পদ্মা সেতুর একপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর অংশে বাস খাদে পড়ে ১৯ জনের প্রাণহানির ঘটনায় প্রতিবেদন দিয়েছে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার তিন কারণ ও ১৪টি সুপারিশ দিয়েছে এ কমিটি। গতকাল বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে তদন্ত কমিটি বলছে, এ দুর্ঘটনার প্রধান তিন কারণ দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সাময়িক স্থগিত ফিটনেসের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তা এক্সপ্রেসওয়েতে চালানো, চালকের ভারী যান চালানোর লাইসেন্স না থাকা ও বৃষ্টিবিঘ্নিত পিচ্ছিল রাস্তায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া।
আর দুর্ঘটনায় এত প্রাণহানির কারণ হিসেবে এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশের রাস্তায় গার্ড রেইল না থাকা, একমুখী রাস্তায় মাত্র দুই লেন এবং বাসটির নিবন্ধন স্থগিত ও মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেস নিয়ে চলাচলকে দায়ী করেছে তদন্ত কমিটি।
এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা রোধে ১৪টি সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির বৈধ কাগজপত্র নিয়ে মহাসড়কে গাড়ি চালানো, যাত্রীদের সিটবেল্ট পরা, এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে গার্ড রেইল স্থাপন, ভবিষ্যতে নির্মিতব্য এক্সপ্রেসওয়েতে একমুখী রাস্তায় কমপক্ষে তিন লেনের ব্যবস্থা রাখা, রাতে, ভোরে ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গাড়ির গতিসীমা অপেক্ষাকৃত কমিয়ে গাড়ির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন, স্থানীয়দের সাক্ষাৎকার, বাসটির চালক, হেলপার, সুপারভাইজারের পরিবারের সদস্য ও মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান পল্লব কুমার হাজরা।
গত রোববার খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদে ছিটকে পড়ে। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের প্রাণহানি হয়। এ ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পল্লব কুমার হাজরা ছাড়াও কমিটিতে ছিলেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মনিরুজ্জামান ফকির, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি ও মাদারীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হোসেন।