বেইলি রোড! ব্যস্ততম এই রজধানীর নাগরিকদের জন্য এক ভালো লাগা কিংবা সুন্দর সময় কাটানোর স্থান। বড় বড় শপিং সেন্টার, রেস্টুরেন্টের সমারোহ এই এলাকায়। সময় পেলে কিংবা ছুটি নিয়ে সেখানে সপ্তাহে অন্তত একবার ঢু মারেন অনেকে। কিন্তু প্রাণোচ্ছল সেই জায়গাই এতটা ভয়াবহ হবে, কে জানত।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডে এমনই এক ভবনে ঘটেছে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা। এতে সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৪ জন। তারা সবাই গিয়েছিল আনন্দ করতে, অথচ ফিরতে হলো লাশ হয়ে।
রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে রাত পৌনে ১০টার দিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুরুতে ভবনের দোতলায় আগুন লাগলেও সঙ্গে সঙ্গে সেই আগুন ভবনের সব ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে ১১টা ৫০ মিনিটে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ততক্ষণে জীবনপ্রদীপ নিভে যায় ৪৪ জনের।
জানা যায়, ব্যস্ততম সেই এলাকায় ওই ভবনে ছিল না কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা। জরুরি অবস্থায় বের হওয়ারও কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আগুনে পুড়ে যত না মানুষ মারা গেছে, তার চেয়েও বেশি মারা গেছে ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে। তিনতলায় ছিল কাপড়ের দোকান। বাকি সব ছিল রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যে কারণে আগুনের তীব্রতা ছড়িয়েছে ভয়াবহভাবে।
আগুন লাগার পর প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন জানান, খবর পাওয়ার পরপরই ফায়ার সার্ভিস সেখানে যায়। আগুনের ভয়াবহতা তীব্র ছিল। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। হতাহতের ঘটনা আছে। সেটা এখনো নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আমরা কাজ করছি।
তিনি বলেন, ভবনটিতে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে। আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করেছি সবাইক নিরাপদে বের করে আনার জন্য। হতাহতের ঘটনা আছে। আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। এ ছাড়া দম বন্ধ হয়ে অনেকেই মারা গেছে। আমাদের তল্লাশি চলছে।
তবে বেইলি রোডে ছয়তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে রাত ৩টায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪৪ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ১০ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন মারা গেছেন। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে একজন মারা গেছেন।