দীর্ঘ এক বছরের যুদ্ধেও গাজার স্বাধীনতকামী যোদ্ধাদল হামাসকে বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি ইসরায়েল। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ আর মৃত্যুর মিছিলেও অস্তিত্বের প্রশ্নে অবিচল হয়ে লড়ে যাচ্ছে হামাস যোদ্ধারা। এর মধ্যেই লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠন হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছে নেতানিয়াহুর দখলদার সেনারা। এখানেও দেখা যাচ্ছে একই চিত্র।
যা একপ্রকার বিস্ময় জাগিয়েছে বিভিন্নজনের মনে। ইসরায়েলের এমন হামলা সত্ত্বেও কীভাবে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অটুট আছে হিজবুল্লাহর সুড়ঙ্গ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা।
জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নমনীয় কাঠামোর চেইন অব কমান্ড, বিস্তৃত সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক ও গত এক বছরে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিশাল অস্ত্রাগার গড়ে তোলার কারণে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের হামলা সামলে উঠতে পারছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে ডেয়েচে ভেলে জানায়, অক্টোবর থেকে মিত্র হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলে নানা সময় ছোট আকারে হামলা করেছে হিজবুল্লাহ৷ তখন থেকে দক্ষিণের ফ্রন্টলাইন এলাকায় হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের পুনরায় মোতায়েন করেছে৷ এসব যোদ্ধাদের অনেকে সিরিয়া থেকেও এসেছেন বলে জানিয়েছে এই সূত্রগুলো৷ সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়াতে চাইলেও, পরবর্তীতে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের আভাস পেয়ে হিজবুল্লাহ লেবাননে দ্রুত গতিতে অনেক রকেট জড়ো করেছে।
এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, পেজার এবং রেডিও বিস্ফোরিত হওয়ার পরও হিজবুল্লাহর রকেট হামলা চালাতে সক্ষম হওয়াটাই প্রমাণ করে যে গ্রুপটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মুখেও চেইন অব কমান্ড বজায় রেখে কাজ করতে পারছে৷ জানা যায়, ফিক্সড-লাইন টেলিফোন নেটওয়ার্ক এবং অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রেখে চলেছে৷ অনেক যোদ্ধা পেজারের পুরোনো মডেল বহন করছিলেন, ফলে গত সপ্তাহের আক্রমণে তাদেরও কোনো ক্ষতি হয়নি৷
ইসলায়েলি হামলায় চেইন অব কমান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সীমান্তের কাছে কয়েকটি গ্রাম নিয়ে গঠিত ছোট, স্বাধীন গ্রুপে কাজ করার জন্য ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ তারা স্বাধীনভাবেই দীর্ঘ সময়ের জন্য ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে সক্ষম বলেও জানিয়েছে সূত্রটি৷
দুটি সূত্র জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ বেশ ভালোভাবেই তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে৷ রোববার দক্ষিণ লেবাননের এমন এলাকা থেকে রকেট ছোড়া হয়েছিল যেখানে তার কিছুক্ষণ আগেই ইসরাইল হামলা চালিয়েছিল৷ হিজবুল্লাহর একটি ভূগর্ভস্থ অস্ত্রাগার রয়েছে বলে মনে করা হয়। মার্কিন কংগ্রেসের এক প্রতিবেদন অনুসারে হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগারে প্রায় দেড় লাখ রকেট রয়েছে৷ সবচেয়ে শক্তিশালী এবং দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলো মাটির নিচেই রাখা হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে৷
মন্তব্য করুন