রাজকুমার নন্দী
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৪২ এএম
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৫৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বিএনপির সামনে আশার আলো কোথায়

একদফার আন্দোলন
গ্রাফিক্স: কালবেলা
গ্রাফিক্স: কালবেলা

সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে হরতাল-অবরোধের মতো ‘কঠোর’ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। একে একে পার হয়ে গেছে ২৬ দিন। এর মধ্যেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ক্ষমতাসীন দল এবং তাদের শরিকরা তো বটেই, এতদিন আন্দোলনের মাঠে থাকা কোনো কোনো দলও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়েছে। যাব না যাব না করেও ৩০০ আসনে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি। এসব দলের প্রধান কার্যালয় এখন ভোটের আমেজে রমরমা। তা সত্ত্বেও সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একদফার সঙ্গে ‘একতরফা’ তপশিল বাতিলের দাবি যোগ করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বিএনপি।

হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে থাকলেও মাঠের অবস্থানে বিএনপির সেই কঠোরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না। দলের শীর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ নেতারা কারাগারে। বাকিরাও আত্মগোপনে থাকায় কর্মসূচি সফল করতে রাজপথে বড় কোনো জমায়েত নেই। পিকেটিংয়ের ক্ষেত্রেও নেই তেমন কোনো তৎপরতা। কোথাও কোথাও ঝটিকা মিছিল বা পিকেটিং থাকলেও তাতে খুব বেশি নেতাকর্মী সমবেত হন না। এসব কারণে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই অবরোধের প্রভাব শিথিল হয়ে পড়ছে। দূরপাল্লার গাড়ি কম চললেও নগর পরিবহন অনেকটাই স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছে। এই অবস্থায় তপশিল বাতিল এবং একদফার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দুদিন বিরতি দিয়ে আবারও সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ডেকেছে বিএনপি। সপ্তম দফায় আগামী রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এই অবরোধ হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। জানা গেছে, সপ্তম দফার এই কর্মসূচি শেষে এক দিন বিরতি দিয়ে আগামী সপ্তাহের শেষ দুদিন আবার হরতাল অথবা অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে।

গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে সংঘর্ষের ঘটনার পর সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে পরদিন ২৯ অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী ছয় দফায় ১৩ দিনের অবরোধ এবং দুই দফায় ৩ দিনের হরতাল পালন করেছে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো। আজ শুক্রবার ভোর ৬টায় শেষ হয়েছে ষষ্ঠ দফার অবরোধ।

এরই মধ্যে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা নিবন্ধিত দুই মিত্র বিএনপিকে ছেড়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেওয়ায় নতুন করে চাপে পড়েছে দলটি। তবে এমন পরিস্থিতিতেও নেতাকর্মীদের হতাশ না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, ধারাবাহিক আন্দোলন এবং পশ্চিমা বিশ্বের অব্যাহত চাপে শিগগির পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। সেজন্য আরও কিছুদিন আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, আন্দোলনের চলমান কর্মসূচি দুই পর্বে ভাগ করা হচ্ছে। কর্মসূচির প্রথম পর্ব হচ্ছে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষ দিন আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্ব হলো ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন পর্যন্ত। দুই পর্বে পরিস্থিতি বুঝে কর্মসূচি দেওয়া হবে।

জানা গেছে, বিএনপি এখন হরতাল-অবরোধের বিকল্প কর্মসূচি খুঁজছে। দলটি মনে করছে, ঘুরেফিরে একই কর্মসূচি দীর্ঘদিন ধরে চললে তা কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। তাই সাময়িক বিরতি দিয়ে প্রয়োজনে আবার এই কর্মসূচিতে ফিরতে চান তারা। তবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চায় দলের হাইকমান্ড। এরপর ডিসেম্বরের শুরু থেকে বিকল্প নতুন কর্মসূচিতে যেতে চান তারা। এ লক্ষ্যে দলের স্থায়ী কমিটি ছাড়াও গণতন্ত্র মঞ্চসহ যুগপতের শরিকদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। সেখানে নির্বাচন কমিশন, সচিবালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ঘেরাওয়ের প্রস্তাব যেমন এসেছে, তেমনি দেওয়া হয়েছে ঢাকায় জনসভার প্রস্তাবও। একই সঙ্গে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করতে পারা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। তবে হরতাল-অবরোধের বিকল্প কর্মসূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতি রেখে আমরা আগামীতে কর্মসূচি দেব। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। কর্মসূচি চূড়ান্ত হলে জানানো হবে।

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি ও তার মিত্র দলগুলো। তারা ঘোষণা দিয়েছিল, ওই দিনই শুরু হবে আন্দোলনের মহাযাত্রা। একই দিন ঢাকার শাপলা চত্বরে বিএনপির অনুরূপ কর্মসূচি দেয় গত ডিসেম্বরের পর থেকে যুগপৎ আন্দোলন থেকে দূরে থাকা জামায়াতে ইসলামী। পুলিশের অনুমতি ছাড়া জামায়াত শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে পারলেও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানোয় বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এরপর থেকেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা কারাগারে রয়েছেন। এ ছাড়া গ্রেপ্তার এড়াতে বাকিরা আত্মগোপনে রয়েছেন। তারপর থেকেই দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ, পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এমন পরিস্থিতিতে গ্রেপ্তার এড়িয়ে ঝটিকা কৌশলে কর্মসূচি পালন করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসব কর্মসূচিতে দলটির নেতাকর্মীদের তেমন সক্রিয় উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি বুঝে তুলনামূলক নিরাপদ সময়ে বিশেষ করে ভোরের দিকে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ১০-১৫ জন নেতাকর্মী জড়ো হয়ে মিছিল করছেন। এগুলোর স্থায়িত্ব ৫-১০ মিনিটের বেশি নয়। এ ছাড়া এখন রাতে মশাল মিছিল করা হচ্ছে।

বিএনপির চলমান কর্মসূচি ঢিলেঢালাভাবে পালন নিয়ে সারা দেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। তাদের প্রশ্ন, ঢাকায় মহাসমাবেশের আগে প্রায় এক বছর ধরে সারা দেশে হাজার হাজার এমনকি লক্ষাধিক নেতাকর্মী নিয়ে সফলভাবে সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার অভিযান চললেও সব নেতাকর্মী তো গ্রেপ্তার হননি। তাহলে বাইরে থাকা নেতাকর্মীরা কেন রাজপথে নেমে শক্তভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারছেন না? কেন ঝটিকা মিছিলে কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে?

সার্বিক বিবেচনায় বিএনপির চলমান আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা ক্রমেই কমছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী। কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা কমে গেছে। কর্মসূচি ঘিরে অনেক জায়গায় নাশকতার ঘটনা ঘটছে। এটা নিয়েও একটা শঙ্কা আছে। একই ধরনের কর্মসূচি দীর্ঘদিন চললে জনসম্পৃক্ততা দিন দিন কমতে থাকে। তা ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতিতে গত ১৫ বছরে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে অনেকটাই ভোঁতা হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা হয়ে গেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর অনেকেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ অবস্থায় বিএনপি কী ভাবছে—সেটা তাদের বিষয়। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকারের দিক থেকে একটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞা আছে। তারা আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করবে। আর অংশগ্রহণমূলক হওয়ার ব্যাপারটা আসলে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের নিজ নিজ রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। জাতীয় পার্টি পরে এসে বলল নির্বাচনে যাবে এবং তারা নির্বাচনী প্রস্তুতিও শুরু করেছে।’

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে রাজনৈতিক দল হিসেবে এ কথা সত্য যে, বিএনপির জনসমর্থন আছে। তারা অতীতে একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল।’

তবে বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘ঢাকাসহ জেলা শহরগুলোতে বিএনপির অবরোধের কর্মসূচি কিছুটা ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছে, এটা সত্য। জীবিকার তাগিদে অনেককে বের হতে হচ্ছে। তবে প্রায় এক মাস ধরে কর্মসূচি চললেও দূরপাল্লার বাস এখনো ওইভাবে ছাড়েনি। জনগণের সমর্থন ছাড়া এটি সম্ভব হতো না। সুতরাং বিএনপির অবরোধের কর্মসূচি ব্যর্থ হয়েছে, সেটা বলা যাবে না। তা ছাড়া ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে আগামীতে একটি অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে সরকারের ওপর গণতান্ত্রিক বিশ্বের চাপ অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে সংলাপের আহ্বানও জানানো হয়েছে। সুতরাং নির্বাচন ঘিরে একটি সমঝোতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, এমনটাই মানুষের প্রত্যাশা।’

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা অবশ্য বলছেন, ২৮ অক্টোবরের পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে। মহাসমাবেশ ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলছে। এর মধ্য দিয়ে তাদের কার্যত ব্যাকফুটে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাই পুরো বিষয়টি মাথায় রেখেই কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হচ্ছে। একই সঙ্গে কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধরনও সে অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলীয় কৌশলের অংশ হিসেবে কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেতাকর্মীদের একসঙ্গে মাঠে না নামার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলটি মনে করছে, সবাই একত্রে রাস্তায় নামলে সেখানে পুলিশের দিক থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। তা ছাড়া দলের প্রত্যাশা অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন না হলে আন্দোলনকে তখন নির্বাচন পর্যন্ত টানতে হতে পারে। দ্রুতই পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন না হলে ২০১৪ সালের মতো আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে তা প্রতিহত করার পথে যেতে হতে পারে। ভোট ঠেকাতে তখন হরতাল-অবরোধের সঙ্গে অসহযোগ আন্দোলনের ডাকও দেওয়া হতে পারে। বিএনপির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের এমন ধারণা দেওয়া হয়েছে। সেজন্য নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এড়িয়ে কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়েছে।

এদিকে অব্যাহত গ্রেপ্তারের মধ্যেও আন্দোলন কর্মসূচি এখন পর্যন্ত যেভাবে পালিত হচ্ছে, তাতে বিএনপির হাইকমান্ড আপাতত সন্তুষ্ট বলে জানা গেছে। দলটি মনে করছে, বর্তমান প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীরা অনেক ঝুঁকি নিয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে চলমান আন্দোলনকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত টেনে নিতে পারলে রাজনৈতিক পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে প্রত্যাশা দলের। তবে কী পরিবর্তন আসতে পারে, সেটা স্পষ্ট না করলেও বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা ধারণা দিয়েছেন, ঘোষিত তপশিল পেছানো হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের অব্যাহত চাপে জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে সমঝোতামূলক কোনো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কারণ, রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়াই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষিত হওয়ায় সমঝোতার পরিবেশ তৈরি এবং নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক করতে আগামী দিনে সরকারের ওপর বিদেশিদের চাপ আরও বাড়তে পারে, যা ক্ষমতাসীনদের পক্ষে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।

চলমান আন্দোলনেই দাবি আদায় হবে বলে আশা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলন হচ্ছে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল মানুষের প্রাণের আন্দোলন। অন্যদিকে রয়েছে সব ধরনের রাইফেল, বুলেট, টিয়ার শেল, গ্রেনেড নিয়ে সরকারের মারমুখী প্রশাসন, যাকে আবার সহায়তা দিচ্ছে সরকারি দলের সন্ত্রাসী বাহিনী। এই সত্যের আলোকেই বিরোধী দলের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ আন্দোলনকে বিশ্লেষণ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পূর্ণ ধৈর্য বজায় রেখে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই নৈতিক শক্তির কাছে এ সরকার যথাসময়ে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের সাজানো নির্বাচনের ইশতেহার নিয়ে কারও উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। কয়েকদিন ধরে যে হারে মনোনয়নের আবেদন ফরম বিক্রি হচ্ছে, তাতে ‘প্রহসনের নির্বাচনে’ প্রার্থীসংখ্যা সত্যিকার ভোটার সংখ্যার চেয়েও বেশি হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না! কেননা, এ দেশের ভোটাররা এখন এ সরকারের নির্বাচনের মাহাত্ম্য জেনে ফেলেছে যে, এ দেশে নির্বাচনে কারও আর ভোট দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ভোট এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হয়ে যায়।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের সব প্রশ্নের উত্তর দেবে শিবির

‘বাংলাদেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত’

মানবজাতির প্রকৃত নৈতিকতার পূর্ণতা স্রষ্টার বিধানেই সম্ভব : মাহমুদ হাসান 

‘চাকরিবিধি লঙ্ঘনকারী আমলাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’

ইসরায়েলের বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

বিএনপি বিচারহীনতার সংস্কৃতি চায় না : মামুন মাহমুদ

মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : জোনায়েদ সাকি

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় : রিজভী

‘তুই আমাকে বেয়াদব বলার কে, ফাজিল কোথাকার’

খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় শ্রীনগরে দোয়া মাহফিল

১০

রাশিয়া সফরে যাবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট

১১

স্পেন ছেড়ে সৌদি লিগে যেতে পারেন বার্সা তারকা

১২

সংস্কারের পাশাপাশি ষড়যন্ত্র প্রতিরোধেও প্রস্তুত থাকতে হবে : নুর

১৩

সম্প্রীতি সমাবেশে ফরহাদ মজহার / জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠাই হবে আগামীর রাজনীতি

১৪

ঢাকা মেইলের সাংবাদিক কাজী রফিক আর নেই

১৫

গণঅভ্যুত্থান শ্রমজীবীদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আনেনি : সাইফুল হক

১৬

তামিমের কারণেই বিপিএলে এসেছেন শাহীন আফ্রিদি

১৭

রেলের শীর্ষ পদে রদবদল

১৮

শনিবার ঢাকায় ঢুকছে ২ হাজার গাড়িবহর

১৯

বার্সার দানি ওলমোর নিবন্ধনের আবেদন আদালতে প্রত্যাখ্যান

২০
X