দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ভিড়ে সুসংবাদ এলো ভোজ্যতেলে। সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ১০ টাকা এবং পাম অয়েলের দাম প্রতি লিটারে ২ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল রোববার দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক টাস্কফোর্সের সপ্তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, এখন থেকে প্রতি লিটার প্যাকেটজাত সয়াবিন ১৮৯ আর খোলা সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা দরে বিক্রি করবে কোম্পানিগুলো। একই সঙ্গে পাম অয়েলের দাম প্রতি লিটার খুচরা পর্যায়ে ১৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল থেকেই ভোজ্যতেলের দাম কমানোর জন্য আমরা বলেছি। আশা করি, দু-তিন দিনের মধ্যে নতুন দামে বাজারে তেল পাওয়া যাবে।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ভোজ্যতেলের দাম আরও কমানো যায় কি না, তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সম্ভব হলে ঈদের আগে দাম আরও কমানো হবে। পেঁয়াজের দাম বাজারে অলরেডি কমে এসেছে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৫ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে এসেছে মাত্র ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ। ঈদের আগে আরও ব্যাপকহারে পেঁয়াজ বাংলাদেশে ঢুকবে। তখন দাম আরও কমবে। তবে আদার সংকট আছে। প্রধান সাপ্লায়ার চীনে এর ঘাটতি রয়েছে। বিকল্প বাজার হিসেবে মিয়ানমার থেকে আমদানি করে সমাধানের চেষ্টা চলছে। মূলত ঘাটতির কারণে আদার দাম কিছুটা বেশি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে বাণিজ্য সচিব বলেন, গত এক বছরে চাহিদা বিবেচনায় দেশে চিনি, গম ও আদা ছাড়া অন্য কোনো পণ্যে সরবরাহে ঘাটতি নেই। ঈদুল আজহায় যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে, সেগুলোর দাম স্থিতিশীল রাখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্যান্য পণ্যের দামও স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে কথা হয়েছে।
তপন কান্তি ঘোষ জানান, দেশে এক বছরের ব্যবধানে গম আমদানি ২৪ লাখ টন এবং চিনি আমদানি কমেছে ৭২ হাজার টন। আমদানি কম হওয়ায় দামে প্রভাব পড়েছে বাজারে। দেশের চিনি চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম নির্ধারণ করতে হয়। বেশ কিছুদিন ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম স্থির রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেই সঙ্গে সঙ্গে দেশে সেই পণ্যের দাম কমানো সম্ভব হয় না। কারণ, আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে ডলারের দাম একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া শুল্কহার, অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যয় মূল্য নির্ধারণে প্রতিফলন ঘটে। ফলে বাজারে যে দাম দেওয়া হয়েছে, সরবরাহ ঘাটতির কারণে সেটিও ঠিক রাখা যাচ্ছে না। তবে আশার খবর হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম কমে এসেছে। ফলে চিনির বিষয়ে আমরা শিগগির সিদ্ধান্ত নেব।
বাণিজ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন