এমপির সামনেই কুপিয়ে জখম উপজেলা চেয়ারম্যানকে

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন নিয়ে সংঘর্ষ
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা পরিষদের সামনে শুক্রবার আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা পরিষদের সামনে শুক্রবার আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।ছবি: কালবেলা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় ফিরোজের সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। অন্যদিকে, সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের লোকজনের হামলায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেনসহ তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এস এম সায়েম বলেন, আবদুল মোতালেবের ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। এ ছাড়া তার বুকের ডান পাশে ও ডান হাতের কনুইয়ে জখম রয়েছে। তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, দিনটি উদযাপন করতে তিনটি পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হকের পক্ষের সমর্থকরা সরকারি কলেজ মাঠে, আ স ম ফিরোজের অনুসারীরা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ও আবদুল মোতালেবের সমর্থকরা বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হন। সকাল ১১টার দিকে আবদুল মোতালেবের নেতৃত্বে আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের

দিকে যাচ্ছিলেন নেতাকর্মীরা। উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বাধা দেয়। তখন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে আবদুল মোতালেবের কথা-কাটাকাটি হয়। পাশেই অবস্থান করছিলেন আ স ম ফিরোজের সমর্থকরা। তিনিও ছাদখোলা একটি গাড়িতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মোতালেবের সমর্থকরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে যেতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ সুযোগে মোতালেবের ওপর হামলা চালান আ স ম ফিরোজের সমর্থকরা। এতে মোতালেবসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে মোতালেবের সমর্থকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে ওসি আল মামুন, এসআই এম এ হাসান, এএসআই মো. হুমায়ন কবির ও মো. শাহিন, কনস্টেবল মো. আবু রাহাত, মো. রবিউলসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।

বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (একাংশ) মো. জসিম উদ্দিন ফরাজী বলেন, মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দাবি করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল আমিন বলেন, ‘অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দুপক্ষকে একসঙ্গে বসানোর চেষ্টা করেছি; কিন্তু তারা রাজি হননি।’ একপক্ষকে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করা হলো, অন্যপক্ষকে কেন লাঠিচার্জ করলেন না—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুপক্ষকেই ছত্রভঙ্গ করতে চেষ্টা করেছি।

এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, এ ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানের ব্যানারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নাম ও ছবি না থাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে এমপি গ্রুপের হামলায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেনসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত অন্য দুজন হলেন শ্রমিক লীগ নেতা গোপন ও যুবলীগ নেতা রুবেল।

বেলকুচি থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, পার্টি অফিসের ভেতরে ব্যানারকে কেন্দ্র করে এমপি মমিন মণ্ডল ও আশানুর বিশ্বাসের কথা-কাটাকাটি হয়। উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com