দীর্ঘদিন ধরেই নানা সমস্যায় ধুঁকছে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত। অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা আর খেলাপি ঋণের চাপে বেকায়দায় অনেক প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। ফলে একদিকে যেমন দিন দিন আমানত কমছে, অন্যদিকে আমানতকারীও হারাতে শুরু করেছে এসব খাত। এ অবস্থায় নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে পারছে না অনেক ব্যাংক। তারল্য পরিস্থিতি যেমন খারাপ, আবার এসব ব্যাংককে চলতে হচ্ছে অন্য ব্যাংক থেকে ধার নিয়ে। আর এসব ব্যাংকের মধ্যে সিংহভাগই শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে বড় দুটি ইসলামী ব্যাংক তৈরির পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, একীভূতকরণ ব্যাংক খাতকে শক্তিশালী করতে পারে। এতে ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণ, পরিচালন ব্যয় কমানো এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক
মানদণ্ডে শক্তিশালী ব্যাংক গঠন করে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হতে পারে। তবে একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় ত্রুটি থাকলে বড় ধরনের সমস্যায় পড়বে দেশের ব্যাংক খাত।
তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েকটি ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রাথমিকভাবে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমনকি একীভূত হতে এমওইউ স্বাক্ষর করে ব্যাংক দুটি। যদিও পটপরিবর্তনের কারণে বিষয়টি সফল হয়নি। এ ছাড়া কয়েকটি ব্যাংকের একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল ওই সময়। কিন্তু কোনোটিই শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।
প্রক্রিয়ায় ভুল ছিল?
একীভূতকরণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা জারির পর পদ্মা ও এক্সিমের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসির (বিডিবিএল) দায়িত্ব নিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। আর অন্য ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ও বেসিক ব্যাংক মার্জ হওয়ার আলোচনা চূড়ান্ত হলেও তা চুক্তি পর্যন্ত গড়ায়নি। এর বাইরে রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার কথা চলছিল রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব)। রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের দায়িত্ব বেসরকারি সিটি ব্যাংককে দেওয়ার কথা এগোচ্ছিল।
এই দশ ব্যাংক মার্জ করতে পাঁচটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা সীমাবদ্ধ রেখেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা মেজবাউল হক বলেছিলেন, ‘এই পাঁচ প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে আমরা (বাংলাদেশ ব্যাংক) অভিজ্ঞতা নেব, অভিজ্ঞাতারও প্রয়োজন আছে। তারপর দেখা যাবে।’
এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছিল, ব্যাংক একীভূত করতে অনেক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। অডিটর নিয়োগ, সম্পদ ও দায় ঠিক করা, শেয়ার দর ঠিক করা, শেয়ার অংশ র্নিধারণ ও আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। পাঁচ প্রস্তাবের ব্যাংকগুলো একীভূত করার সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে তিন থেকে চার বছর লেগে যেতে পারে। ওই সময়ে মার্জ হতে আপত্তি জানিয়েছিল ন্যাশনাল ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক। এখন নতুন পরিস্থিতিতে মার্জারের মতো বিষয় নিয়ে ভাবছে না এসব ব্যাংক।
যদিও ওই সময় অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, একীভূতকরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ভুল ছিল। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ওই সময় তাড়াহুড়ো করে ব্যাংকগুলো একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য এটি সফল হয়নি।
অন্য দেশের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক মার্জার বা একীভূতকরণের উদাহরণ অন্যান্য দেশেও আছে। ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকব্যবস্থা ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক (ফেড) জেপি মরগান চেজকে বাধ্য করেছিল বিনিয়োগ ব্যাংক বিয়ার স্ট্যার্নসকে কিনতে। বিয়ার স্ট্যার্নসের প্রতি শেয়ার ২ ডলারে কেনার জন্য আলোচনা শুরু হলেও পরে তা ১০ ডলারে গিয়ে ঠেকে।
