ইসরায়েলের হাতে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। তারপরও ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে শঙ্কিত দেশটি। তেল আবিব দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, পরমাণু অস্ত্র বানাতে চায় ইরান। যদিও তেহরানের দাবি, এমন কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই তাদের। তবে তা মানতে নারাজ ইসরায়েল। ইসরায়েলের ভয়, কেননা চিরশত্রু দেশের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকলে তা হবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য অস্তিত্বের সংকট।
মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক শক্তিধর দুই দেশ ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক সাপে-নেউলে। দেশ দুটির মধ্যে বাগযুদ্ধ চললেও সরাসরি হামলার মতো ঘটনা বেশ বিরল। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, বিরল সেই ঘটনাকেই স্বাভাবিক বানিয়ে ফেলেছে তারা। তবে সবশেষ সিরিয়ার ঘটনায় তেহরান ক্ষুদ্ধ। ক্ষোভের সেই বিস্ফোরণ কখন ঘটবে, তা নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ।
এরইমধ্যে ইরান জানিয়েছে, তাদের দেশে আগের চেয়ে ঘন ঘন আসবে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা-আইএইএ। তেহরান যে পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে, তা শান্তিপূর্ণ কিনা, সেটি খতিয়ে দেখতেই বার বার ইরান গিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। কিন্তু হঠাৎ করে আইএইএ’র এমন ত’পরতা বৃদ্ধি নতুন জল্পনা-কল্পনা উসকে দিচ্ছে। তাহলে কী সত্য হচ্ছে, ইসরায়েলের শঙ্কা?
বর্তমানে বিশ্বে মাত্র ৯টি দেশের হাতে পরমাণু অস্ত্র আছে। সেই তালিকায় মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র দেশ ইসরায়েল। এমনকি উত্তর কোরিয়া কিংবা এশিয়ার দুই চিরশত্রু ভারত-পাকিস্তানের হাতেও রয়েছে মারণঘাতী এই অস্ত্র। কিন্তু ইরান যতবারই পরমাণু অস্ত্র বানাতে চেয়েছে, ততবারই পড়েছে বাধার মুখে। দেশটির পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত মাথাদের খুঁজে বের করে হত্যা পর্যন্ত করেছে ইসরায়েল।
তবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির প্রধান মোহাম্মদ এসলামি বলেছেন, আমরা আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছি। তাই স্বাভাবিকভাবেই ইনসপেকশনের সংখ্যা বাড়বে। এর আগে আইএইএ জানায়, পরমাণু কর্মসূচি ঘুরিয়ে দেখানোর পরিমাণ বাড়াতে রাজি হয়েছে ইরান। সম্প্রতি ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ৬০ শতাংশ বাড়িয়েছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রায় ৯০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রয়োজন।
গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় বন্ধু হারিয়ে এমনিতেই বিপাকে রয়েছে ইরান। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইসরায়েলের বর্তমান ও সাবেক সেনা কর্মকর্তারা ইরানের কর্মসূচিতে হামলার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আবার মার্কিন মুলুকের ইরানবিদ্বেষী ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় আরও ব্যাকফুটে তেহরান। আর তাই হয়ত, নিজেদের পরমাণু কর্মসূচিতেই ইরান ডিফেন্সিভ খেলতে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন