ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সুইজারল্যান্ডে শান্তি সম্মেলনে যোগ দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। অংশ নিয়েছে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্ররাও।
যুদ্ধ থামাতে এই সম্মেলনের ডাক দেওয়া হলেও সেখানে অংশ নিচ্ছে না বিশ্ব রাজনীতির দুই বড় খেলোয়াড়- চীন ও রাশিয়া। মস্কোর প্রতি বেইজিংয়ের সহায়তা বন্ধে এই সম্মেলনে চীনের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করেছিল পশ্চিমারা।
কিন্তু রাশিয়াকে বাদ দেওয়ায় সম্মেলনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেখান থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে শি জিনপিংয়ের দেশ। একে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের বড় কূটনৈতিক পরাজয় হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
চলতি মাসের শুরুতে সিঙ্গাপুরে একটি নিরাপত্তা সম্মেলন চলার সময় হঠাৎ হাজির হন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। উদ্দেশ্য ছিল শান্তি সম্মেলনে যেন এশিয়া থেকে বেশি সংখ্যক দেশ অংশগ্রহণ করে।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করে তাদের সুইজারল্যান্ড যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। কিন্তু কাজ তেমন হয়নি। নিশ্চিত প্রতিশ্রুতি পান শুধু সিঙ্গাপুর, পূর্ব তিমুর, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের কাছে। আর অনেক দেশ পাঠিয়েছে নিচু পর্যায়ের প্রতিনিধি।
তবে আয়োজকদের জন্য সবচেয়ে বড় হতাশা তৈরি করেছে চীন। বেইজিং বেশ কিছু দিন আগেই জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়ার অনুপস্থিতিতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনো শান্তি বৈঠক অর্থহীন। সুতরাং তারা যাচ্ছে না।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সিঙ্গাপুরে শাংরিলা নিরাপত্তা সম্মেলনে উপস্থিত চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। চীনা মন্ত্রী পাত্তা দেননি। জেলেনস্কি এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক বাক্য ব্যবহার করেন তিনি।
জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, শান্তি সম্মেলন ব্যর্থ করতে রাশিয়ার চেষ্টায় চীন সাহায্য করছে। সম্মেলন বর্জনে বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ তৈরি করছে। বেইজিং অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দিয়েছে। বলেছে, এই অভিযোগ মনগড়া।
এর আগে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে কয়েকটি শর্ত দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বলেন, ইউক্রেন যদি ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা থেকে বিরত থাকে এবং রুশ অধিকৃত চারটি অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে, তবেই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করে আলোচনায় বসবেন তিনি।
শর্তে পুতিন আরও জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে সামরিক শক্তির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। পাশাপাশি রাশিয়ানদের স্বার্থরক্ষার বিষয়টিও দেখতে হবে কিয়েভকে।
তিনি মনে করেন, এই বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক চুক্তির অংশ হওয়া উচিত। এ ছাড়াও রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেসব নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন পুতিন।
মন্তব্য করুন