বিনিয়োগের আকার বিবেচনায় দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে রাশিয়া। ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগ দেবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করবেন। এর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার ৫২ বছর পর জ্বালানির নতুন যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেল, গ্যাস ও কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে শুরু হচ্ছে ইউরেনিয়ামের ব্যবহার।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান কালবেলাকে বলেন, ‘ইউরেনিয়াম দেশে পৌঁছানোর মধ্য দিয়েই নতুন যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ৫ অক্টোবর (আজ) এ জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে রূপপুর কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করা হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেল। আমরা এখন পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশ। এটা আমাদের জন্য গর্বের।’
দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে করা হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি, রূপপুরে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী রাশিয়ার রোসাটমের মহাপরিচালক আলেপি লিখাচেভসহ সুধী সমাজের প্রতিনিধি, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাশিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য তেজস্ক্রিয় জ্বালানির প্রথম চালান দেশে এসে পৌঁছায়। রাশিয়ার একটি উড়োজাহাজে করে এ জ্বালানি বাংলাদেশে আনা হয়। পরদিন শুক্রবার সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় পাবনার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি হিসেবে ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান ঢাকা থেকে প্রকল্প এলাকায় আনা হয়। শনিবার দুপুর নাগাদ ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো রূপপুরে পৌঁছায়। এরই মধ্য দিয়ে বিশ্বে নিউক্লিয়ার ক্লাবের ৩৩তম সদস্য হলো বাংলাদেশ। আগামী বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান গতকাল বুধবার রূপপুরের প্রকল্প এলাকায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘সঞ্চালন লাইনসহ অন্যান্য অবকাঠামো তৈরি হওয়ার পরই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। ২০২৫ সালের শুরুতে জনগণ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পাবে। পাওয়ার প্লান্টের প্রতিটি ধাপেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন মাইলফলক।’
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, ‘নিউক্লিয়ার জ্বালানি আসার পরই এ কেন্দ্রটি পারমাণবিক স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার ক্লাবের ৩৩তম সদস্য হতে যাচ্ছে। পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি ও সুরক্ষা করতে সব শর্ত মানা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সবার পর্যবেক্ষণ রয়েছে। হিরেনিয়াম কমিশনিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্পটি পারমাণবিক রূপ পাবে। মাত্র ছয় বছর সাত মাসে আমরা প্রকল্পের এ রূপ দিতে সক্ষম হয়েছি।’
এদিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রভাবে বদলে যাচ্ছে দেশের উত্তরাঞ্চল। বিশেষ করে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম রূপপুরের চেহারাই পাল্টে গেছে। এক সময়ের নিস্তব্ধ এ গ্রামটি এখন দিনরাতজুড়ে থাকছে কর্মচঞ্চল। শুরুতে প্রকল্পটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে সংশয় থাকলেও এখন তারা উজ্জীবিত। অবকাঠামো নির্মাণকাজে স্থানীয় হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ প্রকল্পে। বিশাল এ কর্মযজ্ঞে উত্তরাঞ্চলজুড়েই নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে জিডিপিতে ২ শতাংশ অবদান রাখবে। উত্তরবঙ্গের পিছিয়ে পড়া জনগণ এ প্রকল্প থেকে উপকৃত হবে। এ এলাকার মানুষ উন্নয়নের মূল স্রোতে চলে আসবে।’
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম রাশিয়ার সাইবেরিয়ার নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেন্ট্রেটস প্লান্টে (এনসিসিপি) তৈরি হচ্ছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এনসিসিপি। কারখানাটিতে ইউরেনিয়াম ডাইঅক্সাইডকে নানা ধাপে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ছোট ছোট প্যালেট তৈরি করা হয়। প্যালেটগুলো প্রায় চার মিটার লম্বা ফুয়েল রডের মধ্যে রাখা হয়। রূপপুরের জন্য তৈরি একটি রডে ৩১২-৩১৩টির মতো প্যালেট রয়েছে। ৩২০টি রড নিয়ে একটা ফুয়েল অ্যাসেমব্লি গঠিত হয়। রূপপুরে একটি চুল্লিতে এমন ১৬৩ অ্যাসেমব্লি বসানো হবে। ইউরেনিয়াম জ্বালানির জীবনকাল সাত বছর। একবার বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর পর একবারে সব অ্যাসেমব্লি পরিবর্তন করা হয় না। নির্দিষ্ট সময় পর পর ৩০ শতাংশ করে ফুয়েল পরিবর্তন করা হয়। এভাবে ধাপে ধাপে সব অ্যাসেমব্লি বদলানো হয়।
জানা গেছে, রোসাটম রূপপুরের জন্য প্রথম তিন বছর জ্বালানি বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। প্রথম ইউনিটের জন্য সাত ধাপে ১৬৮টি ফুয়েল অ্যাসেমব্লি (জ্বালানি) আনা হবে, যার প্রথম কার্গো এরই মধ্যে দেশে এসেছে। প্রথম তিন বছর প্রতি ১২ মাস পরপর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জ্বালানি পরিবর্তন করে নতুন জ্বালানি লোড করা হবে। পরবর্তী বছরগুলোতে জ্বালানি পরিবর্তন করা হবে ১৮ মাস পরপর। দুই ইউনিটের জন্য ১৮ মাসে ২৫ টন ইউরেনিয়াম লাগবে। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী এর মূল্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
