যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ প্রথম তিনি সরাসরি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ করে কথা বলেছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২ মে) হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক টেলিভিশন বিবৃতিতে বাইডেন বিক্ষোভকারীদের নিয়ে মন্তব্য করেন।
জো বাইডেন বলেন, আমেরিকা কর্তৃত্ববাদী জাতি নয়, যেখানে জনগণকে চুপ করিয়ে দেওয়া বা ভিন্নমত দমন করা হয়। তবে মনে রাখতে হবে যুক্তরাষ্ট্র আইনহীন দেশ নয়। ক্যাম্পাসগুলোতে অবশ্যই শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করার অধিকার আছে। কিন্তু অরাজকতা তৈরির অধিকার নেই। সবার শিক্ষাগ্রহণের অধিকার আছে, ডিগ্রি পাওয়ার অধিকার আছে। ভয় ও আক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্কা ছাড়াই নিরাপদে ক্যাম্পাসের প্রতিটি স্থানে শিক্ষার্থীদের যাওয়ার অধিকার আছে।’ এসব অধিকার ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা নষ্ট করছে বলে ইঙ্গিত করেন বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় গেল মঙ্গলবার মধ্যরাতে ইসরায়েলপন্থি ও ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে বুধবার গভীর রাতে ক্যাম্পাসে পুলিশ অভিযান চালায়। সেখান থেকে ২০৯ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার পরই বাইডেন শিক্ষার্থী বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুললেন।
ইউসিএলএর চ্যান্সেলর জিন ব্লক বলেছেন, প্রায় ৩০০ জন বিক্ষোভকারী স্বেচ্ছায় ক্যাম্পাস থেকে চলে গেছেন। বাকি বিক্ষোভকারীরা পুলিশের আদেশ উপেক্ষা করেছেন। তাদের ওপর হামলা করে গ্রেপ্তার করা হয়।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কোনো কোনো ক্যাম্পাসে পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। কোথাও সংঘর্ষ হয়েছে ইসরায়েলপন্থি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গেও। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কোথাও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
তবু শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমে যায়নি। বরং দিনকে দিন স্ফূলিঙ্গের মতোই ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভ। ফলে জনমত অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে ইহুদি-বিদ্বেষ বলে আখ্যা দেয় ইসরায়েলপন্থি মার্কিন নীতিনির্ধারকরা।
এদিকে পুলিশের অভিযানের পর ইউসিএলএ কর্তৃপক্ষ বলেছে, ক্যাম্পাসে জরুরি পরিস্থিতির কারণে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ক্লাস হবে অনলাইনে। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এলাকা এড়িয়ে চলতে বলেছে কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পর নতুন করে কাউকে সেখানে জড়ো হতে দেওয়া হচ্ছে না।
মন্তব্য করুন