষুনি তদন্ত শুরু করা দরকার। ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি ঠিক করলেই তারা এ অ্যাভিডেন্সগুলো কালেক্ট করা শুরু করতে পারবেন। সেটা শুরু না করলে আমরা বিরাট সুযোগ হাতছাড়া করব।
কালবেলা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আপনার কী পরামর্শ আছে?
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম: অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবীদের সরকার। যদিও তারা নিজেরা বিপ্লবী না। কিন্তু বিপ্লবীরা তাদের এখানে এনে বসিয়েছে। তাদের প্রতি আমাদের বিরাট একটা প্রত্যাশা আছে। আমরা চাইব এ সরকার সফল হোক। আমরা তাদের কিছুটা সময়ও দিতে চাই। অবশ্যই জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা এবং জনগণের যে ত্যাগ ছিল, তার ভিত্তিতে আজকে আমরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছি। তাদের এ বিষয়টি প্রতিটি মুহূর্তে মনে রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, তারা কোনো ভুলভ্রান্তি করবে না।