জানা গেছে, আপাতত চুল্লিতে জ্বালানি লোড করা হবে না। স্টোরেজে রাখা হবে। পরে গ্রিড লাইন প্রস্তুত হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এজন্য দুই মাস সময় লাগবে। আর পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদন শুরুর জন্য প্রয়োজন হবে ১০ মাস।
আর্থিক বিনিয়োগ বিবেচনায় একক হিসেবে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ প্রকল্পের ৯০ শতাংশ অর্থ ঋণ হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়া, যা ২৮ বছরে পরিশোধ করতে হবে। প্রতিটিতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট করে এ প্রকল্পের দুটি ইউনিটে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। রোসাটমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাটোমসট্রয় এক্সপোর্ট। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি প্রায় ৭৪ শতাংশ।
নির্মাণকাজের এক পর্যায়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে এ কেন্দ্রের অর্থ পরিশোধ নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। এ অবস্থায় চীনের মুদ্রা ইউয়ানে পাওনা পরিশোধের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। তবে এ প্রক্রিয়ায় মুদ্রা রূপান্তরের ব্যয় কারা পরিশোধ করবে, তা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। এ ছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা একটি রুশ জাহাজে করে রূপপুরের মালপত্র বাংলাদেশে পাঠানো হলেও তা নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার ওই জাহাজটি এ দেশের সমুদ্রসীমায় নোঙরের অনুমতি দেয়নি। এসব কারণে গতি কমলেও রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ কখনো থেমে থাকেনি।
এ বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘দীর্ঘ সাত বছর ধরে নিরলসভাবে এ প্রকল্পের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত এক দিনও এ প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকেনি। বিশ্বের কোথাও এত কম সময়ে এ মানের কোনো প্রকল্পের এতটা অগ্রগতি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক চেষ্টার ফলে এটা সম্ভব হচ্ছে।’
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৯৬১ সালে এ ভূখণ্ডে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সেই সময়ই কেন্দ্রটির জন্য পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মা নদীতীরবর্তী রূপপুরকে নির্বাচন করা হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর থমকে যায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সেই উদ্যোগ।
১৯৭৭-১৯৮৬ সময়কালে মেসার্স সোফরাটম সম্ভাব্যতা যাচাই করে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন যৌক্তিক বলে জানায়। পরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ১২৫ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৮৭ সালে জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডের দুটি কোম্পানি দ্বিতীয়বার সম্ভাব্যতা যাচাই করে। এতে তিনশ থেকে পাঁচশ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
পরে ১৯৯৭ সালের ১৬ অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০০৯ সালের ১৩ মে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রুশ ফেডারেশনের রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটোম) মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। ২০১০ সালের ২১ মে বাংলাদেশ এবং রাশিয়া সরকারের মধ্যে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১০ সালের ১০ নভেম্বর জাতীয় সংসদে সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ২০১১ সালের ২ নভেম্বর বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন-সংক্রান্ত আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১২ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হয়।
২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরকালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রাক-প্রারম্ভিক পর্যায়ের কাজ সম্পাদনের জন্য ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির ভিত্তিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম পর্যায় কাজ উদ্বোধন করেন।
২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্যান্য পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার জন্য নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড গঠন করা হয়।
২০১৬ সালের ২১ জুন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের স্থান-সংক্রান্ত লাইসেন্স প্রদান করা হয়। ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল পর্যায়ের কাজ সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং রুশ ফেডারেশন সরকারের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ক্রেডিট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরের বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ও রাশিয়ান মধ্যে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিতে পারস্পরিক সহায়তা’ সংক্রান্ত একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নকশা ও নির্মাণ লাইসেন্স দেয়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটের প্রথম কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধন করেন। ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এবং ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যথাক্রমে এই কেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লিপাত্র বা রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল স্থাপন কাজ উদ্বোধন করেন।