পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস’ সংক্রান্ত অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছে দেশটির হাইকোর্ট। বুধবার, (১ এপ্রিল) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট এই পর্যবেক্ষণ জানায়। হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণ তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের কাছে ‘বড় স্বস্তি’ বলেই মনে করছেন তার অনুগামীরা।
গত অক্টোবরে ইমরান এবং তার দলের আরেক নেতা সাবেক মন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির বিরুদ্ধে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ (ওএসএ)-এ মামলার শুনানি শুরু হয়েছে আদালতে। এই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী ফাঁসির সাজাও হতে।
‘রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস’ সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার কারণেই চলতি বছর পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি ইমরান খান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২২ সালের শুরুর দিকে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত একটি গোপন নথি পাঠিয়েছিলেন ইসলামাবাদে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার তিন সহযোগী সেই গোপন নথি ফাঁস করে দেন।
গোপন নথি ফাঁসসংক্রান্ত একটি তারবার্তা (সাইফার) আদালতে ‘প্রমাণ’ হিসেবে পেশ করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ইমরান খান দাবি করছেন, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস’ সংক্রান্ত অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই বলে বুধবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের আগে ইমরান খানের কারামুক্তি নিয়ে কথা বলেন পিটিআইএর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী খান। গত মঙ্গলবার গণমাধ্যমের সামনে তিনি দাবি করেন, চলতি মাসেই জেল থেকে বেরিয়ে আসবেন ইমরান খান।
রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঈদের আগেই তাকে মুক্ত করার চেষ্টা ছিল তাদের। তিনি বলেন, আদিয়ালা কারাগারে ১৪ ঘণ্টার শুনানি হয়েছে। পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা মে মাসে জেল থেকে মুক্তি পাবেন এবং জনসমক্ষে আসবেন।
গত আগস্টে তোশাখানা মামলায় ইমরানের তিন বছরের সাজায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। তার জামিনের আবেদনও মঞ্জুর করা হয়েছিল। কিন্তু ‘রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস’ সংক্রান্ত মামরায় অভিযুক্ত হওয়ায় জেল থেকে মুক্তি মেলেনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর।
তবে এবার সেই মামলা থেকে ইমরান খান রেহাই পেতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক এবং বিচারপতি মিয়ানগুল হাসান অওরঙ্গজেবের বেঞ্চ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়া তারবার্তা ইমরান নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন এমন একটিও প্রমাণ তদন্তকারী সংস্থা পেশ করতে পারেনি।
মন্তব্য করুন