বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৭ এএম
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার ক্ষতি

চলমান সংকট
প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার ক্ষতি

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন ঘিরে সার্বিক পরিস্থিতি জনজীবন ও গোটা অর্থনীতিতে রেখে গেছে অপূরণীয় ক্ষতির চিহ্ন।

আসলে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখন সরকারি-বেসরকারি দুভাবেই নিরূপণের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্টরা এই ক্ষতিকে প্রাথমিকভাবে দুভাবে চিহ্নিত করেছেন। এক. শান্তিপূর্ণ আন্দোলনটি সহিংসতা দিয়ে শেষ হওয়ার আগে একদিকে সারা দেশে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অবকাঠামো ও স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ হয়েছে। এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়, সংস্থা, বিভাগ কিংবা অধিদপ্তর তাদের সার্বিক ক্ষতি নিরূপণে কমিটি গঠন করেছেন এবং কোনো কোনো সংস্থা তার প্রাথমিক ক্ষতির হিসাব এরই মধ্যে প্রকাশও করেছেন। দুই. অন্যদিকে সহিংস আন্দোলন দমনে সরকারের কঠোর অবস্থান, কারফিউ জারি, সারা দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা, সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক-বীমা শেয়ারবাজার, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পকারখানা বন্ধ থাকার নেতিবাচক প্রভাবও পড়েছে সার্বিক অর্থনীতিতে। সব মিলিয়ে এ দুইয়ের ক্ষতি প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এটি ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ব্যয়ের সঙ্গে তুলনা করলে পুরো ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ সপ্তমাংশের সমান। তবে এর সঙ্গে যতসংখ্যক মৃত্যু হয়েছে, তাদের জীবদ্দশার আয় বিবেচনায় নিলে এ ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে আরও বেশি।

জানা গেছে, সুযোগসন্ধানী একটি মহল ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র—অতি সুপরিকল্পিতভাবে শিক্ষার্থীদের এই অহিংস আন্দোলনে ঢুকে পড়েছে এবং উদ্দেশ্য হাসিলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনটি শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ সহিংসতা ও ব্যাপক প্রাণহানিতে গড়িয়েছে। অন্যদিকে একই কারণে গণতান্ত্রিক সরকারকেও রীতি ভেঙে কারফিউ জারির মতো পরিস্থিতিতে যেতে বাধ্য করেছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ তৎপরতায় এখন পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হলেও তার আগে আট দিন ধরে দেশে অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রায় বন্ধ ছিল, যা দেশের নাজুক অর্থনীতিকে আরও খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রপ্তানি কমে যাওয়া ও ডলার সংকটের কারণে দেশের অর্থনীতি যখন গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, ঠিক সে মুহূর্তে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে তৈরি হওয়া সহিংসতায় এই বিশাল ক্ষতি দেশকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে।

সরকার, বেসরকারি খাত ও সাধারণ মানুষকেই এর দায় বহন করতে হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

গত কয়েকদিনে নাশকতার ক্ষতচিহ্ন এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সারা দেশে। দেশজুড়ে সন্ত্রাসীদের হামলা, লুটপাট ছাড়াও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় অর্থনীতিতে এই ভয়াবহ ক্ষতির প্রভাব পড়েছে। ইন্টারনেটসেবা বন্ধ থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে গোটা ই-কমার্স খাত। এ ছাড়া দ্রুতগতির ফোরজি ইন্টারনেটসেবা বন্ধ থাকায় ইন্টারনেটভিত্তিক মোবাইল আর্থিকসেবাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। সব মিলিয়ে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে। বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া ছাড়াও দেশে মোবাইল ব্যাংকিংসহ সব ধরনের লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। সংকট তৈরি হয় বৈদেশিক বাণিজ্যেও। বিশেষ করে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা থেকে বিশ্বের সঙ্গে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

