সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক খাত। সুদহার বাড়ানোর পদক্ষেপে সংকট প্রকট হতে পারে—এমন আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও নতুন করে এ হার বাড়াল দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত বুধবার সুদহার দশমিক ২৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। ফলে দেশটিতে সুদহার ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫ শতাংশ হলো।
এ নিয়ে টানা ৯ বার সুদহার বাড়াল যুক্তরাষ্ট্র। আর ২০০৭ সালের পর এটি সর্বোচ্চ সুদহার। এক বছর আগেও এ হার ছিল শূন্যের কাছাকাছি। বাজার স্থিতিশীল করতে গত বছর থেকে দফায় দফায় সুদহার বাড়াচ্ছে ফেড; কিন্তু এই ধারাবাহিক সুদহার বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়ছে দেশটির ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর। এ পরিস্থিতিতে চলতি মাসেই বন্ধ হয়ে গেছে সিলিকন ভ্যালি ও সিগনেচার ব্যাংক। এখানেই শেষ নয়। সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্ক প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ঝুঁকিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮৬ ব্যাংক। এতে বলা হয়, বীমাবিহীন আমানতকারীরা আতঙ্কিত হয়ে ব্যাংকগুলো থেকে আমানত তুলে নিতে পারেন। আর বিভিন্ন ব্যাংকের কিনে রাখা বন্ডগুলোর দাম সুদহার বৃদ্ধির কারণে কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোর কথা ভাবছে। অনেকে বাড়াচ্ছেও।
গত সপ্তাহে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের মূল সুদহার দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়েছে। আর যুক্তরাজ্যের গতকাল ফেব্রুয়ারির মূল্যস্ফীতির খতিয়ান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, গত মাসে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। এর প্রেক্ষাপটে সুদহার বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে পারে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড।
সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধের ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন’ বলে উল্লেখ করেছেন ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল। তিনি বলেন, আমাদের অর্থব্যবস্থা শক্তিশালী রয়েছে। এখন আমরা মূল্যস্ফীতির লড়াইকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের মূল্যস্ফীতির হার যে কোনোভাবেই ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। আর এর জন্য আর্থিক খাতে আমাদের মূল্য দিতে হবে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি কমাতে না পারলে যে ক্ষতি হবে, তার মূল্য আরও অনেক বেশি।