ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু নিয়ে আলোচনা চলছেই। ইতিমধ্যে তার মৃত্যুর কারণ তদন্ত শুরু করেছে দেশটি। তদন্তের জন্য একটি প্রতিনিধি দলকে দায়িত্ব দিয়েছেন ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি।
জানা গেছে, হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হয়েছে। তবে এরপরও মেনে নিতে পারছে না দেশটির জনগণ। মাতম চলছে মুসলিম বিশ্বজুড়ে।
ইব্রাহিম রাইসি তার দায়িত্ব পালনকালে নানা সময় বক্তব্য দিয়েছিলেন। এসবের ভিড়ে ভাইরাল হয়েছে তার একটি বক্তব্য। জীবনের শেষ সময়ে অর্থাৎ মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থার তথ্যমতে, আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি বাঁধ প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠান জীবনের শেষ বক্তব্য দিয়েছিলেন রাইসি। যেখানে তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে ইসলামি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ফিলিস্তিন। কোনো সন্দেহ নেই যে, আজারবাইজান ও ইরানের জনগণ ফিলিস্তিনি ভাইদের পাশে রয়েছে। একই সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দুই দেশের অবস্থান দৃঢ়। তবে এ বিষয়ে ইসলামি দেশগুলোর ঘুম ভাঙতে হবে। তাদের উচিত নির্যাতিত ভাইদের জন্য এগিয়ে আসা।
রাইসি আরও বলেন, দুটি মুসলিম দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে ইরান সবসময়ই গুরুত্ব দেয়। আমরা কেবল ইরান ও আজারবাইজানের মধ্যেই সহযোগিতা অব্যাহত রাখব না। বরং আঞ্চলিক এবং আন্তঃআঞ্চলিক সহযোগিতাও অব্যাহত রাখব।
হেলিকপ্টারটিতে রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি, পূর্ব আজারবাইজানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলি আলে-হাশেম ও প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান মেহেদি মুসাভি ছিলেন।
উল্লেখ্য, সোমবার দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মেলে। এরপর দেশটির বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি কেউই আর বেঁচে নেই।
এর আগে গতকাল রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি।
সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়েছে, হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেটি থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের কেউ ওই ফোন করেছিলেন। দুর্ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের উদ্ধারে অংশ নেয় ৪০টি দল। উদ্ধাকারী দল এসেছে তুরস্ক ও রাশিয়া থেকেও। তবে দুর্ঘটনাস্থলে ভারি বৃষ্টিপাত ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। এ ছাড়া এ অঞ্চলটি পাহাড়-পর্বতে ভরপুর হওয়ায় দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাইসির হেলিকপ্টারের খোঁজ পান উদ্ধার কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন