পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কঠোর আইনি পদক্ষেপের কারণে ছোট হয়ে আসছে অর্থ পাচারকারীদের দুনিয়া। পাচার হয়ে আসা অর্থ বাজেয়াপ্ত করতে কোথাও চলছে অভিযান, কোথাও বা পাচারকারীদের ধরতে করা হচ্ছে নতুন আইন। এ কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই অস্বস্তিতে আছেন নিজ দেশে অবৈধ অর্থ উপার্জনের পর বিদেশি পাচারকারীরা।
বিলাসী জীবনযাপনের নিশ্চয়তা এবং ‘ট্যাক্স হেভেন’ সুবিধা পাওয়ার আশায় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ পাচারের জন্য এতদিন নিরাপদ গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড এবং বেশ কিছু দ্বীপরাষ্ট্র। পাচারকারীদের কাছে অবৈধ অর্থ স্থানান্তরের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছিল সিঙ্গাপুরও। এসব দেশে অর্থ পাচারকারীদের তালিকায় অনেক বাংলাদেশিও আছেন। সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত না থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ অর্থ পাচার প্রতিরোধে দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর ধারণা, বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতিবাজরা সিঙ্গাপুরে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছেন। ওই অর্থে তারা সেখানে ফ্ল্যাট, বাড়ি-গাড়ি ও বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করে বিলাসী জীবনযাপন করছেন।
গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) দেওয়া তথ্যমতে, শুধু হুন্ডি প্রক্রিয়ায় দেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে আমদানির ওভারইনভয়েসিং, রপ্তানির আন্ডারইনভয়েসিং এবং রপ্তানি আয় দেশে ফেরত না আনার মতো মূল সমস্যাগুলো যোগ করলে দেখা যাবে, প্রতিবছর কমপক্ষে দেড় লাখ কোটি টাকার সমপরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত হচ্ছে, যার অর্ধেকের মতো পাচার হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে।
অন্যদিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাচার হয়। ওই সময়ের বাজারদর অনুযায়ী (৮৫
টাকায় প্রতি ডলার) এর পরিমাণ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা ১৩৫টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে গড় অর্থ পাচারের হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত , যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা।
তবে অর্থ পাচারকারীদের এতদিন যেসব দেশ নিরাপদ ছিল, তাদের অনেকেই পাচার হয়ে আসা অর্থের বিরুদ্ধে কঠোর হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন বিশ্বব্যাপী দুর্নীতি ও সেখান থেকে অর্জিত অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দেরিতে হলেও এখন টনক নড়েছে সিঙ্গাপুর সরকারেরও। ফলে অবৈধ অর্থ অনুপ্রবেশের এই স্বর্গরাজ্যটিও আর অর্থ পাচারকারীর কাছে নিরাপদ নয়।
জানা গেছে, জো বাইডেন প্রশাসন বিশ্বব্যাপী অবৈধ অর্থ পাচার এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে যে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাইছে, সিঙ্গাপুর সরকারের ‘ক্লিন ডার্টি মানি’ অভিযান তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। মূলত মার্কিন প্রশাসনের অনুরোধেই অবৈধ অর্থের স্বর্গরাজ্য থেকে সিঙ্গাপুরকে সুরক্ষিত রাখতে অর্থ পাচারবিরোধী এমন সাঁড়াশি অভিযানে নামে দেশটির পুলিশ।
এ লক্ষ্যে তারা আগেই অর্থ পাচারকারীদের একটি সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করেছে। এখন সেই অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রথম দিনের অভিযানেই ১০০ কোটি ডলারের অর্থসম্পদ জব্দসহ ১০ দেশের বিভিন্ন দেশের পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অসমর্থিত বিভিন্ন সূত্র বলছে, বাংলাদেশি অর্থ পাচারকারী সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ওয়াকিবহাল জো বাইডেন প্রশাসন। এদের বিষয়ে সরকারকেও প্রাথমিক তথ্য দেওয়া হয়েছে। এখন অপেক্ষা, সরকার কী ব্যবস্থা নেয়, তা দেখার। এ বিষয়ক পদক্ষেপ সন্তোষজনক না হলে ওইসব ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। এর সঙ্গে গোঁদের ওপর বিষফোড়ার মতো অপেক্ষা করছে জো বাইডেন সরকারের নিষেধাজ্ঞার বৈশ্বিক প্রভাবকে ঘিরে। কারণ, মার্কিনিদের এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার সরাসরি প্রভাব পড়বে পুরো ইউরোপসহ তার অন্যান্য মিত্র দেশের নীতি পদক্ষেপের ওপর। ফলে মার্কিন সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ নিলে সেসব দেশে অর্থ পাচারকারী বাংলাদেশিদেরও সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা এবং অর্থ সম্পদ জব্দ ও শাস্তির আওতায় পড়ার সমূহ শঙ্কা রয়েছে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সম্প্রতি সাংবাদিকদের এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে দাবি করেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে আমরা কখনোই সেটি নিয়ে (নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে কি না বা কার বিরুদ্ধে দেওয়া হবে) কথা বলি না। তবে সাধারণভাবে বলতে গেলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি হাতিয়ার হতে পারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের কাছে অন্যান্য পদক্ষেপও রয়েছে, যেমন সম্পদ হিমায়িত করা বা আটকে দেওয়া এবং অংশীদার দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া—যাতে তারা মামলা করতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ তার সীমানার মধ্যে থাকা দুর্নীতিবাজদের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্মূল করতে উৎসাহিত করছি আমরা। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এমন বার্তায়ও আতঙ্কিত অর্থ পাচারকারীরা।
কানাডায় অর্থ পাচার ঠেকাতে বিদেশিদের বাড়ি কেনা বন্ধ: এদিকে অবৈধ অর্থের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নিজ ভূখণ্ডে বিদেশিদের বাড়ি কেনা বন্ধের আইন করেছে কানাডা সরকার। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তৈরি করা আইনটি চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। মূলত হাউজিং মার্কেটের ওপর চাপ কমাতে এবং কানাডিয়ানদের জন্য আবাসন আরও সাশ্রয়ী করতে এ ব্যবস্থা নেয় কানাডার সরকার, যা আগামী দুই বছর পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই আইন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আবার আলোচনায় উঠে আসে কানাডার ‘বেগমপাড়া, যা বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের অর্থ পাচারকারীদের দ্বিতীয় আবাসস্থলের একটি প্রতীকী নাম।’
কানাডা সরকারের তথ্যমতে, দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর তিন হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে সুযোগ দেওয়া হয়। তার আগে ২০০৬ থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৪৪ হাজার ১৮৬ বাংলাদেশিকে কানাডিয়ান গ্রিন ভিসা (পিআর) দেওয়া হয়।
অভিযোগ আছে, যেসব বাংলাদেশি বিনিয়োগকারী কোটায় কানাডায় পিআরের সুযোগ পেয়েছেন, তাদের একটা অংশ মূলত অবৈধভাবে অর্জিত টাকা কানাডায় নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়াতেও অভিন্ন আইন: অর্থ পাচারবিরোধী ব্যবস্থা নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়াও। সেখানেও গত কয়েক বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়াতেও বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের প্রায় সবাই বিদেশি শিক্ষার্থী। এদের কারও কারও পেট্রোলপাম্প ও কফিশপসহ অন্যান্য ব্যবসা আছে।
যুক্তরাজ্যে ৯৮ বাড়ির সন্ধান: অতি সম্প্রতি সেন্ট্রাল লন্ডনের কেনসিংটনের মতো বিলাসবহুল এলাকায়ও বাংলাদেশিদের ৯৮টি বাড়ির সন্ধান মিলেছে। যুক্তরাজ্যের হাউস বিল্ডিং শিল্প খাতবিষয়ক সাময়িকী শোহাউস জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, লন্ডনের সম্পত্তিতে বিনিয়োগকারী শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় নবম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। যাদের বেশিরভাগই অবৈধ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ থেকে অর্থ নিয়ে সেখানে বাড়ি-গাড়ি কিনেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম ৮ হাজার বাংলাদেশির: সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকার ‘মাই সেকেন্ড হোম’ প্রকল্প চালু করেছে। এর আওতায় এখন পর্যন্ত আট হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি সেকেন্ড হোম সুবিধা নিয়ে মালয়েশিয়ায় ফ্ল্যাট কিনে বসবাস করছেন বলে দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বিদেশি নাগরিকদের স্থায়ী বসবাস বিবেচেনায় বাংলাদেশিদের অবস্থান তৃতীয়। দুদক সূত্রে জানা যায়, এর মধ্যে ৬৪৮ বিশিষ্ট ব্যক্তিও রয়েছেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৮৭, বিএনপি-জামায়াতের ৯৬ এবং বাকি ২৬৫ জন সুবিধাভোগী শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও আমলা। গত পাঁচ বছরে অন্তত ৪ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার মালয়েশিয়ায় পাচার হয়েছে।
এবার অর্থ পাচারের নতুন দুই রুট: এবার অর্থ পাচারের নতুন দুই রুট শনাক্ত হয়েছে। এগুলো হলো মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব অমিরাত এবং আফ্রিকার অনুন্নত কিছু দেশ। ধনী দেশগুলো আবাসন সংকটে বিনিয়োগ সুবিধা কমিয়ে দেওয়ার বিপরীতে এসব দেশ বিদেশিদের বৈধ ও অবৈধ পুঁজি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে ‘গোল্ডেন ভিসা’ পদ্ধতি চালু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০১৯ সালে এ গোল্ডেন ভিসার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের অসংখ্য ব্যবসায়ী গত সাড়ে তিন বছর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার পাশাপাশি দুবাইয়ে পুঁজি পাচারকে আকর্ষণীয় বিষয় হিসেবে বেছে নিতে শুরু করেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং বিশেষত দুবাইয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং নির্মাণ কার্যক্রমের শাখা খোলা এখন বাংলাদেশের মধ্যম পুঁজিপতিদের কাছেও ক্রমেই আকর্ষণীয় ও বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যেখানে কেউ ২০ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করলে বা আমিরাতের কোনো ব্যাংকে জমা রাখলে তাকে ১০ বছরের জন্য কোনো প্রশ্ন ছাড়া আমিরাতে অবাধে প্রবেশের ভিসা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়।
বাংলাদেশিদের তথ্য জানার চেষ্টা নেই সরকারের:
দেশে দেশে অর্থ পাচারবিরোধী তৎপরতা শুরু হলেও সেই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার উদ্যোগ নেই বাংলাদেশের। বিশেষ করে সেসব দেশে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হওয়া কোনো অর্থ চিহ্নিত হয়েছে কি না এবং হয়ে থাকলে তা কীভাবে ফেরত আনা যাবে—সে বিষয়ে এখনো তৎপর হয়নি সরকারের কোনো সংস্থা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেসবাউল হক কালবেলাকে জানান, ‘বিষয়টি বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটই (বিএফআইইউ) ভালো বলতে পারবে। কারণ, এফআইইউর সঙ্গে বিএফআইইউর পারস্পরিক সহযোগিতা চুক্তি আছে। সে অনুযায়ী তারা যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে এগমন্ড গ্রুপের সদস্য হিসেবে কোনো তথ্য চাইতেই পারে। এখন সিঙ্গাপুরে যদি বাংলাদেশিদের অবৈধ অর্থ সম্পদ জব্দের ঘটনা ঘটে তাহলে তো এ ধরনের তথ্য বাংলাদেশ অবশ্যই চাইবে।’
এখন পর্যন্ত সিঙ্গাপুর সরকারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়েছে কি না—জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) দায়িত্বশীল একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ‘দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব বিএফআইইউর নয়। এর দায়িত্ব ল এনফোর্সমেন্ট অথরিটি হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুদক এবং সিআইডির। ক্ষেত্রবিশেষে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং এনবিআরের। তারাই মূলত প্রথম উদ্যোগটি নেবে। এরপর যদি আমাদের সহায়তা চাওয়া হয়, তাহলে আমরা সহযোগিতা দেব।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব মো. মাহবুব হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের তরফ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। এটা তো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হবে। যদি ওখান থেকে কোনো কিছু আসে, তখন সেটি কমিশন দেখবে।’
দুদক স্বপ্রণোদিত হয়ে যোগাযোগ করছে কি না বা করার চিন্তা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, ‘বিদেশের কোনো ইস্যুতে তো আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজ করতে পারি না। যদি তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমাদের কাছে কোনো তথ্য চায়, তখন আমরা বিষয়টি দেখতে পারি।’
এ বিষয়ে জানতে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে এখনো আমি ওয়াকিবহাল নই। না জেনে কোনো কথা বলতে পারব না।’
‘কীভাবে বলব’ মন্তব্য করে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি কালবেলাকে জানান, দেখি সামনে অর্থ পাচার ইস্যুতে বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। তারপর অবস্থান বলতে পারব।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অবস্থান জানতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহর দপ্তরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল নম্বরে অনেকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। পরে খুদেবার্তা পাঠিয়েও জবাব পাওয়া যায়নি। পরে তার একান্ত সচিব শিহাব উদ্দিন আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালবেলাকে জানান, ‘স্যার (সচিব) কোনো গণমাধ্যমে কথা বলতে আগ্রহী নন।’
মন্তব্য করুন