সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর দেশটির লুকায়িত অপরাধ জগতের নানা দিক সামনে আসছে। এবার বিদ্রোহীরা উদ্ধার করেছে নিষিদ্ধ উত্তেজক মাদক ক্যাপটাগনের বিশাল চালান। এই চালান ধ্বংস করার অঙ্গীকারও করেছে তারা।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
উল্লেখ্য, নিষিদ্ধ মাদক ক্যাপটাগন, যার রাসায়নিক নাম ফেনিথিলাইন, একটি শক্তিশালী উত্তেজক মাদক। এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের অবৈধ মাদক বাজারের অন্যতম জনপ্রিয় পণ্য হয়ে উঠেছে। সিরিয়া ছিল এই মাদকের উৎপাদন ও চোরাচালানের কেন্দ্রস্থল।
ক্যাপটাগনের গোপন গুদাম উন্মোচন
রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে একটি ভূগর্ভস্থ গুদাম থেকে ক্যাপটাগনের চালান উদ্ধার করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস)। সংবাদমাধ্যম এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ভেতর লুকানো অবস্থায় বিপুল পরিমাণ ক্যাপটাগন ট্যাবলেট পাওয়া গেছে।
বিদ্রোহী যোদ্ধা আবু মালেক আল শামী গার্ডিয়ানকে জানান, আমরা বৈদ্যুতিক যন্ত্রে ভরা এমন অসংখ্য ক্যাপটাগন ট্যাবলেট পেয়েছি যা চোরাচালানের জন্য প্রস্তুত ছিল। এত বিশাল পরিমাণ মাদক দেখে হতবাক আমরা।
ব্যবসার মূলহোতারা কারা?
বিদ্রোহীদের দাবি, ক্যাপটাগনের উৎপাদন ও চোরাচালানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন আসাদের ভাই মাহের আল আসাদ এবং রাজনীতিবিদ আমের খিতি। মাহেরকে সিরিয়ার মাদক সাম্রাজ্যের প্রধান সংগঠক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্য সরকার মাদক চোরাচালানের অভিযোগে আমের খিতির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
সিরিয়া : মাদকের রুট
এক সময় সিরিয়া ক্যাপটাগন উৎপাদন ও রপ্তানির কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছিল। ২০২২ সালে এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার মাদক রপ্তানি থেকে আয় বৈধ রপ্তানি আয়ের চেয়েও বেশি ছিল। এই মাদক ব্যবসা সিরিয়াকে বিশ্বের বৃহত্তম মাদক উৎপাদনকারী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি দেয়।
অন্ধকার অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি?
আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মাদক সাম্রাজ্যের অন্ধকার অধ্যায় ক্রমেই উন্মোচিত হচ্ছে। বিদ্রোহীদের দাবি, তারা দেশ থেকে মাদক চক্র নির্মূল করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তবে এই মাদক সাম্রাজ্যের গোড়া কত গভীরে প্রোথিত তা ভবিষ্যতেই স্পষ্ট হবে।
বিশ্ববাসীর দৃষ্টি
ক্যাপটাগন এবং সিরিয়ার মাদক চক্রের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন তীক্ষ্ণ। এ উদ্ধার অভিযান সিরিয়ার মাদক ব্যবসা বন্ধের দিকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন