পৃথিবী কাজের জায়গা। কাজ না করে বসে থাকার জায়গা নয়। পৃথিবীতে যে কাজ করবে, সে এগিয়ে যাবে আর যে অলস বসে থাকবে, সে পিছিয়ে পড়বে। আল্লাহতায়ালাও পরিশ্রমী ও কর্মবীর মানুষদের পছন্দ করেন। কর্মবিমুখ ও পরনির্ভর মানুষদের ইসলাম পছন্দ করে না। এজন্য মুমিনদের নিজ নিজ কর্মে দক্ষতা অর্জন করতে নানাভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে ইসলামে। ইসলাম প্রথাসর্বস্ব ও বৈরাগ্যবাদী কোনো ধর্ম নয়। তাই ইসলাম কর্মে উৎসাহিত করেছে। অলসতা ও কর্মবিমুখতা দূর করারও নির্দেশনা দিয়েছে। রাসুল (সা.) কর্মের দ্বারা রুজি উপার্জনকে ফরজ ইবাদত হিসেবে গণ্য করেছেন। শ্রম বা কর্ম দ্বারা অর্জিত খাদ্যকে সর্বোৎকৃষ্ট খাদ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কারও পক্ষে একবোঝা জ্বালানি সংগ্রহ করে পিঠে বহন করে নিয়ে আসা কারও কাছে কিছু চাওয়ার চেয়ে উত্তম। অনেক সময় চাইলে সে দিতেও পারে, আবার নাও পারে।’ (বোখারি, হাদিস : ২০৭৪)
প্রাত্যহিক কাজকর্মও সওয়াব ও পুণ্যের। এতে করে আধ্যাত্মিক কল্যাণ লাভের সুযোগ রয়েছে। বিধানসম্মতভাবে আয়-উপার্জনকে ‘আল্লাহর পথে সংগ্রাম’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সব ধরনের কায়িক বা শারীরিক শ্রমের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যাবে বলেও বলা হয়েছে। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ১০)। নিজ হাতে কাজ করে সম্মানজনক ও আত্মতৃপ্তিমূলক জীবিকার ব্যবস্থা করতে ইসলাম উৎসাহিত করেছে। এটাকে শ্রেষ্ঠ জীবিকা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিজ হাতের শ্রমে উপার্জিত জীবিকার চেয়ে উত্তম আহার কেউ কখনো গ্রহণ করেনি। আল্লাহর নবী দাউদ (আ.) নিজ হাতে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।’ (বোখারি, হাদিস: ২০৭২)।
আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-ও নিজে কর্মব্যস্ত থাকতেন। সাহাবাদেরও কাজ করে জীবিকা উপার্জনের উদ্বুদ্ধ করতেন। এমনকি কাজ করার কারণে তার হাতে ফোসকা পড়ে যেত, সে হাত দেখিয়ে তিনি বলতেন, আল্লাহ ও তার রাসুল এরূপ শ্রমাহত হাত খুবই পছন্দ করেন। সাহাবাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তাদের শরীর ঘর্মাক্ত হয়ে যেত।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘রাসুল (সা.)-এর সাহাবিরা নিজেদের কাজকর্ম নিজেরা করতেন। ফলে তাদের শরীর ঘর্মাক্ত হয়ে যেত। এজন্য তাদের বলা হয়, ‘যদি তোমরা গোসল করে নাও তবে ভালো হয়।’ (বোখারি, হাদিস: ২০৭১)
একবার নবীজি সাহাবিদের মজলিসে বসা ছিলেন। এমন সময় একজন গরিব আনসার সাহাবি সেখানে হাজির হলেন। আনসারি তার কাছে কিছু ভিক্ষা চাইলেন। নবীজি (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার ঘরে কি কিছুই নেই?’ আনসারি বললেন, ‘শুধু নিম্নমানের একটা কম্বল আর একটা কাঠের পেয়ালা আছে। কম্বলের একদিক আমরা বিছাই এবং একদিক গায়ে জড়াই। আর কাঠের পেয়ালাটা পানি পান করার কাজে ব্যবহার করি।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘যাও, সে দুটি আমার কাছে আনো।’ প্রিয় নবী (সা.) সাহাবিকে হুকুম দিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আনসারি সাহাবি কম্বল ও কাঠের পেয়ালা এনে প্রিয় নবীর সামনে রাখলেন। প্রিয় নবী (সা.) সে দুটি হাতে তুলে নিলেন। তিনি জিনিস দুটি নিলাম করলেন। ‘কে কিনবে এ জিনিস দুটি?’ নবীজি আওয়াজ দিলেন। এক সাহাবি বললেন, ‘আমি, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এ দুটি জিনিস এক দিরহামে কিনে নিতে চাই।’ নবীজি পুনরায় আওয়াজ দিলেন, ‘কে এক দিরহামের বেশি দাম দিতে পারে?’ দুবার, তিনবার প্রিয় নবী (সা.) আওয়াজ দিতে থাকলেন। অন্য এক সাহাবি বললেন, ‘আমি দুই দিরহামে নিতে পারি।’ সেই সাহাবি দুই দিরহামের বিনিময়ে কম্বল ও পেয়ালাটি কিনে নিলেন। নবীজি দিরহাম দুটি আনসারিকে দিয়ে বললেন, ‘যাও, এক দিরহাম দিয়ে খাবার কিনে ঘরে নিয়ে যাও। আর অন্য দিরহামটি দিয়ে একটি কুঠার কিনে নিয়ে এসো।’ প্রিয় নবীর কথামতো আনসারি সাহাবি বাজারে গেলেন; এক দিরহাম দিয়ে খাবার কিনে ঘরে নিয়ে গেলেন। আর এক দিরহাম দিয়ে একটি লোহার কুঠার কিনে নিয়ে নবীর কাছে এলেন। প্রিয় নবী নিজের হাতে কুঠারটিতে কাঠের বাঁট লাগিয়ে দিলেন। ‘যাও, বনে যাও, কাঠ কাটতে থাকো এবং বাজারে এনে বিক্রি করত থাকো।’ প্রিয় নবী (সা.) আনসারিকে হুকুম দিতে থাকলেন—‘তবে হ্যাঁ, মনে রেখো আগামী ১৫ দিন তোমাকে যেন আর এদিকে না দেখি।’ আনসারি সাহাবি কুঠারটি হাতে নিয়ে বনের পথে চলে গেলেন। এরপর থেকে তাকে আর কারও কাছে হাত পাততে দেখা যায়নি। বন থেকে কাঠ কেটে এনে বাজারে বিক্রি করতেন এবং তার বিনিময়ে যা পেতেন তা দিয়ে বেশ ভালোভাবে তার সংসার চলে যেত। এমনকি সংসারের খরচ চলার পরও প্রতিদিন কিছু পয়সা বাঁচত। ১৫ দিন পর যখন তিনি প্রিয় নবীর কাছে এলেন তখন তিনি বাড়তি ১০ দিরহামের মালিক। (আবু দাউদ, হাদিস: ২১৯৮)
আল্লাহ কর্মে যত্নশীল মানুষকে ভালোবাসেন। যে ব্যক্তি তার কাজের প্রতি যত্নশীল, সে-ই কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। আর যে অমনোযোগী, সে কখনো কর্মদক্ষতা অর্জন করতে পারে না। তাই রাসুলুল্লাহ (সা.) কাজের প্রতি যত্নশীল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন যে, যখন তোমাদের কেউ কোনো কাজ করে তখন তা সে যত্নের সঙ্গে করবে। (শুআবুল ইমান, হাদিস: ১৮৬৭)। আল্লাহতায়ালা মুমিনদের ভালো কাজের জন্য উত্তম প্রতিদান দেবেন। জাগতিক বিষয়েও আল্লাহর মূলনীতি এটাই। সুতরাং যে তার কাজে যত দক্ষ হবে, আল্লাহ তার জীবন-জীবিকায় ততটাই বরকত দেবেন। বর্ণিত হয়েছে, ‘যাতে তারা যে কাজ করে তার জন্য আল্লাহ তাদের উত্তম পুরস্কার দেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের প্রাপ্যের অধিক দেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবিকা দান করেন।’ (সুরা নুর, আয়াত: ৩৮)। ব্যক্তি যখন কোনো মন্দ কাজ করে বা কাজ মন্দভাবে করে, তার পরিণতি তাকেই ভোগ করতে হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘কেউ অণু পরিমাণ ভালো কাজ করলে সে তা দেখবে এবং কেউ অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করলে সে তাও দেখবে।’ (সুরা জিলজাল, আয়াত: ৭-৮)। তাফসিরবিদরা বলেন, আয়াতদ্বয় পরকালীন বিচারের ব্যাপারে অবতীর্ণ হলেও জাগতিক জীবনের পরিণাম-পরিণতি আল্লাহর এই চিরন্তন নিয়মের বাইরে নয়।
কোনো ভালো কাজ বা গুণ অর্জনে পিছিয়ে থাকা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। এটা অবিশ্বাসী ও মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘পেছনে পড়ে থাকা লোকদের সঙ্গে থাকতে পেরে তারা আনন্দিত এবং তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেওয়া হয়েছে, তাই তারা বুঝতে পারে না।’ (সুরা তাওবা, আয়াত: ৮৭)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, “দুর্বল মুমিন অপেক্ষা সবল মুমিন শ্রেষ্ঠ এবং আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। (তবে) প্রত্যেকের মধ্যেই কল্যাণ আছে। তোমাকে যা উপকার দেবে সে বিষয়ে প্রলুব্ধ হও, আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো। অক্ষম অকর্মণ্য হয়ো না। কোনো (অবাঞ্ছিত) বিষয়ে আক্রান্ত হলে বোলো না, যদি আমি এটা করতাম তাহলে এটা এটা হতো; বরং বলবে আল্লাহর ফয়সালা; তিনি যা চান তা-ই করেন। কারণ ‘যদি’ কথাটা শয়তানের কাজের পথ খুলে দেয়।” (মুসলিম, হাদিস: ২৬৬৪)। এই হাদিসে চিন্তা ও কর্মশক্তিকে কাজে লাগানোর গভীর শিক্ষা আছে। ভারসাম্যপূর্ণভাবে গোটা বিষয়টি উম্মতের চিন্তা-চেতনায় উপস্থিত করা হয়েছে।
অলসতা ও উদাসীনতায় মানুষের জীবনের সব বরকত ও উত্থান হারিয়ে যায়। কোরআন-হাদিসে অলস ও উদাসীন ব্যক্তিদের নিন্দা জানিয়ে অনেক কথা বর্ণিত হয়েছে। পার্থিব দৃষ্টিতেও অলসতাকে খুব মন্দ চোখে দেখা হয়। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শক্তিশালী মুমিন দুর্বল মুমিন থেকে অধিক উত্তম ও প্রিয়। তুমি ওই জিনিসে যত্নবান হও, যাতে তোমার উপকার আছে। আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো। আর উৎসাহ-উদ্দীপনাহীন হয়ো না।’ (মুসলিম: ৪৮২২)। তাই আমাদের প্রতিটি কাজে উদ্যমতার সঙ্গে করতে হবে। যখন অলসতা ভর করে ঠিক তখন নিজেই নিজেকে অনুপ্রাণিত করা, খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করা এবং তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা। বিলম্বে ঘুমানো এবং বিলম্বে ঘুম থেকে ওঠা অলসতার অন্যতম কারণ। এটা দূর করতে পারলে জীবনে উদ্যম ও গতি আসবে।
হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত—রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন রাতে ঘুমায় তখন শয়তান তার ঘাড়ের ওপর তিনটা গিরা লাগিয়ে দেয়। প্রত্যেক গিরায় সে এই মন্ত্র পড়ে ফুঁ দেয় যে, ‘তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত; অতএব তুমি ঘুমাতে থাকো।’ বান্দা যদি রাত্রে জাগ্রত হয়ে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে তাহলে একটা গিরা খুলে যায়। তারপর যদি অজু করে তাহলে দ্বিতীয় গিরাও খুলে যায়। তারপর যদি তাহাজ্জুদে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে সব গিরাই খুলে যায়। ফলে সকালবেলা সে অত্যন্ত সতেজ ও ঝরঝরে মেজাজের অধিকারী এবং কর্মোদ্যম থাকে। তার অনেক বড় কল্যাণ অর্জিত হয়। আর যদি ঘুম থেকে না ওঠে ও তাহাজ্জুদ না পড়ে তাহলে সে অলস ও মন ভারাক্রান্ত থাকে। অনেক বড় কল্যাণ থেকে সে বঞ্চিত থাকে।’ (বোখারি, হাদিস: ১১৪২)।
আল্লাহতায়ালা দিনের শুরুতে বরকত রেখেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি বরকতের সময় জাগ্রত থাকবে আল্লাহ তার অলসতা, উদাসীনতা ও আড়ষ্টতা সব দূর করবেন এবং পুরো দিনের সব কাজে বরকত দান করবেন। হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত—রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! দিনের শুরুতে চার রাকাত নামাজ পড়তে অপারগ হয়ো না, আমি তোমার সারা দিনের কাজ সম্পন্ন করে দেব।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ২/৪৯২)। দিনের শুরু ভাগের জন্য রাসুল (সা.) দোয়া করেছেন। হাদিসে এসেছে, নবীজি এ দোয়া করেছেন, ‘হে আল্লাহ! আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরু ভাগ বরকতময় করুন।’ (তিরমিজি: ১২১২)। অলসতা দূর করার জন্য আল্লাহর রাসুল (সা.) দোয়া শিখিয়েছেন। নবীজি দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমনপীড়ন থেকে।’ (বোখারি: ২৮৯৩)। অন্য একটি হাদিসে আরেকটি দোয়া বর্ণিত হয়েছে, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, বার্ধক্য ও কবরের আজাব থেকে।’ (মুসলিম: ২৭২২)।
ছোট-বড় কোনো উপার্জন মাধ্যমকে তুচ্ছ বা মর্যাদাহীন জ্ঞান না করে, নিজের যোগ্যতা, সুবিধা ও পরিবেশের আলোকে যে কোনো বৈধ উপার্জনে আত্মনিয়োগ করা জরুরি। কামার, কুমার, ছুতার, জেলে, নাপিত ইত্যাদি কোনো পেশাই ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয় নয়, যদি হালালভাবে হয়। বৈধ পন্থার সব পেশায় মুসলমান আত্মনিয়োগ করতে পারে। এতে অসম্মানের কিছু নেই। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো।’ (সুরা জুমুয়া: ৯)। মুফাসসিরিনে কেরাম বলেন, এ আয়াতে ‘অনুগ্রহ’ দ্বারা ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে রিজিক সংগ্রহ করাকে বোঝানো হয়েছে। তাই ছোট-বড় সব হালাল ব্যবসাই সম্মানিত। হোক না তা ফুটপাতে। আরেক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন তোমরা ইহরাম মুক্ত হবে তখন শিকার করবে।’ (সুরা মায়িদা: ২)। এ আয়াতে শিকার পেশার কথা বলা হয়েছে। এতে বোঝা গেল মাছ শিকার বা জেলে পেশাও সম্মানিত। হাদিস শরিফে নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘হালাল রিজিক উপার্জন করা অপরাপর ফরজের পর একটি ফরজ কাজ।’ (তাবারানি, হাদিস: ৯৯৯৩)। তবে অভাব-অনটন সত্ত্বেও বর্তমান প্রজন্ম কায়িক বা শারীরিক পরিশ্রম করতে আগ্রহী নয়। পরিশ্রম করে নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায় না। সবাই প্রাতিষ্ঠানিক চাকরির আশায় বেকার বসে থাকে। অথচ আল্লাহতায়ালা কোরআনে বর্ণনা করেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদ: ১১)।
অতএব প্রত্যেকটি বেকার লোক যদি প্রাতিষ্ঠানিক চাকরির আশায় বসে না থেকে, নিজের যোগ্যতার আলোকে ছোট-বড় যে কোনো কাজে লেগে যায় এবং পরিশ্রম করে তাহলে বেকারত্ব দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
লেখক: মুহাদ্দিস ও ইসলামী চিন্তাবিদ