ক্ষমতা ছাড়ার আগে নেতাকর্মীদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য দুদিন সময় চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে পদত্যাগের জন্য ৪৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়। এর পরই বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকেই ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে একটি সামরিক উড়োজাহাজে করে দেশ ছাড়েন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে নিয়ে যাত্রা করে। দুই বোনকে বহনকারী সামরিক যানটির চালক ছিলেন বিমানবাহিনীর এয়ার কমডোর আব্বাস। তিনি ১০১ স্কোয়াড্রনের সদস্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল ৫টা ৩৬ মিনিটে শেখ হাসিনাকে বহনকারী উড়োজাহাজ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কাছের গাজিয়াবাদে (উত্তর প্রদেশ) হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এ সময় ভারতের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।
একটি সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা কয়েকদিন দিল্লিতে থাকবেন। এরপর তিনি লন্ডনে যাবেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের জন্য ৪৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের নিরাপদে দেশের বাইরে পাঠাতে তিনি সেনাবাহিনীর কাছে দুদিন সময় চান। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি। কারণ সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকামুখী ছাত্র-জনতার ঢল নামে। ঢাকার চারপাশ থেকে লাখ লাখ মানুষ গণভবনমুখী যাত্রা শুরু করে। সেক্ষেত্রে গণভবন রক্ষা করতে হলে সেনাবাহিনীকে রক্তপাত করতে হতো। তাই সেই ঝুঁকি না নিয়ে শেখ হাসিনাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, দেশ ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে একটি ভাষণ দিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল যাওয়ার আগে ভাষণটি রেকর্ড করা হবে এবং পরে তা প্রচার করা হবে। কিন্তু তাকে সেই সুযোগও দেওয়া হয়নি।
ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা তাকে উদ্ধারের জন্য নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাকে উদ্ধারে ভারত থেকে বাংলাদেশে বিমান পাঠানো হবে না বলে জানায় নয়াদিল্লি। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশের আকাশসীমায় ভারত কোনো বিমান পাঠাতে পারে না। কারণ তাতে আইন লঙ্ঘিত হতে পারে।
শেখ হাসিনাকে যে কোনো উপায়ে আগে ভারতের সীমানায় পৌঁছাতে পারলে তাকে সহায়তা করা হবে বলে জানায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ দিল্লিতে থাকেন। সে কারণেই তিনি প্রাথমিকভাবে দিল্লিতে গেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।