আট মাসের ব্যবধানে আবারও বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমিয়েছে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা ফিচ রেটিংস। বাংলাদেশের ফরেন কারেন্সি ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) ‘বিবি মাইনাস’ থেকে ‘বি প্লাস’ করেছে বিশ্বের অন্যতম প্রধান এ ঋণমান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান। যদিও দেশের অর্থনীতি-সম্পর্কিত পূর্বাভাস স্থিতিশীল রেখেছে সংস্থাটি। গতকাল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। সেই প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে ফিচ রেটিংস।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের রেটিং বি প্লাসে নামিয়ে আনা আসলে দেশটির অর্থনীতির বহিঃস্থ খাতের অবনতির প্রতিফলন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের পর থেকে বৈদেশিক মুদ্রার পতন ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়। ঠেকানো যায়নি ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনও। সম্প্রতি ক্রলিং পেগ নীতি চালু করলেও তা বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে কতটুকু কার্যকর হবে, সেটাও অনিশ্চিত। ফিচ রেটিংস বলছে, দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান অবনমন করা হলেও বাংলাদেশের স্বল্পমেয়াদি ঋণমান ‘বি’ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় মুদ্রায় দীর্ঘমেয়াদি আইডিআর অবনমন করে ‘বিবি মাইনাস’ থেকে ‘বি প্লাস’; স্থানীয় মুদ্রায় স্বল্পমেয়াদি আইডিআর বি-তে অপরিবর্তিত এবং দেশের সীমা বা কান্ট্রি সিলিং বিবি মাইনাস থেকে অবনমন করে বি প্লাস করা হয়েছে। একটি দেশের দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি ঋণমান নির্ধারণের ক্ষেত্রে ফিচ এ কাঠামো ব্যবহার করে। গত সেপ্টেম্বরে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক (বিবি মাইনাস) করেছিল ফিচ। বিশ্বে যে তিনটি ঋণমান নির্ধারণী প্রতিষ্ঠান একত্রে ‘বিগ থ্রি’ হিসেবে পরিচিতি, ফিচ তাদের একটি। বাকি দুটি মুডিস ও এসঅ্যান্ডপি।
ফিচ জানাচ্ছে, অদূরভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকবে। এটা যে কারণে সম্ভব হবে, সেটা হলো বহিস্থ অর্থায়নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতো নির্ভরযোগ্য ঋণদাতার সঙ্গে চুক্তি, সংস্থাটির নির্দেশিত সংস্কারকাজে হাত দেওয়া ও ব্যাংকিং খাতের সমস্যা মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া, সরকারি ঋণ সীমার মধ্যে রাখা এবং মধ্য মেয়াদে প্রবৃদ্ধির ভালো সম্ভাবনা।