ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ছোট্ট একটি বক্তব্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঝড় তুলেছেন দেশটির কংগ্রেসের মুসলিম সদস্য ইলহান ওমর। তার তীক্ষ্ণ এ বক্তব্য ইনস্টাগ্রামে মুহূর্তেই ১২ মিলিয়ন ভিউ হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ তা সরিয়ে ফেলেছে।
তবে কিছু মানুষ সেই ভিডিও ডাউনলোড করতে সক্ষম হয়েছেন। এবার ইনস্ট্রাগ্রাম কর্তৃপক্ষ বলছে ইলহানের এই বক্তব্য ‘সরিয়ে দাও’ আর মানবতাবাদীরা বলছেন ‘ছড়িয়ে দাও’।
বিশেষ করে বিশ্বের মুসলিমরা ইলহানের এই বক্তব্য দ্রুত ছড়িয়ে দিতে বেশ তৎপর।
ওই বক্তব্যে ইলহান ওমর বলেন, তিনি দুঃখিত- কংগ্রেসের ৫৩৫ জন সদস্য এক নিঃশ্বাসে, ইসরায়েলের অভিজ্ঞতার ভয়াবহতার সম্পূর্ণ নিন্দা করতে একত্রিত হতে পেরেছিলেন। কিন্তু এখন মুষ্টিমেয় কয়েকজন আছেন- যারা তাদের দাদা-দাদিকে বলতে পারেন তারা ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যার নিন্দা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে প্রথম হিজাব পরা ইলহান ওমর নিজেও একজন শরণার্থী ছিলেন। তাই ফিলিস্তিনিদের দুঃখটা তিনি নিজের মতো করে বোঝেনে। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেস সদস্য রাশিদা তায়্যিবা তেমন ভূমিকা রাখতে না পারলেও ঝড় তুলেছেন ইলহান।
ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তার সরব অবস্থান মার্কিন এস্টাবলিশমেন্টকে টলাতে না পারলেও তার ছোট্র এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
ইলহান মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম সোমালি-আমেরিকান আইনপ্রণেতা, প্রথম সাবেক আফ্রিকান শরণার্থী। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইলহানকে এক ভোটের ব্যবধানে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়।
তখন তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তার মধ্যে আছে- তিনি ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্য দিয়েছিলেন। ওই সময় ইলহান বলেছিলেন, আফ্রিকান মুসলিম নারী পরিচয়ের কারণে তাকে নিশানা করা হয়েছে।
এরপর চলতি বছরের মার্চ মাসে ইলহান ওমর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অভিযানের জন্য যক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছিলেন।
তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিন জনগণের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র সবুজ সংকেত দিয়েছে। কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই ইসরায়েলের কাছে অতিরিক্ত অস্ত্র সাহায্য পাঠানোর জন্য তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনেরও কড়া সমালোচনা করেছিলেন।
ওই সময় মার্কিন এই আইনপ্রণেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিকার অর্থে মানবতাকে রক্ষা করতে চায়, গাজার নিরপরাধ মানুষদের বাঁচাতে চায়, পণবন্দিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে চায় এবং সর্বোপরি শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাহলে সবার আগে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অভিযানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব নেতাদের নীরবতায় অসন্তোষ প্রকাশ করে ইলহান ওমর আরও বলেছিলেন, বাস্তব কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে মুখে মানবাধিকারের বুলি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
মন্তব্য করুন