নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি আঞ্চলিক মহাসড়কের বিরিশিরি থেকে শান্তিপুর এলাকা পর্যন্ত বেহাল সড়কে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ। এই দুর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়কের খানাখন্দ, কাদা ও যানজট। ভেজা বালুভর্তি ওভারলোড ট্রাক চলার কারণে সড়ক নষ্ট হয়ে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত। এতে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকছে। অন্যদিকে এসব বালুর ট্রাক থেকে চুঁইয়ে পড়া পানিতে সবসময়ই সড়কটি কাদাপানিতে একাকার থাকে।
এ সড়ক দিয়ে যেমন যেতে হয় জেলা শহর ও বিভাগীয় শহরে, অন্য পথে আসতে হয় উপজেলা সদর, হাসপাতাল, অফিস-আদালতসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তা ছাড়া সোমেশ্বরী নদী, সাদামাটির পাহাড় ও পাহাড়ি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে সারা বছরই বেড়াতে আসেন বিপুলসংখ্যক পর্যটক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদেরও।
সরেজমিন দেখা গেছে, এ পথে উপজেলার ১২ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কই খানাখন্দে আর গর্তে বেহাল। আর পুরো সড়কে কাদা আর কাদা। যেন পা ফেলাই দায়। ওই সড়কটি দিয়েই শত শত যানবাহনসহ মানুষ চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে।
এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) আওতায় সড়ক সংস্কারের অংশ হিসেবে ২ হাজার ৪০০ মিটার পৃথক পৃথক স্থানে আরসিসি সড়ক নির্মাণকাজ হচ্ছে। তবে সড়কের কিছু স্থানে এক পাশের কাজ শেষ হলেও ফেলে রাখা হয়েছে অন্য পাশের অংশটি। এতে সড়কের এক পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচলে দীর্ঘ সময়ের যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অসংখ্য যানবাহন চলাচল থাকায় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে এক সঙ্গে দুপাশের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভেজা ও অতিরিক্ত বালু বহন করায় সড়কের বারোটা বেজে গেছে। সব সময় কাদায় ডুবে এবং দীর্ঘ সময় যানজট লেগে থাকছে। এতে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, কাদা আর ট্রাকের জ্যামে অতিষ্ঠ সবাই। আমার বাড়ি লক্ষ্মীপুর থেকে দুর্গাপুর যেতে ২০ মিনিটের রাস্তা এখন ২ ঘণ্টাও বেশি লাগে। এই দুরাবস্থা যেন দেখার কেউ নেই।
আরেক স্থানীয় আব্দুল আলী জানান, সড়কটি দিয়ে রোগী নিয়ে উপজেলা সদর হাসপাতালে যেতে হয়। তা ছাড়া, জরুরি রোগীদের ময়মনসিংহ নিতে হয়। কিন্তু বেহাল সড়কের কারণে সময় মতো পৌঁছানোই যায় না।
এইচএসসি পরীক্ষার্থী উজ্জ্বল মিয়া জানায়, বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় বের হই। সড়কের এই পরিস্থিতিতে অটোচালিত রিকশাও যেতে চায় না। যার কারণে খুব কষ্ট হচ্ছে। আর কতক্ষণে কেন্দ্রে পৌঁছাবো এই টেনশনে থাকি।
নেত্রকোনা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আলনূর সালেহীন জানান, ওই সড়কে বালুর ট্রাক চলাচলে রাস্তা টিকিয়ে রাখায় মুশকিল হয়ে পড়েছে। মানুষের কষ্ট তো থাকছেই। সড়কের পৃথক স্থানে মোট ২ হাজার ৪০০ মিটার আরসিসির কাজ চলমান। তিনি আরও জানান, সড়কের এক পাশের কাজ শেষ করে ২৮ দিন পর অন্য পাশের কাজ ধরতে হচ্ছে। এ সড়কে অনেক গাড়ি চলাচল করছে। তাই সড়ক বন্ধ রেখে কাজ করা যায় না।
মন্তব্য করুন