কাশেম সোলাইমানি। গোটা মধ্যেপ্রাচ্যের ত্রাশ ছিলেন তিনি। ইরানের এই জেনারেল একাই ঘোল খাইয়ে ছাড়তেন গোটা পশ্চিমাদের। তার ভয়ে ঘুম হারাম ছিল তৎকালিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে শুরু করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুরও। সেই কাশেম সোলাইমানিকে গুরু মানতেন লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।
একটি ছবিই বলে দেয়, সোলাইমানির কতটা ভক্ত ছিলেন হাসান নাসরুল্লাহ। ২০২০ সালে কাশেম সোলাইমানিকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। এরপর থেকে নিজের পাশে সব সময় তার ছবি টাঙিয়ে রাখতেন হিবুল্লাহর প্রধান।
যেন এই গুরুর আদর্শ মেনেই মুসলিমদের ওপর নির্যাতন চালানো ইসরায়েলকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা। তাইতো ইসরায়েল মুসলিম কোন দেশের ওপর নিপীড়ন চালালে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়তেন হাসান নাসরুল্লাহ ও তার বাহিনী।
মাত্র ৩২ বছর বয়সে ১৯৯২ সালে হিজবুল্লাহর প্রধান হন নাসরুল্লাহ। এর আগে ওই বছর গোষ্ঠীটির সাবেক প্রধান নেতা আব্বাস আল-মুসাওই ইসরায়েলি হেলিকপ্টার হামলায় প্রাণ হারান। হিজবুল্লাহ প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর মুসাবি হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া ছিল হাসান নাসরুল্লাহর প্রথম কাজ। সে অনুযায়ী ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট হামলার নির্দেশ দেন তিনি।
১৯৬০ সালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জন্ম হয় হাসান নাসরুল্লাহর। বেড়ে উঠেছেন বৈরুতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠের বুর্জ হামুদ এলাকায়। বাবা আবদুল করিম ছিলেন একজন সাধারণ সবজি বিক্রেতা। তার ৯ সন্তানের মধ্যে নাসরুল্লাহ ছিলেন সবার বড়।
নিজের জীবনের শুরুতে লেবাননের গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি। মাত্র ১৫ বছর বয়সে শিয়াদের আমল আন্দোলনে যোগ দেন নাসরুল্লাহ। এক সময় কোরআনের দীক্ষা নিতে ইরাকে যান তিনি। কিন্তু ১৯৭৮ সালে নিজ দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। কারণ ওই সময় শিয়া মুসলিমদের ওপর ইরাক সরকার চাপ প্রয়োগ করছিল।
১৯৮২ সালে লেবাননে স্থল হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। ওই সময় ইসরায়েলিদের প্রতিহত করতে হিজবুল্লাহ নামের সশস্ত্র গোষ্ঠী তৈরি করে ইরানের চৌকস বিপ্লবী গার্ড। নাসরুল্লাহ তখন হিজবুল্লাহতে যোগ দেন। নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহর দায়িত্ব নিয়ে তাদের সশস্ত্র গোষ্ঠীর পাশাপাশি রাজনৈতিক শক্তিতেও পরিণত করেন।
মন্তব্য করুন