অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতায় জড়িত উগ্র ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। ফলে এখন থেকে এসব ইসরায়েলি নাগরিক যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। খবর রয়টার্সের।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। সহিংস হামলা এবং ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে অধিকৃত এই অঞ্চলে কমপক্ষে ২৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৬৩ জন শিশু রয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
এক এক্সবার্তায় (সাবেক টুইটার) ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা ও হত্যা করে উগ্র বসতি স্থাপনকারীরা ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি—উভয়ের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাধাগ্রস্থ করছে।
তিনি বলেন, অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতা বন্ধ এবং এসবের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনতে ইসরায়েলকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা এসব সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর যুক্তরাজ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছি। এর মাধ্যমে আমাদের দেশ যেন ভয়াবহ এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আবাসস্থল পরিণত না হতে পারে তা নিশ্চিত করছি।
এর আগে গত সপ্তাহে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংস হামলায় জড়িত বসতি স্থাপনকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ ছাড়া গত মাসে ফ্রান্স বলেছে, তারা এই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার দিকটি বিবেচনা করছে। আর বসতি স্থাপনকারীদের তাদের দেশে ঢুকতে না দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে বেলজিয়াম।
এ ছাড়া গত সোমবার অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতায় জড়িত উগ্র ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব পেশ করবেন বলে জানান ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল। পশ্চিম তীরের উগ্র ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সংগঠিত সহিংসতা সম্পর্কে ইইউ উদ্বিগ্ন বলেও জানান তিনি।
ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর বোরেল সাংবাদিকদের বলেন, কথা থেকে কাজে যাওয়ার সময় এসেছে। পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতার বিষয়ে আমরা যে ব্যবস্থা নিতে পারি তা গ্রহণের সময় এসেছে।
নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব জমা দেননি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান। তবে তিনি বলেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বসতি স্থাপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরামর্শ দেবেন তিনি।
ইসরায়েলিদের ওপর কী ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি বোরেল। তবে ইইউ কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে। ফলে এসব ইসরায়েলি ইউরোপে ভ্রমণ করতে পারবে না।
মন্তব্য করুন