টানা আট দিনের অনভিপ্রেত পরিস্থিতিতে সার্বিক অর্থনীতির কতটা ক্ষতি হলো জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর কালবেলা জানান, এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় আমার হিসাবে প্রতিদিন দেশের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে গত আট দিন প্রায় অচলাবস্থা থাকায় দেশের অন্তত ১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে এই অর্থনীতিবিদ জানান, ‘বর্তমান দেশে প্রতিদিন প্রায় ১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড রয়েছে। তবে এই আন্দোলন ও সহিংসতায় একমাত্র কৃষি ছাড়া কলকারখানা, বিপণিবিতান, দোকানপাট—সবকিছু কার্যত বন্ধ ছিল। ফলে এই ক্ষতির পরিমাণও বেশি হবে। এমনিতে সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক অবস্থা ভঙ্গুর, নতুন এ পরিস্থিতি অর্থনীতিতে নিঃসন্দেহে চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে মানুষের আয় যেমন কমছে, সরকারের আয় তেমন কমছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি আরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরেছে বলে মনে করেন তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় সহিংসতা। এ অবস্থায় সেদিন রাতেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। এতে ইন্টারনেটনির্ভর সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডই বন্ধ হয়ে যায়। সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হলে গত শুক্রবার রাত থেকে দেশব্যাপী কারফিউ জারি করে সরকার। মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। সেইসঙ্গে টানা তিন দিন সাধারণ ছুটির কবলে পড়ে দেশ। বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের কলকারখানা ও যানবাহন চলাচল। এসবের আর্থিক ক্ষত এখন স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান মনে করেন, এ পরিস্থিতিতে সার্বিক অর্থনীতিতে এখন একটা অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।

দেশে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত হলো তৈরি পোশাকশিল্প। এ প্রসঙ্গে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান কচি জানান, এই কয়েক দিনের স্থবিরতায় প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বিজিএমইএর সরাসরি রপ্তানিতে ক্ষতি হয়েছে ৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। শ্রমিকদের বসিয়ে বেতন দিতে হবে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া এক্সেসরিজ, বোতাম, সুতা খাতে লোকসান হয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে যতটা আর্থিক ক্ষতি, তার চেয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ইমেজ নষ্ট হয়েছে বেশি।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, একদিন কারখানা বন্ধ থাকলে ১৬ কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়, যা দেশীয় মুদ্রায় ১ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। যদিও নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও পোশাক কারখানাগুলো গত বুধবার থেকে পুনরায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে এ মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ হলো, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রপ্তানি চালান পাঠানো। আশার খবর হলো, গতকাল বন্দরের কার্যক্রম শুরুর পর আমদানি ও রপ্তানি কনটেইনার শিপমেন্টের গতি বেড়েছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ চালু হওয়ায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় এখন কারখানাগুলো কাঁচামাল সংকটে পড়েছে।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, গত ১৭ জুলাই থেকে সারা দেশে বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল ফোনভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা এবং ১৮ জুলাই থেকে সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। এতে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সঙ্গে ইন্টারনেট সুবিধাভোগী আরও ৫ কোটি গ্রাহক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পকারখানা, চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যাংক, বীমা, সফটওয়্যার শিল্পে ধস নেমেছে। একই ভাবে টেলিযোগাযোগ শিল্পে ৩০ শতাংশ ব্যবসা কমেছে। সরকারি সব ইউটিলিটি গ্রাহকের বিশেষ করে গ্যাস, বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, এটিএম বুথে টাকা উত্তোলন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় ব্যাপক বিপর্যয় নেমে এসেছে। সব মিলিয়ে দৈনিক গ্রাহকদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বলেও এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন তিনি।

এ ছাড়া ইন্টারনেট না থাকায় ই-কমার্স খাতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, গত ছয় দিনে এ খাতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪২০ কোটি টাকা। দেশে সাড়ে ৬ লাখের মতো ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। তাদের দিনে অন্তত ১৩-১৪ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। আর বিপিও খাতের ক্ষতি আরও বেশি। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র বলছে, এক দিনে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বাবদ বন্দরের আয় কমেছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ও বাল্ক পণ্যেও প্রায় সমপরিমাণ রাজস্ব হারিয়েছে। ফলে প্রতিদিন বন্দরের আয় কমেছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। গত পাঁচ দিনে এই সংখ্যা প্রায় ২৫ কোটি টাকা হতে পারে। আর পাঁচ দিনে বন্দর ও কাস্টমসের ক্ষতি প্রায় ১ হাজার ১০৮ কোটি টাকা। স্টিল খাতও অচলাবস্থার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এই খাতের উদ্যোক্তারা জানান, স্টিল খাতের দিনে ক্ষতি প্রায় ২০০ কোটি টাকা। ফলে গত ছয় দিনে এই খাতের ক্ষতির অঙ্ক প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, ‘বন্দরের ক্ষতিপূরণ, ব্যাংক ঋণের সুদ, ইউটিলিটি খরচ, বেতন-ভাতাসহ নানান খাতের খরচ মিলিয়ে প্রতিদিন তাদের ক্ষতি হয় প্রায় ২০০ কোটি টাকা। বিমানে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনসেবাও ব্যাহত হয়। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, কার্গো বিমানে পণ্য পরিবহন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না হওয়ায় এই খাতে দিনে অন্তত ৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া দেশের প্রায় ৪ হাজার ট্রাভেল এজেন্সির বিমানের টিকিট কাটা ব্যাহত হওয়ায় যাত্রীর টিকিট খাতেই ক্ষতি হয় দিনে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। গত ছয় দিনে সিরামিক খাতের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। সিমেন্ট খাতে দিনে ক্ষতি হয়েছে অন্তত ১০০ কোটি টাকা। ফলে ছয় দিনে এই খাতের ক্ষতি প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। এদিকে দেশের পুঁজিবাজারও ক্ষতির মুখে। গত সপ্তাহের হিসাব ধরলে, ডিএসইতে দিনে গড়ে লেনদেন হয় ৫৫৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এ পরিমাণ লেনদেনও হয়নি। এ থেকে সরকার, বিনিয়োগকারী, ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিভিন্ন কর, ফি ও সেবামাশুল হিসেবে যে আয় হওয়ার কথা, সেটিও হয়নি।

সরকারি স্থাপনা ক্ষতি প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে ক্ষতিগ্রস্ত সব ধরনের অবকাঠামো ও স্থাপনা পুনর্নির্মাণে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছে সরকারের দায়িত্বশীল একটি সূত্র। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বিচ্ছিন্নভাবে পাওয়া সব হিসাব তাদের কাছে এলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ তারা জানতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অন্তত এক হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর-কার্যালয়ের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, হামলা-অগ্নিসংযোগে শুধু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও বিটিভিরই কমপক্ষে ৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ ছাড়া গত ১৯ জুলাই মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্টেশন দুটি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে চেষ্টা চলছে।

সেতু বিভাগের ৪০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার বনানীর সেতু ভবনে হামলাকারীরা অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয় ৫৫টি গাড়ি। এসব গাড়ির মূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদাউস বলেন, সব মিলিয়ে এই অগ্নিকাণ্ডে সেতু বিভাগের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকার হতে পারে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত পাঁচ দিনে পাঁচটি আঞ্চলিক অফিসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত ২৯টি ভারী গাড়ি, চারটি মাইক্রোবাস, একটি জিপ ও মোটরসাইকেল পুড়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙচুর করা হয়েছে আরও ৩৪টি গাড়ি। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে দুটি কমিউনিটি সেন্টার, কাউন্সিল অফিস, রামপুরা স্ট্রম স্যুয়ারেজ পাম্প, রোড মিডিয়ান, ফুট ওভারব্রিজ, এক্সেলেটর, এলইডি লাইট এবং অসংখ্য গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ডিএনসিসির ২০৫ কোটি টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পদ্মা সেতুতে কারফিউয়ের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে পারাপার হচ্ছে প্রায় তিন হাজার যানবাহন। এরই মধ্যে টোল আদায় হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ টাকা। এতে প্রতিদিন পদ্মা সেতুতে রাজস্ব কমেছে প্রায় ২ কোটি টাকা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ছাত্র আন্দোলনের নেতাসহ ২ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা

নির্বাচন কবে হতে পারে, জানালেন আসিফ নজরুল

মুক্তি পেল দুই সিনেমা

মধ্যরাতে ৩০০ ফিট সড়কে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান

নোয়াখালীতে দখলমুক্ত ফুটপাত, ব্যবসায়ীদের জরিমানা

একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী সুজেয় শ্যাম আর নেই

ছিলেন জন্মগত বয়রা, গ্রেনেড হামলার ভুক্তভোগী সেজে ‘আওয়ামী গডফাদার’

গাজার যোদ্ধাদের প্রধান নিহত, যা বলছে পশ্চিমা বিশ্ব

ত্রাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ যুবদলকর্মীর বিরুদ্ধে

মন খারাপ হলেই বিল্লাল দখলে নিতেন অন্যের সম্পদ

১০

কে এই ইয়াহিয়া সিনওয়ার

১১

খাতা না দেখেই মনগড়া রেজাল্ট দিয়েছে, অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

১২

দেশের ৬ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

১৩

চিলমারীতে নদীতে ৫০০ হেক্টর জমি, নিঃস্ব ৩০০ পরিবার

১৪

বায়তুল মোকাররম মসজিদে নতুন খতিব নিযুক্ত 

১৫

১৮ অক্টোবর : ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা

১৬

১৮ অক্টোবর : নামাজের সময়সূচি

১৭

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

১৮

বেরোবিতে ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

১৯

ধর্মপাশায় কালবেলার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

২০
X