তখন যদিও বাজারে শেয়ারমূল্য ছিল ৩০ ডলার। এ জন্য ফেড ৩০ বিলিয়ন ডলার ঋণ সুবিধাও দেয় জেপি মর্গানকে। এই বেচাকেনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বিয়ার স্ট্যার্নসের শেয়ারধারীরা। লাভবান হতে পারেনি জেপি মর্গানও। অনেক বেশি দায় তাদের বহন করতে হয়েছে।
বাধ্যতামূলক একীভূতকরণের সাম্প্রতিক উদাহরণ হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের দুই বড় ব্যাংক ইউবিএস ও ক্রেডিট সুইসের এক হয়ে যাওয়া। ইউবিএস মোটেই আগ্রহী ছিল না, কিন্তু সংকটে থাকা ক্রেডিট সুইসকে বাঁচাতে বাধ্য করেছিল সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে এখনো ধুঁকছে ইউবিএস। সর্বশেষ খবর হচ্ছে, ব্যাপকভাবে লোকবল ছাঁটাইয়ের দিকে যাচ্ছে তারা। গোটা ইউরোপই সতর্ক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এই একীভূতকরণের ফলাফলের দিকে।
কোন পথে হাঁটছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভিত্তিক সমন্বিত নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার লক্ষ্যে যোগ্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি বিশেষ বিধান প্রণয়ন করেছে। এই বিধানবলে ব্যাংক কোম্পানি ও ব্যাংকিং নীতিমালার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেছে, যারা নির্দিষ্ট ব্যাংকে গভীর নিরীক্ষা চালাবে। ২০২৪ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক স্পেশাল রেজল্যুশন অ্যাক্ট চালু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আইন অনুযায়ী এই বিশেষ বিধান চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের প্রায় ১২টি ব্যাংকে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা সংস্থার মাধ্যমে বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
রেজল্যুশন অ্যাক্টে বলা হয়েছে, ব্যাংকের সমন্বিত নিরীক্ষা বা তার অংশ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যোগ্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে। সমন্বিত নিরীক্ষাকাজের জন্য তপশিলি ব্যাংকগুলো যাতে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে তাদের গ্রাহকদের বিষয়ে তথ্য জানায়, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ এই বিধানের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে সাধারণ অনুমতি দিয়েছে। তপশিলি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সমন্বয় করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট বিভাগকে দায়িত্ব দেবে। চুক্তি অনুসারে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর গভর্নর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই প্রতিবেদন পরিচালনা পর্ষদের কাছে পেশ করবেন।
বিশেষ বিধানে সমন্বিত নিরীক্ষার সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে ঝুঁকিভিত্তিক বিস্তারিত নিরীক্ষা করা হবে, যার মধ্যে থাকবে সম্পদের মান পর্যালোচনা, করপোরেট সুশাসন পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং ব্যাংকের নীতি, পদ্ধতি, প্রক্রিয়া এবং আইন ও নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিবিধানের পরিপালন বিষয়ে পর্যালোচনা। এ বিধান জারি করার কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও দেশের বেশ কিছু ব্যাংক বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। বিশেষ করে সম্পদের মান, করপোরেট সুশাসন, নীতিমালা এবং আইন ও বিধিবিধানের পরিপালনের ক্ষেত্রে এ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ফলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর সাধারণভাবে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি পুরো ব্যাংকিং খাতের বিশ্বাসযোগ্যতাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
একীভূতকরণে সংকটে পড়তে পারে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক: দেশে সংকটে পড়া বেশিরভাগই শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক। বিশেষ করে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংকে নানা জালিয়াতি, ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে ধুঁকছে পুরো ব্যাংক খাত। আওয়ামী লীগ আমলে চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত এস আলম গ্রুপ ইসলামী ধারার বেশিরভাগ ব্যাংকই লুটেছে। এতে পুরো খাতই এখন বিপর্যস্ত। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতকে ঠিক করতে দুর্বল ও সবল ইসলামী ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে দুটি বড় ব্যাংক করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও এতে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক খাত পুরোপুরি সংকটে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘ইসলামী ব্যাংকগুলোকে একদম নতুন রূপ দেওয়া হবে। একটি বড় ও অনেক ছোট ইসলামী ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো সমস্যাগ্রস্ত। এসব ব্যাংক একীভূত করে বড় দুটি ইসলামী ব্যাংক গড়ে তোলা হবে। ইসলামী ব্যাংকের জন্য আইন ও তদারকির ব্যবস্থা চালু করা হবে। বৈশ্বিক পরিসরের উত্তম রীতিনীতি অনুসরণ করে এসব করা হবে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র বলছে, দেশে বর্তমানে ১০টি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক রয়েছে। এগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ দখলে নেয় এস আলম গ্রুপ। সব মিলিয়ে ইসলামী ধারার পাঁচটি ব্যাংক ছিল প্রতিষ্ঠানটির দখলে। এর বাইরে তার ভাইকে দিয়ে দখলে নেওয়া হয়েছিল আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। সব ব্যাংকেই ব্যাপক অনিয়ম ও টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে এবং সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।
ব্যাংকাররা বলছেন, দেশের বর্তমানে শরিয়াহভিত্তিক যে ব্যাংকগুলো রয়েছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটির শক্তিশালী পর্ষদের কারণে আওয়ামী লীগের আমলেও কোনো ধরনের লুটের খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু খারাপ কোনো ব্যাংকের সঙ্গে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একীভূত করা হলে ওই ব্যাংকও দুর্বল হয়ে পড়বে। শুধু তাই নয়, পটপরিবর্তনের পর শরিয়াহভিত্তিক সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ব্যাংকটিতে শক্তিশালী পর্ষদ দিলে চার-পাঁচ বছরের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকও আগের মতো শক্তিশালী ব্যাংক হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে।
জানা যায়, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। শুধু শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকই নয়, পুরো ব্যাংক খাতে সবচেয়ে ভালো ব্যাংকগুলোর মধ্যে শাহজালাল ব্যাংক একটি। এর বাইরে অপেক্ষাকৃত কম দুর্বল ব্যাংক ধরা হয় আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল)। আর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ। এসব ব্যাংককে ঠিকভাবে পরিচালনা করা গেলে দ্রুতই ঘুরে দাঁড়াতে পারে। এর বাইরে পাঁচটি ব্যাংকই দুর্বল। এসব ব্যাংককে একীভূত করেও কোনো লাভ হবে না বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ভালো ব্যাংকের সঙ্গে খারাপ ব্যাংক একীভূত করা ঠিক হবে বলে মনে হয় না। আর গভর্নর সম্ভবত এভাবে বোঝাতে চাননি। তিনি বলেছেন, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটি বড় ব্যাংক। অন্যগুলো ছোট। এজন্য এখানে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা হচ্ছে না। তাই ছোট ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে হয়তো বড় ব্যাংক করা হতে পারে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে অধিকাংশই দুর্বল। এগুলোকে শক্তিশালী করার প্রথম পদক্ষেপ হয়তো বাংলাদেশ ব্যাংক নিতে যাচ্ছে। এটিকে সাধুবাদ জানাই। তবে এই সিদ্ধান্ত কতটা বাস্তবসম্মত, সেটা সময়ই বলে দেবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘ব্যাংক মার্জার হচ্ছে একটা বিকল্প। সে রকম আরও অনেক বিকল্প রয়েছে। তবে বাংলাদেশের আগে কোনো অভিজ্ঞতা নেই, এজন্য করা যাবে না তেমন নয়। মার্জার করতে হলে প্রথমে ব্যাংকগুলোকে তাদের পরিকল্পনার করার জন্য সময় দিতে হবে। তারপর তারা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে হয়তো কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের মার্জ করার সিদ্ধান্ত নেবে। তবে যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন, তা ভেবেচিন্তে নেওয়া উচিত।
মন্তব্য করুন