ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হল থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় অভিযোগ করে এবার প্রাধ্যক্ষের সামনে হেনস্তার শিকার হয়েছেন এক শিক্ষার্থী। গতকাল সোমবার প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে ডেকে তাকে ভর্ৎসনা করা হয়। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের নেতারা প্রাধ্যক্ষের সামনেই তার মোবাইল ফোন চেক করেন। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ভয় পাচ্ছেন আবারও হলে উঠতে।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম মাহাদী হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি লালন শাহ হলের ৪২৮ নম্বর কক্ষে আসন বরাদ্দ পেয়ে উঠেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে হলের বৈধ সিট থেকে বের করে দেন। এ ঘটনার পর শনিবার হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরের দিন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে হল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ডেকে হলে তুলে দেওয়ার আশ্বাস দেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। গতকাল প্রাধ্যক্ষের ডাকেই ক্যাম্পাসে আসেন তিনি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান বলেন, ক্যাম্পাসে গেলে প্রাধ্যক্ষ স্যার আমাকে বলেন, বিষয়টি বড় করা তোমার ঠিক হয়নি। পরে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে আমাকে সিটে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়ে শঙ্কা থাকায় আমি প্রাধ্যক্ষের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানাই। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবি করেন। পরে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ফেসবুকে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট কোনো পোস্ট আছে কি না, তা দেখতে ওই শিক্ষার্থীর ফোন চেক করেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
মাহাদী বলেন, আমি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। বারবার নিরাপত্তা চাইলে হল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার ইস্যুটাকে পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করে। প্রাধ্যক্ষ শুধু সিটে তুলে দিয়েছেন, আমার নিরাপত্তার বিষয়টি তিনি স্কিপ করেছেন। এমন নিরাপত্তাহীনভাবে হলে উঠতে চাচ্ছি না।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষার্থীকে প্রভোস্ট কতটুকু নিরাপত্তা দিতে পারে। আমি তাকে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে তাকে সিটে তুলে দিয়েছি। এ ছাড়া কোনো সমস্যা হলে তৎক্ষণাৎ জানাতে বলেছি। শাখা ছাত্রলীগের উপস্থিতি ও ফোন চেক করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওই হলে থাকেন। এ ছাড়া তিনি নিজেকে ছাত্রলীগ সভাপতির অনুসারী বলে দাবি করেছেন। এ ক্ষেত্রে তারা সেখানে থাকতেই পারে। ভুক্তভোগী মাহাদী ছাত্রলীগ করে কি না, জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি তন্ময় সাহা টনি বলেন, ছেলেটিকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।