ম.খ. ইসলাম
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ এএম
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

শেখ হাসিনা—অনন্য এক সান্টিয়াগো

শেখ হাসিনা—অনন্য এক সান্টিয়াগো

এবারের আন্দোলনে লক্ষণীয় বিষয় হলো, কোনো শিল্পকলকারখানা কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করেনি দুর্বৃত্তরা। আওয়ামী লীগ, অঙ্গসংগঠন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী মেয়র-কাউন্সিলররা পুলিশের সহায়তায়ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। কারফিউ জারি এবং সামরিক বাহিনী মোতায়েনের পূর্বপর্যন্ত একমাত্র বিজিবিপ্রধান, ডিবির হারুন ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা বাহিনী কিংবা উপবাহিনী প্রধান অথবা বিশেষ বিশেষ দপ্তরপ্রধানদের বক্তব্য/তৎপরতা নজরে পড়েনি

প্রখ্যাত মার্কিন উপন্যাসিক আর্নেস্ট হ্যামিংওয়ের নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত কালজয়ী উপন্যাস ‘দি ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’। উপন্যাসের নায়ক ৮১ বছরের বুড়ো সান্টিয়াগো। সান্টিয়াগো গলফ স্ট্রিম জলরাশিতে উত্তাল সমুদ্রে ছোট নৌকায় ছেঁড়া পাল তুলে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করত। মাছ শিকার করাই ছিল তার পেশা। সঙ্গী ছিল একটা ছোট ছেলে। অনেক দিন মাছের দেখা না পাওয়ায় ছোট ছেলেটাকে তার মা-বাবা অন্য নৌকায় দেয়, সান্টিয়াগো একা হয়ে পড়ে। এরপর উপন্যাসের মূল কাহিনি। গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার, শিকার করা বৃহৎ মাছ রক্ষায় হাঙরের সঙ্গে লড়াই। সে প্রসঙ্গে পরে আসা যাক।

৫ জুন হাইকোর্ট বিভাগ ২০১৮ সালে সরকার এর কোটাসংক্রান্ত জারিকৃত প্রজ্ঞাপন বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ অন্যান্য কোটা বহাল রেখে রায় প্রদান করেন। এরপর দ্রুত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন নামে কোটাবিরোধী আন্দোলন রাজপথ দখল করে নিতে থাকে। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজপথ, অলিগলি, জেলা-উপজেলায়। সরকার সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কোটাবিরোধী ছাত্রদের প্রতিরোধের মুখে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ছাত্রী হলের অনেক নেত্রী লাঞ্ছিত হয়। হলগুলোতে ছাত্রলীগের বহু কক্ষ ভাঙচুর ও লুট হয়। সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে।

আন্দোলনে ছাত্রলীগের হাঁকডাক, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ সব পর্যায়ের নেতা-নেত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, মেয়র, কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকায় তার দুর্বল অবস্থান ও কর্তৃত্বের বিষয় স্পষ্ট হয়। আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি সবার ভূমিকা বিচার-বিশ্লেষণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যৎ উপযুক্ত নেতা নির্বাচন এবং উপযুক্ত মন্ত্রিপরিষদ গঠন করতে পারবেন বলে সবার বিশ্বাস। সেনাবাহিনী নামার পর অনেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

১৮ জুলাই অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে গাড়ি নিয়ে ধানমন্ডি পার হতে পারলাম না। গাড়ি ছেড়ে হেঁটে চিরচেনা ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর অফিসে গেলাম। সেখানে গিয়ে পরিচিত অনেককে পেলাম। বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে কুশলবিনিময় করে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্যারকে সালাম দিয়ে বের হয়ে এলাম। দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার কক্ষে বসে চা খেলাম। রাত ৮টায় হেঁটে বাসায় ফিরলাম। রাস্তায় তখনো আন্দোলনকারীদের সরব উপস্থিতি দেখা গেল। বাসায় ফিরে বিভিন্ন পত্রিকায় চোখ বোলালাম, ভালো কিছু পেলাম না। ফোন হাতে নিয়ে খোঁজখবর নিলাম। কথা বললাম সংসদ সদস্য নাইমুজ্জামান মুক্তা, লিয়াকত সিকদার, মাহফুজুল হায়দার রোটন, জাকির, কাদের স্যারের সহকারী মহিদুলসহ অনেকের সঙ্গে। সবার আশঙ্কা, ১৯ জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেশে ভয়ংকর কিছু ঘটতে পারে। এর মধ্যে নানা গুজব ডালপালা মেলছে, খালেদা জিয়া নেই, প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন আরও কত কী! বাসায় একা, অনেকে বাসায় না থাকার পরামর্শ দিল। লিয়াকত অসাধারণ সংগঠক, দেশব্যাপী শক্ত নেটওয়ার্ক, অনেক খোঁজখবর রাখে। এক-এগারোর সময় জেল খেটেছেন। তার কাছে ঢাকার বাইরের খবর পাওয়া গেল।

বাসা অনেকের পরিচিত। এক-এগারোর সময় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা প্রয়াত এইচ টি ইমাম, সাবেক সাংসদ প্রয়াত বেবী মওদুদ, সাবেক সচিব আজিজুর রহমান, এন আই খান, ফরিদউদ্দিন চৌধুরী, আবদুল মালেক, মোশাররফ হোসেন, সুভাষ সিংহ, প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, মারুফা আক্তার পপি, শারমিন সুলতানা লিলি, অনেক সামরিক-বেসামরিক আমলা, রাজনীতিবিদ, ছাত্রনেতা, দেশি-বিদেশি গোয়েন্দা কর্মকর্তাসহ অনেকে এ বাসায় এসেছেন। বলতে গেলে আমার বাসা, অফিস ও হাতিরপুলের ডাক্তার দীপক দার চেম্বার—এ স্থান কটাই ছিল বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার অনুসারীদের আড্ডাস্থল। তাদের খাবারের জোগান দিতে চালু হয় মিনি ডাইনিং এবং রান্না শেখা। এখন আমি পাকা রাঁধুনি।

নির্ঘুম রাত কেটে গেল। ১৯ জুলাই শুক্রবার সকাল ১১টায় রোটন ফোন করে বলল, কাদের স্যার জানতে চান সচিবালয়ের পরিস্থিতি কেমন? বললাম, সমস্যা নেই। বৃহস্পতিবার ওদের সঙ্গে বসেছিলাম। রোটন বলল, পার্টি অফিসে এসে কাদের স্যারকে ব্রিফ করবেন। বললাম, জুমার নামাজের পর যাব। বিকেল সাড়ে ৩টায় পার্টি অফিসে গেলাম। পার্টি অফিসে ঢুকতে সুজিত নন্দীর সঙ্গে দেখা। কুশল বিনিময়ের পর বলল, ভাই, ভেতরে যান। ভেতরে বড় রুমে গেলাম। সবাই টিভি দেখছে। অনেকে পরিচিত। কাওছার মোল্লা, এসএম কামাল, মারুফা আক্তার পপি, সাইফুজ্জামান শেখর এবং পার্টি অফিসের চিরচেনা শামীম ভাইসহ অনেকে। কাওছার ভাই বসার সুযোগ করে দিলেন। অনেকে সচিবালয়ের খবর নিল। অল্প সময় পর লিয়াকত সিকদার এসে পাশে বসল। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার খবর নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি কাওছার মোল্লা এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী প্রয়াত বাবুল (সংসদ সদস্য নাজমা বেগমের জ্যেষ্ঠ ভাই) ভাইয়ের সঙ্গে ২০০১ সাল থেকে পরিচয়। অনেক ঘটনার সঙ্গে নিবিড় সংশ্লিষ্টতা স্মরণীয় হয়ে আছে। কাওছার মোল্লার একটা ঘটনা না বললেই নয়। নেত্রী জেলে, সংস্কারবাদী নেতা আমির হোসেনের নেতৃত্বে সংস্কারবাদীরা ধানমন্ডি ৩/এ-তে সভা করবেন। সন্তোষ শর্মা (কালবেলার প্রকাশক ও সম্পাদক) আমাকে বলল, সভা করতে দেওয়া যাবে না, কিছু একটা করেন। এন আই খান স্যারের সঙ্গে আলাপ করলাম, তারও সায় আছে। অনেক ভেবেচিন্তে সভার আগের দিন সকালে কাওছার ভাইকে ধানমন্ডি ২-এর স্টার কাবাবে চা খেতে আসার জন্য অনুরোধ করলাম, যথাসময় আসলেন, সন্তোষও উপস্থিত হলেন। কাওছার ভাইকে সংস্কারবাদীদের নির্ধারিত সভা ভেঙে দেওয়ার দায়িত্ব দিলাম। সভা করতে পারল না, নেতারা নাজেহাল। কিছুক্ষণ পর কাদের স্যারের রুমে গেলাম। রোটন চেয়ার ছেড়ে বসতে দিল। অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান, বিনয়, দলের জন্য নিবেদিত সাবেক ছাত্রনেতা। কাদের স্যারের পাশে মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বসা, অনেকে আছেন, সাংসদ বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম, মোহাম্মদ হানিফ, অপু, মুক্তি, কেন্দ্রীয় নেতা আনিস, চিনু, সাবেক সংসদ নাভানা, সাবেক ছাত্রনেতা লিয়াকত সিকদার, শাহজাদা মহিউদ্দিন, নাজমুল, জাকির, শোভন, লিপটন, তিলোত্তমাসহ অনেকে। কমবেশি সবাই বর্তমান ছাত্রলীগের ওপর বিরক্ত। প্রধানমন্ত্রীকে কাদের স্যার পরিস্থিতি অবহিত করলেন, ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকের বিষয় আলাপ করলেন। ১৪ দলের নেতাদের নিয়ে গণভবনে যাবেন। কাদের স্যার বের হয়ে গেলেন, আমরা বিপ্লব বড়ুয়ার রুমে গিয়ে বসলাম। বাগেরহাটের সাংসদ তন্ময় এসে বসলেন, অনেকে সেলফি তুলল। কাদের স্যার ফিরে এসে ১৪ দলের নেতাদের নিয়ে গণভবন গেলেন, সঙ্গে অনেকে বের হয়ে গেল।

আমি, কাওছার ভাই, লিয়াকত, নাজমুল, রোটন ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সর্বশেষ খবর নিচ্ছি, এমন সময় খবর এলো বাইরে দুর্বৃত্তরা জড়ো হচ্ছে, পার্টি অফিস থেকেও লাঠিসোটা নিয়ে অনেকে বের হয়ে গেল। সাংসদ অপু, লিয়াকত, নাজমুল, রোটন, জাকিরসহ অনেকে এগিয়ে গেল। আমি পেছনে, পুলিশ ও বিজিবি সতর্ক অবস্থায় আছে। র্যাংগস-আনাম প্লাজার ওখানে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া দৃশ্যমান। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেল। গণভবন থেকে কেউ ফিরে এলো না। অনেকে গুলিতে আহত হলো। পার্টি অফিস পর্যন্ত আসতে পারেনি দুর্বৃত্তের দল। রোটন একটা রিকশা ডেকে তুলে দিল, বাসায় ফিরে আসলাম। রাত ১২টা থেকে কারফিউর ঘোষণা এবং সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত। এরই মধ্যে অনেক সরকারি স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, জেলখানা ভেঙে কয়েদি ও জঙ্গিরা বের হয়ে গেছে।

এবারের আন্দোলনে লক্ষণীয় বিষয় হলো, কোনো শিল্পকলকারখানা কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করেনি দুর্বৃত্তরা। আওয়ামী লীগ, অঙ্গসংগঠন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, মেয়র-কাউন্সিলররা পুলিশের সহায়তায়ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। কারফিউ জারি এবং সামরিক বাহিনী মোতায়েনের পূর্বপর্যন্ত একমাত্র বিজিবিপ্রধান, ডিবির হারুন ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা বাহিনী কিংবা উপবাহিনীপ্রধান অথবা বিশেষ বিশেষ দপ্তরপ্রধানদের বক্তব্য/তৎপরতা নজরে পড়েনি। এত উন্নয়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, দীর্ঘ সময় ক্ষমতায়, সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, কিন্তু ব্যাপকভাবে সাধারণ মানুষ সরকার ও রাষ্ট্রের মহাবিপর্যয়ের সময় সরকারের পাশে দাঁড়ায়নি।

প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ডক্টর রেহমান সোবহান এক সেমিনারে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে একশ্রেণির মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে, তারা শুধু রাষ্ট্রকে জিম্মিই করেনি, একই সঙ্গে নিজেরাই রাষ্ট্র হয়ে উঠেছেন।’ তাদের সামলাতে না পারলে সরকার ও রাষ্ট্র অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে। বিপন্ন হতে পারে সুস্থ-সুন্দর, নিরাপদ, স্বাভাবিক উন্নত সমাজব্যবস্থা।

আর্নেস্ট হ্যামিং ওয়ের ‘দি ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’র নায়ক সান্টিয়াগোর মতো প্রধানমন্ত্রী একাই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় এবং স্বাধীনতাবিরোধী হাঙর ও হায়েনার ভয়ংকর থাবা থেকে দেশ-জাতিকে মুক্ত করলেন। তবে সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে, এমনটি ভাবার সময় এখনো আসেনি।

সান্টিয়াগো ছোট ডিঙিতে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে অবশেষে বিশাল আকৃতির মাছের দেখা পায়। তিন দিন, তিন রাত নিজের জীবন বিপন্ন করে মাছকে বাগে এনে নৌকার সঙ্গে বেঁধে তীরে ফিরতে পাল তোলে। বাতাস অনুকূলে ছিল, নৌকা দ্রুত এগোচ্ছে, সান্টিয়াগো স্বস্তির বিশ্রাম নিচ্ছে, রক্তাক্ত হাত, নির্জীব দেহ, তবুও আনন্দ!

নৌকা তীরের পানে ছুটছে, হঠাৎ মাছের ওপর হাঙরের আক্রমণ। বুড়ো সান্টিয়াগো পুরো শক্তি দিয়ে হাঙরকে হার্পুন দিয়ে আঘাত করল। হাঙর ধারালো হার্পুনের আঘাতে কাবু হয়ে মাছের কিছু অংশ নিয়ে পানির গভীরে হারিয়ে গেল। নৌকা এগোচ্ছে, বুড়ো গলুইতে বসে পড়ল। আবার হাঙর, আবার আঘাত, আংশিক মাছ নিয়ে গেল। এভাবে হাঙরের দল আসতে লাগল, হার্পুন ভেঙে গেল, বুড়ো বৈঠাতে ছুরি বেঁধে নিল। হাঙর ছুরি কামড় দিয়ে নিয়ে গেল। নৌকায় গদা ছিল, বুড়ো সেটা দিয়ে হাঙরের আক্রমণ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এভাবে মরণপণ যুদ্ধ করে নৌকা তীরে পৌঁছল। সান্টিয়াগো মাস্তুল কাঁধে নিয়ে পথে অনেকবার বিশ্রাম নিয়ে তার ঝুপড়িতে পৌঁছল। মাস্তুল রেখে শুয়ে পড়ল।

ছোট ছেলেটা দূর থেকে দেখে বুড়োর নৌকা ঘিরে মানুষের ভিড়, পর্যটকও আছে। ছেলেটা ভাবল, বুড়ো মনে হয় বড় কোনো মাছ শিকার করেছে। ভেবে খুশি হলো। নৌকার কাছে গেল, দেখল নৌকার সঙ্গে বিশাল মাছের কঙ্কাল বাঁধা। বুড়ো নেই, একজন কঙ্কাল মাপছে, ১৮ ফুট, কত বড়ই না ছিল মাছটা!! হাঙরের থাবা থেকে রক্ষা করতে পারেনি। ছেলেটা বুড়োর খোঁজে ঝুপড়িতে গেল, নিস্তেজ বুড়ো শুয়ে আছে, অনেক চেষ্টা করে জাগাল। কফি এনে দিল, বুড়োর মন ভালো না, ছেলেটার চোখে জল। বুড়োকে অনেক আশার কথা শোনাল, বুড়ো ঘুমিয়ে পড়ল, ছেলেটা পাশে বসা।

জাতির এই মহাদুর্যোগে সরকারের কোনো পর্যায় কিংবা দলের কোনো ব্যক্তি-গোষ্ঠী মোকাবিলা কিংবা যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি, সবাই কিংকর্তব্যবিমূঢ়! দিশেহারা, অনিশ্চিত আগামী, সবার কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। নেত্রীর একক চিন্তাচেতনা প্রজ্ঞা ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে সরকার পতনের আন্দোলনে জড়িত জামায়াত-বিএনপির হায়েনার দল পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। সান্টিয়াগোর মাছের কঙ্কালের মতো দৃশ্যমান হচ্ছে ধ্বংসস্তূপের মাঝে মূল্যবান রাষ্ট্রীয় সম্পদের কঙ্কাল। আর্নেস্ট হ্যামিংওয়ের সৃষ্টি সান্টিয়াগো, বাংলাদেশের সান্টিয়াগো বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশ নামক নৌকার শ্রেষ্ঠ মাঝি।

লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা ও সাবেক সচিব

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

দেশে ফিরলেন আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি

আজকের নামাজের সময়সূচি

শহীদ আমিনুলের সন্তানদের দায়িত্ব নিল ইত্তেফাকুল উলামা

রোববার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

মিছিলে বিএনপি নেতার গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রৌমারীতে ব্যবসায়ীদের আহ্বায়ক কমিটির শপথ অনুষ্ঠিত

৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়ায় মামুনের বিরুদ্ধে যুবদলের মামলা

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ক্ষমা পেয়ে আমিরাত থেকে ১২ জন ফিরছেন চট্টগ্রামে

১০

‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকার দুই ভাবে পরাজিত’

১১

মহানবীকে (সা.) কটূক্তিকারী সেই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা

১২

শিবচর আঞ্চলিক সড়কে গ্রামবাসীর বৃক্ষরোপণ

১৩

মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকার চেষ্টার অভিযোগ ধামাচাপা, ৭ দিন পর ফাঁস

১৪

১২ দিনেও মেলেনি রানীনগরে নিখোঁজ নার্গিসের সন্ধান

১৫

দায়িত্বশীলদের নিয়ে সাতক্ষীরায় ছাত্র শিবিরের সমাবেশ

১৬

আযহারী শিক্ষার্থীরা হবে বাংলাদেশ ও মিশরীয় ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন : মিশরীয় রাষ্ট্রদূত

১৭

রাজশাহীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

১৮

আন্দোলনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ কর্মীকে গণধোলাই

১৯

আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে শ্রমিক সমাবেশ

২০
X